তালেবানের 'ভ্রমণ খরচা' দিতে চায় পেন্টাগন
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে তালেবানদের যে ভ্রমণ খরচ হয়েছে, তা পরিশোধ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ট্রাম্প সরকার। তবে মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিল কমিটির পক্ষ থেকে জঙ্গিগোষ্ঠীর থাকা-খাওয়ার খরচ বহন করার অনুরোধ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আজ শুক্রবার বিবিসি অনলাইনকে জানিয়েছেন এক আইনপ্রণেতার মুখপাত্র। সন্ত্রাসীদের সমর্থন করার অভিযোগ উঠতে পারে ভেবে এই অনুরোধ নাকচ করেছে পেন্টাগন।
পেন্টাগন সূত্র নিশ্চিত করেছে, তারা শান্তি আলোচনা সহজতর করতে কর্তৃপক্ষকে তহবিল ব্যবহার করার অনুরোধ করেছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান প্রতিনিধিরা মোট ছয় দফায় আলোচনায় বসেছেন। আফগানিস্তান থেকে মার্কিনদের নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজতে কাতারের রাজধানী দোহায় এ বৈঠক হয়।
যে তহবিলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে, এর কিছুটা বিবরণ দিয়েছেন ইন্ডিয়ানার প্রতিনিধি পিটার ভিসক্লোস্কির মুখপাত্র কেভিন স্পাইসার পেন্টাগন। সেখানে তালেবান নেতাদের আলোচনায় অংশ নেওয়া, খাবার, বাসস্থান ও যাতায়াত ব্যবস্থার যাবতীয় খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্পাইসার বলেন, ২০২০ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তালেবান সদস্যদের বিভিন্ন সমন্বয় কার্যক্রমসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদির সহায়তার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে কমিটির কাছে পাঠানো এক প্রজ্ঞাপনে ২০১৯ অর্থবছরের তহবিল থেকেও ওই একই খাতে অর্থ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
গত বুধবার ভিসক্লোস্কির সভাপতিত্বে হাউস অনুমোদন প্রতিরক্ষা উপকমিটি তালেবানদের খরচ বাবদ প্রায় ৬৯০ বিলিয়ন ডলার অনুমোদন দেয়।
আইনসভায় বলা হয়, প্রস্তাবে তহবিলের কোনো বরাদ্দ তালেবান সদস্যরা যদি এমন কোনো বৈঠকে অংশ নেয়, যা আফগান সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় অথবা নারীদের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত করে, এ জন্য খরচ করা হবে না। কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের জন্য বস্তুগত সমর্থন না দেওয়ার আইন লঙ্ঘিত হতে পারে ভেবে ভিসক্লোস্কি এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র রেবেকা রেবারিচ বলেন, ‘২০১৮ সালের জুনে আফগানিস্তানে যুদ্ধবিরতির পর দেশটিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর অধিনায়ক তালেবানদের সঙ্গে শান্তি বৈঠক অর্থায়নের অনুরোধ জানান। আফগানিস্তানে সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে আনতে জঙ্গি সংগঠনটিকে নিজেদের দাবিদাওয়া পেশ করার সুযোগ দেওয়া জরুরি ছিল। আর সে সুযোগ তৈরি করতেই আর্থিক সহায়তার কথা চিন্তা করা হচ্ছে।’
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ অর্থবছরের জন্য ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব আইনসভায় পেশ করেছে বলে জানিয়েছেন রেবেকা। ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার সম্ভাব্য উপায় হিসেবে এই শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র।