ভারতে লকডাউনের ফলে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে কম

সারা দেশে লকডাউনের সুফল দেখা যাচ্ছে ভারতে। আগে যেখানে তিন দিনে নতুন রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল, লকডাউনের পর দেখা যাচ্ছে তা ছয় দিনের একটু বেশি সময় লাগছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পদাধিকারী কর্তা লাভ আগরওয়াল গতকাল শুক্রবার এই কথা জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমকে লাভ আগরওয়াল বলেছেন, সরকারের কাছে দেশের ১৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৭ দিনের যেসব তথ্য রয়েছে, তার ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, লকডাউনের ফলে সংক্রমণ কম ছড়াচ্ছে।
রোগ ছড়ানো রুখে দেওয়ার ক্ষেত্রেই শুধু সুফল পাওয়া যাচ্ছে যে তা নয়, রোগী মৃত্যুর হারও কমানো গেছে। অন্যভাবে বলতে গেলে, রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার হার বেড়ে গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই কর্তা বলেন, দুই ক্ষেত্রেই পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় ভারতের পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো।
ভারতে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে জানুয়ারিতে। মার্চে তা চড়চড় করে বেড়ে যায়। এ কারণে ২৫ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। পরে তা বাড়ানো হয় ৩ মে পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে দেশকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেসব জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে সেগুলো ‘লাল জোন’। যেখানে সংক্রমণ রোখা গেছে, সেগুলো ‘কমলা জোন’। দেশের যেসব জেলা করোনামুক্ত, সেগুলো ‘সবুজ জোন’। ২০ এপ্রিল থেকে সবুজ জোনের জেলাগুলোয় প্রধানত গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের জন্য বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে।
করোনার পরীক্ষা কম হওয়ার দরুন একটা সমালোচনা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলোকে শুরু থেকেই শুনতে হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও গত বৃহস্পতিবার বলেন, পরীক্ষার হার আরও বাড়ানো দরকার। যত বেশি পরীক্ষা হবে, রোগ ছড়াবে তত কম।
সরকারের পক্ষ থেকে গতকাল বলা হয়েছে, আগামী এক সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হচ্ছে, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হবে। তারপর তা কমতে থাকবে। সংক্রমণ রুখতে তাই এখন থেকে দেশের সর্বত্র সন্দেহভাজন প্রত্যেকেরই করোনা পরীক্ষা হবে। যাঁদের জ্বর বা সর্দি–কাশির লক্ষণ রয়েছে বা যাঁদের শ্বাসকষ্ট আছে, তাঁদের পরীক্ষা তো হবেই, যাঁদের সন্দেহ করে একঘরে করে রাখা হয়েছে, তাঁদেরও পরীক্ষা করা হবে।
সরকারিভাবে বলা হয়, যেসব রাজ্য শুরুতেই লকডাউন করেছে, সেখানে সংক্রমণ খুবই নিয়ন্ত্রণে আছে। যেমন পাঞ্জাব, রাজস্থান ও বিহার।
দুই দিন ধরে ভারতে নতুন সংক্রমণের হার কিছুটা কম। বৃহস্পতিবার সংক্রমিত হয়েছিল ৮০০ জনের বেশি, গতকাল ১ হাজার ৭ জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩৭।