করোনা সারতে কারও কারও দেরি হয় কেন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে লক্ষণের তীব্রতার ভিন্নতার পাশাপাশি সেরে ওঠার ধরনও একেকজনের একেক রকম। অনেক রোগীর পুরোপুরি সেরে উঠতে অনেক বেশি সময় লাগছে। অনেকের আবার সংক্রমণের পর পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হতেও সময় বেশি লাগছে। বিভিন্ন হাসপাতালের তথ্য-উপাত্ত এবং বিভিন্ন সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধ বিশ্লেষণ করে এর কিছু কিছু সম্ভাব্য কারণ শনাক্ত করা হয়েছে।
১. পুরুষ রোগীদের সেরে উঠতে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় লাগে।
২. রোগীর বয়স বেশি হলে সেরে উঠতে কিছুটা বিলম্ব হয়।
৩. দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ ইত্যাদি থাকলে করোনার সংক্রমণ সারতে দেরি হতে পারে। এ কারণে এই রোগীদের শুরু থেকেই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা উচিত।
৪. উপসর্গ প্রকাশের পর হাসপাতালে ভর্তি হতে দেরি করলেও সেরে উঠতে দেরি হতে পারে। অনেকে উপসর্গের মাত্রা ও তীব্রতা বেশি হলেও হাসপাতালে যেতে দেরি করেন। এতে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়।
৫. শুরু থেকেই তীব্র অসুস্থতা।
৬. নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বা ভেন্টিলেটর সাপোর্ট লাগলে সুস্থ হতে তুলনামূলক বেশি সময় লাগে।
৭. স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধের অতিরিক্ত এবং রোগের শুরু থেকেই অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারে রোগ সারতে দেরি হয়। স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৮. ফুসফুস অধিক মাত্রায় সংক্রমিত হলে উপসর্গের তীব্রতা বেশি প্রকাশ না পেলেও সেরে উঠতে সময় বেশি লাগে।
করণীয়
• জ্বর বা করোনার অন্য উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষা করতে কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে গড়িমসি করলে অবস্থা জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
• বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার সময় নিজের উপসর্গগুলো, অক্সিজেন স্যাচুরেশন ইত্যাদি লক্ষ করুন। অবনতি হলে দ্রুত হাসপাতালে যান।
• কখনোই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজের মতো করে ওষুধ সেবন করবেন না। স্টেরয়েড, অ্যান্টিবায়োটিক, রক্ত পাতলা করার ওষুধ ইত্যাদি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও মাত্রা অনুযায়ী ব্যবহার করতে হয়। না হলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হতে পারে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন), গ্রিনলাইফ মেডিকেল কলেজ