বিক্ষোভে ইন্ধনের অভিযোগে সোনিয়া-প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে মামলা
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ও তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া তামিলনাড়ুতে পুলিশের অনুমতি ছাড়া সিএএ–বিরোধী বিক্ষোভ করায় ডিএমকে পার্টির নেতা এম কে স্টালিনসহ প্রায় ৮ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
সিএএর বিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় ভারতের উত্তর প্রদেশের আলিগরে সোনিয়া, প্রিয়াঙ্কা ও অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলেমিনের নেতা আসুদুদ্দিন ওয়াইসি ও র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পাওয়া সাংবাদিক রাভিশ কুমারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আলিগরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে এই মামলা করেন আইনজীবী প্রদীপ গুপ্ত। এই তথ্য নিশ্চিত করে আদালত বলেছেন, আগামী ২৪ জানুয়ারি এ নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ে পুলিশের অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করেছিলেন এম কে স্টালিন। পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার বলেছে, এই অভিযোগে তিনিসহ ৮ হাজার বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে এমন মামলাতেও বিক্ষোভ থেমে নেই। গতকালও দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে। রাজধানী দিল্লির মান্ডি হাউসে বিক্ষোভ থামাতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু ১৪৪ ধারা ভেঙে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
মিরাটে ঢুকতে রাহুল-প্রিয়াঙ্কাকে বাধা
উত্তর প্রদেশের মিরাটে ঢুকতে দেওয়া হয়নি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কাকে। গতকাল তাঁরা ওই শহরে যাচ্ছিলেন সিএএ এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে।
>নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে মামলা সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও। তামিলনাড়ুতে এম কে স্টালিনসহ ৮ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা।
উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন শহরে সিএএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে অন্তত ১৫ জন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে মিরাটেই মারা গেছেন ৬ জন। এই নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা দিল্লি থেকে রওনা হলে মিরাট বাইপাসে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। অনুরোধ করেন ফিরে যেতে। রাহুল গণমাধ্যমকে বলেন, তাঁদের যেতে না দেওয়ার বিষয়ে কোনো নির্দেশ আছে কি না জানতে চান। থাকলে তা দেখাতে বলেন। পুলিশ সেই নির্দেশ দেখাতে পারেনি। তবে কারণ হিসেবে পুলিশ বলেছে, মিরাট শহরে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
এত দিন ধরে রাজ্য পুলিশ বলছিল, এই আন্দোলনে তারা একটিও গুলি ছোড়েনি। তবে গতকাল তারা গুলি ছোড়ার কথা স্বীকার করেছে পুলিশ।
মমতার বিক্ষোভ অব্যাহত
এদিকে গতকালও পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় সিএএ এবং এনআরসি বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। এর নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মিছিল কলকাতার বিধান সরণির স্বামী বিবেকানন্দের বাসভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় বেলেঘাটার গান্ধী ভবনের সামনে। এই মিছিল শুরুর আগে মমতা বলেন, ‘সিএএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন অধিকার রক্ষার। হিংসা বন্ধের। আমরা এনএএ ও এনআরসি বাতিল চাই। এই রাজ্যও তা কার্যকর করতে দেওয়া হবে না।’
এদিকে সিএএ এবং এনআরসির পক্ষে কথা বলায় গতকাল পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে রাজ্যের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে ঢুকতে দেননি শিক্ষার্থীরা। রাজ্যপাল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। এর আগে গত সোমবার জগদীপ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বৈঠকে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলেন। ওই দিনও তাঁকে ঢুকতে দেননি শিক্ষার্থীরা।