মানবিক সংকটের মুখে লেবানন
বেশ কিছুদিন ধরেই অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল লেবানন। তার মধ্যেই গত মঙ্গলবার রাজধানী বৈরুতে বন্দরে ভয়ংকর বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত ১৫৪ জন নিহত, ৫ হাজার জন আহত এবং তিন লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে লেবানন গভীর মানবিক সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
বিবিসি জানায়, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলেছে, বিস্ফোরণের কারণে বৈরুত বন্দরে যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে ওই বন্দর দিয়ে দেশটিতে খাদ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হবে। এতে বেড়ে যাবে খাদ্যপণ্যের দাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, বিস্ফোরণে তিনটি হাসপাতাল পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে লেবাননের স্বাস্থ্যব্যবস্থা গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লেবানন সরকারের তথ্যমতে, বৈরুত বন্দরে মজুত ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরিত হয়েছে মঙ্গলবার। ওই বিস্ফোরক পদার্থগুলো ছয় বছর ধরে বন্দরে মজুত রাখা হলেও তার নিরাপত্তাব্যবস্থা তেমন ছিল না। বিস্ফোরণের পর লেবাননবাসীর ক্ষোভ আরও বেড়ে গেছে। রাজনীতির অভিজাত শ্রেণির দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার অভিযোগে এমনিতেই ক্ষুব্ধ ছিল জনগণ।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গতকাল শনিবার বলেছেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ৬০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ ছিল। নিহত ১৫৪ জনের মধ্যে ২৫ জনের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা গতকালও চলছিল।
এদিকে বৈরুতে বিস্ফোরণের ঘটনায় জাতিসংঘ স্বাধীন নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মহল থেকে আন্তর্জাতিক তদন্তেরও দাবি উঠেছে। তবে ‘দ্রুত বিচারের’ আশ্বাস দিলেও আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন। তিনি উল্টো বিস্ফোরণের জন্য ‘বহির্হস্তক্ষেপ’কে দায়ী করতে চেয়েছেন। বন্দরে বিস্ফোরক মজুতের অভিযোগ উঠেছিল হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে। তবে সংগঠনটির নেতা হাসান নাসরাল্লাহ সে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এএফপি জানায়, লেবাননের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি আদায়ে ফ্রান্স ও জাতিসংঘের উদ্যোগে আজ রোববার গ্রিনিচ সময় দুপুর ১২টার সময় দাতাদের এক ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবারই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ওই ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেবেন।