ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রনীতি বদলে যেতে পারে
আমিরাত-ইসরায়েল চুক্তি
হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে ট্যাংক হামলা
তল্লাশিচৌকিতে গুলি, ফিলিস্তিনের এক শ্রবণপ্রতিবন্ধী আহত
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তির ফলে বদলে যাবে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রনীতি। তা আগের মতো আর থাকছে না। এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আব্বাসের কার্যালয়ের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ।
রুদেইনাহ বলেছেন, এই চুক্তি বিরুদ্ধে শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করবে ফিলিস্তিন। এই সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের নাগরিকদের অধিকারের লঙ্ঘন। এই চুক্তি ‘আরব পিস ইনিশিয়েটিভ’কে ভেঙে দিয়েছে।
আরব লিগ অনুমোদিত ২০০২ সালের ওই চুক্তি (আরব পিস ইনিশিয়েটিভ) অনুসারে, ফিলিস্তিনের যেসব জায়গা ইসরায়েল দখল করেছে, সেগুলো ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে দেশটির সঙ্গে আরব ও এই অঞ্চলের ইসলামি দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করা হবে।
না সংযুক্ত আরব আমিরাত, না অন্য কোনো দেশ—ফিলিস্তিনের নাগরিকদের নিয়ে কথা বলার অধিকার কারও নেই।
কিন্তু আরব আমিরাতের সঙ্গে যে চুক্তি ইসরায়েলের হয়েছে, সেই চুক্তি অনুসারে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে। আমিরাত জানিয়েছে, এর বিনিময়ে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল বন্ধ করবে ইসরায়েল। কিন্তু ইসরায়েল বলেছে, তারা সাময়িকভাবে তা স্থগিত রেখেছে, বাতিল করেনি।
এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের চুক্তি পর থেকে ফিলিস্তিন অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়েছে। গতকাল সোমবার জেরুজালেমের একটি তল্লাশিচৌকিতে গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলের পুলিশ। এতে আহত হয়েছেন ফিলিস্তিনের ৬০ বছর বয়সী এক শ্রবণপ্রতিবন্ধী। এ ছাড়া গতকাল সকালে গাজা উপত্যকায় হামাসের স্থাপনায় ট্যাংক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় কতজন হতাহত হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
‘ফিলিস্তিন নিয়ে কথা বলার অধিকার কারও নেই’
এদিকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, না সংযুক্ত আরব আমিরাত, না অন্য কোনো দেশ—ফিলিস্তিনের নাগরিকদের নিয়ে কথা বলার অধিকার কারও নেই। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।
গত রোববার মাখোঁর সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় আব্বাসের। এই সময় তিনি সতর্ক করে বলেন, অন্য কোনো আরব দেশ যদি আরব আমিরাতের মতো পদক্ষেপ নেয়, তবে সেই দেশের ক্ষেত্রেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেবে ফিলিস্তিন।
বার্তা সংস্থা আইএএনএসের খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’ যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েলের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তা আবারও খারিজ করেছেন আব্বাস। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য ফিলিস্তিন ইস্যু ব্যবহার করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনের ভূমি দখলের বিষয়টি এখনো রয়েছে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিস্তর আলোচনার জন্য আব্বাসকে ফ্রান্সের প্যারিসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মাখোঁ। আব্বাস এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
দুই রাষ্ট্র নীতি ধ্বংস করবে
প্রধান ফিলিস্তিনি আলোচক সায়েব এরাকাত গত রোববার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত যে চুক্তি করেছে, তা দুই রাষ্ট্র সমাধান নীতিকে ধ্বংস করবে। চরমপন্থাকে জোরদার ও সম্ভাব্য শান্তিকে গুরুত্বহীন করে তুলবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করি এই চুক্তি দুই রাষ্ট্র সমাধান নীতি হত্যা করবে। নেতানিয়াহুর মতো ইসরায়েলের চরমপন্থীরাও মনে করছে দুই রাষ্ট্র সমাধান নীতি আলোচনার টেবিলে আর নেই।’