হঠাৎ করে নাক দিয়ে রক্ত পড়লে সবাই ঘাবড়ে যান বৈকি। সাধারণত শিশু ও বৃদ্ধদের নাক দিয়ে রক্ত পড়ার ঘটনা বেশি ঘটে। নানা কারণে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। আমাদের নাকের ভেতরের রক্তনালি খুব স্পর্শকাতর এবং সামান্য আঘাত, এমনকি জোরে ঘষা খেলেও তা ছিঁড়ে যেতে পারে এবং রক্তপাত হয়।
কী কী কারণে রক্তপাত হয়?
নাক থেকে রক্তপাত হতে পারে নাকের নিজের সমস্যায় আবার দেহের অন্যান্য কিছু সমস্যায়ও।
নাকের সমস্যাগুলো হলো সাধারণত আঘাতজনিত। যেমন: নাকে কোনো ভোঁতা বস্তুর আঘাত, বাইরের বস্তু ঢোকা, নাক খুঁটার সময় নখের আঘাত ইত্যাদি। আবার নাকের পলিপ, সাইনোসাইটিস, প্রদাহ ইত্যাদি কারণেও রক্তপাত হতে পারে।
নাক ছাড়া শরীরের অন্যান্য জায়গায়, বিশেষ করে মাথায় আঘাত, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, রক্তস্বল্পতা বা অন্য কোনো রক্তরোগ, রক্ত জমাট বাঁধতে সমস্যা হয়, এমন কোনো রোগ যেমন প্লাটিলেট কমে যাওয়া, ক্যানসার বা লিউকেমিয়া ইত্যাদিতে নাক দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। কিছু ওষুধ যেমন অ্যাসপিরিন, আইবুপ্রফেন ইত্যাদি সেবন করলেও কারও কারও কখনো রক্তপাত হয়। আবার অনেক সময় নাকের রক্তপাতের কোনো কারণই খুঁজে পাওয়া যায় না।
কী করবেন?
হঠাৎ করে নাক থেকে রক্ত পড়তে শুরু করলে ঘাবড়ে না গিয়ে সোজা হয়ে বসুন ও দুই আঙুল দিয়ে নাকটা একটু চাপ দিয়ে ধরে টেনে রাখুন। নাকের ওপরের দিকে যে শক্ত হাড় আছে, তার ঠিক নিচেই রয়েছে নরম তরুণাস্থি। ঠিক এ জায়গাটাতেই জোরে চেপে ধরতে হবে। এভাবে ৫ থেকে ১৫ মিনিট ধরে রাখুন। এ সময় নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নেওয়াটা বন্ধ রাখতে হবে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস নেবেন। নাকের ওপর একটু বরফ দিয়েও সেঁক দিতে পারেন।
যা করা যাবে না
মাথা পেছনে হেলাবেন না বা মাথা উঁচু করে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস টানবেন না। এতে রক্ত নাক থেকে গলায় চলে যাবে এবং পরে পেটে। এই রক্ত শ্বাসনালিতে চলে যাওয়ারও ঝুঁকি আছে।
যদি না কমে
যদি এভাবে বাড়িতে রক্ত বন্ধের চেষ্টার ২০ মিনিট পার হওয়ার পরও সমস্যার সমাধান না হয় এবং একটানা পড়তেই থাকে, তবে হাসপাতালে যাওয়া উচিত। এ ছাড়া নাকের রক্তপাতের সঙ্গে যদি মাথাব্যথা, মাথা ঝিমঝিম লাগা, কানে ভনভন শব্দ বা চোখে দেখতে সমস্যা হয়, তবে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যেতে হবে। নাক, কান ও গলা বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।