সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখানোয় দিল্লির জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটিয়েছিল পুলিশ। দুই মাস ধরে এই অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আক্রান্ত শিক্ষার্থীরা। বরাবরই অস্বীকার করেছিল দিল্লির পুলিশ। এবার অভিযোগের সপক্ষে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আনলেন শিক্ষার্থী ও প্রতিবাদীরা। এতেই প্রমাণ মিলল পুলিশি নির্যাতনের।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার প্রকাশ্যে আসে ওই সিসিটিভি ফুটেজ। ভিডিওটি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটি’। টুইটারে ভিডিওটি প্রকাশ করে ওই কমিটি। ভিডিওটি প্রকাশের পরই সমালোচনা শুরু হয়েছে।
৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করছেন শিক্ষার্থীরা। হঠাৎ একদল সজ্জিত পুলিশ দাঙ্গা মোকাবিলায় ব্যবহৃত ‘রায়ট গিয়ার’ পরে ও মুখে রুমাল বেঁধে সেখানে ঢুকে পড়ে। তাদের দেখেই একজনকে ডেস্কের তলায় ও অন্যজনকে ছুটে পালাতে দেখা যায়। এরপর কোনো প্ররোচনা ছাড়াই বেধড়ক লাঠিপেটা করতে থাকে পুলিশ। এর ফলে আতঙ্কে এদিক-ওদিক দৌড়াতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত বছর ডিসেম্বরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস হয়। এরপর আইনের প্রতিবাদে ১৫ ডিসেম্বর একটি মিছিল বের করেন জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। কিছুদূর যাওয়ার পরেই প্রকাশ্যে রাস্তার ওপরেই তাঁদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় পুলিশের। কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের হটানোর চেষ্টা করে পুলিশ। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বেধড়ক মারধর করে শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটকও করে। এ ঘটনার পরেই সমালোচনার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। জামিয়ার শিক্ষার্থীদের অনেকেই ওই ঘটনার পর নিজেদের আন্দোলন থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। পরে পুলিশ জানিয়েছিল, স্থানীয় দুষ্কৃতরাই অশান্তি তৈরি করেছিল।
তীব্র নিন্দা করে দোষী পুলিশ কর্মীদের শাস্তির দাবি করে কংগ্রেস। কংগ্রেসের সাংসদ সাবেক মন্ত্রী শশী থারুর টুইটে লাঠিপেটার সমালোচনা করেন। টুইটে তিনি লেখেন, ওই ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে কোনো রকম প্ররোচনা ছাড়াই জামিয়ার শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। দোষী পুলিশদের উপযুক্ত শাস্তি চান তিনি।