সবুজ মাঠে আলপথ ধরে লাঙল-জোয়াল কাঁধে হেঁটে যাচ্ছেন একজন কৃষক। তাঁকে ছাপিয়ে সামনে দেখা যাচ্ছে ভোরের আলোয় সোনালি কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া। হিমালয় পর্বতমালার কোনো কোনো চূড়া উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে দেখা যায়, এটি পুরোনো কথা। কিন্তু উষালগ্নে কৃষকের হেঁটে যাওয়ার সেই ছবি ভাবনার খোরাক জোগায়, চোখকে স্বস্তি দেয়। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে গল্পের মতো সেই ছবির আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ।
সাবাহ ক্যামেরা হাতে প্রকৃতি, পাখি ও বন্য প্রাণীর ছবি তোলেন। একটি মাছরাঙার ছবি ফেসবুকে তাঁকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছিল। অনেকের দৃষ্টিকাড়া সে ছবিটি ছিল এমন—খুঁটির মাথায় জুড়ে দেওয়া ছোট এক ফালি কাঠে তিন শব্দের সতর্কীকরণ নির্দেশনা, ‘মাছ ধরা নিষেধ’। এমন কড়া নির্দেশনার ওপরই ঠোঁটে মাছ নিয়ে দাঁড়িয়ে মাছরাঙাটি। তার আয়েশি ভাবটা যেন এমন, এসব নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা সে করে না! বিরল মুহূর্তের ছবিটি টানা সাত মাসের চেষ্টায় তুলেছিলেন সাবাহ। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ৩০ বছর বয়সী এই তরুণ ছবি তোলা ছাড়াও নিজ এলাকায় প্রাণী সংরক্ষণে মানুষকে সচেতন করেন। তাঁর জীবনের গল্প শুনে মনে হয়, তিনি আপাদমস্তক ছবির মানুষ, ছবির কবি। কবিতার মতোই ছবিগুলোর পেছনে থাকে অনবদ্য একেকটি গল্প।
সেই গল্পের খোঁজে প্রায়ই ক্যামেরা কাঁধে তেঁতুলিয়ার নিভৃত গ্রামে ছুটে যান হিমালয় পর্বতমালার অপরূপ ছবি তুলতে। তাঁর তোলা কাঞ্চনজঙ্ঘার বেশ কিছু ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। কাঞ্চনজঙ্ঘার পাশাপাশি নার্শিং পর্বত, সিনিওলচু পর্বতের ছবিও তিনি তুলেছেন। এ বছরও বেশ কয়েকবার ছবি তুলতে গেছেন সাবাহ। ক্যামেরায় ধারণ করেছেন কাঞ্চনজঙ্ঘার দারুণ কিছু মুহূর্ত।