অস্বাভাবিক মৃত্যুকে এনআরসি-আতঙ্কে মৃত্যু বলে চালানো হচ্ছে: রাহুল সিনহা
বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গের সাবেক সভাপতি রাহুল সিনহা বলেছেন, এখন পশ্চিমবঙ্গে যেসব অস্বাভাবিক মৃত্যু হচ্ছে, তাকে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি-আতঙ্কে মৃত্যু বলে চালিয়ে দিচ্ছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এই গুজব বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রাহুল সিনহা বলেন, আত্মহত্যার গুজবে প্রলেপ দিচ্ছে সিপিএম-কংগ্রেস। মৃত্যুর খবর পেলেই তৃণমূলের সাংসদ, মন্ত্রীরা ছুটে যাচ্ছেন ওই মৃতের বাড়িতে। আর মৃত্যুর ঘটনাকে এনআরসির আতঙ্কে মৃত্যু বলে দাবি করছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির অন্নদা রায়ের বাড়িতে। পরিবার থেকে দাবি করা হয়, এনআরসির আতঙ্কে অন্নদা রায় আত্মহত্যা করেছেন। মন্ত্রী ওই পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ‘এই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী এনআরসি কার্যকর হতে দেবেন না। আপনারা নিশ্চিত থাকুন।’
এর আগে আরও চারজনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে আত্মহত্যা করেন ভ্যানচালক শ্যামল রায় (৩৯)। জলপাইগুড়ি শহরে কুয়ায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন সাবের আলী (৩২)। কোচবিহার শহরে আত্মহত্যা করেন আর্জিনা বিবি (২৭)। এবং কোচবিহারের দিনহাটায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান শামছুল হক (৪৪)। এসব মৃত্যুকে এনআরসি-আতঙ্কে মৃত্যু বলে দাবি করেছে প্রত্যেকের পরিবার। এর আগে একইভাবে আরও ছয়জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে এনআরসি–আতঙ্কে মৃত্যু বলে দাবি করা হয়।
এসব ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, এখন কেউ মারা গেলেই এনআরসি–আতঙ্ক বলে চালিয়ে দিচ্ছে শাসক দল তৃণমূল।
এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে এখন উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। একদিকে এনআরসির পক্ষে পথে নেমেছে বিজেপি, অন্যদিকে এনআরসি বাতিলের দাবিতে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি বেঁচে থাকতে বাংলায় এনআরসি কার্যকর করতে দেওয়া হবে না।
মমতার এই কথার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবেই। জীবিত থাকাকালেই মমতাকে এই রাজ্যে এনআরসি দেখে যেতে হবে।
এনআরসির আতঙ্কে রাজ্যব্যাপী শুরু হয়েছে রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড নবায়ন, সংশোধন, নতুন কার্ডের আবেদন। এই চিত্র ধরা পড়েছে কলকাতা পৌর করপোরেশনেও। সেখানে এখন লাইন দিয়ে মানুষ জন্ম ও মৃত্যুসনদ, স্থায়ী ঠিকানার সনদ নিচ্ছেন।