শিল্পকলায় জমজমাট নবান্ন উৎসব

নবান্ন উৎসবে একটি সমবেত পরিবেশনাছবি: শিল্পকলা একাডেমির সৌজন্যে

অগ্রহায়ণের শীত শীত সকালে মাটির চুলায় ঢেঁকিতে ভানা নতুন চালের গুঁড়া দিয়ে হরেক রকমের পিঠা তৈরি করেন গ্রামের গৃহস্থ ঘরের নারীরা। সেগুলো খেয়ে দিন শুরু হয় পরিবারের সদস্যদের। শহরে এই দৃশ্য অপরিচিত। এর ওপর মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিপর্যস্ত জনজীবনে নাগরিক উৎসব সংকুচিত হয়ে আনন্দে পড়েছে ভাটা। এমন পরিস্থিতিতে করোনা মহামারির সংকট কাটিয়ে বাঙালি সংস্কৃতিচর্চায় সমৃদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হলো জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘নবান্ন উৎসব ১৪২৭’-এ।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে রোববার আলোচনা, নাচ, গান, আবৃত্তি ও বাদ্যযন্ত্রের সম্মিলনে অনুষ্ঠানস্থলে চিত্রিত হয় চিরচেনা নবান্নের অপরূপ সৌন্দর্য। একাডেমির সংগীত, নৃত্যশিল্পী ও গম্ভীরা দলের শিল্পীরা জাতীয় নাট্যশালার লবিতে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। দেশাত্মবোধক গান ‘ও আমার দেশের মাটি’ পরিবেশন করেন শিল্পী মামুন জাহিদ খান।

সমবেত নৃত্য পরিবেশনা
ছবি: সংগৃহীত

সন্ধ্যায় আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিসচিব মো. বদরুল আরেফীন। উৎসবে যোগ দিয়েছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের গম্ভীরা দল। নানা-নাতির গম্ভীরা গানে গীত হয় এই নবান্ন উৎসব।

এ ছাড়া ‘এই নবান্নে এই হেমন্তে কাটা হবে ধান’ গানের সুরে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস।

গান শোনান চন্দনা মজুমদার
ছবি:সংগৃহীত

‘সবাই মিলে কাটব ধান গাইব রে নবান্নের গান’ শীর্ষক সংগীত পরিবেশন করেন চন্দনা মজুমদার। ‘কয় সের আলো চাল পাড়িয়া সোনা বানিয়া আরও আটা’ এবং ‘ও কী হায়রে হায় মানটায় মোর পিঠা খাবার চায়’ শীর্ষক সমবেত ভাওয়াইয়া সংগীত পরিবেশন করেন একাডেমির ভাওয়াইয়া শিল্পীরা। নবান্নের পুঁথি পাঠ করেন আবদুল আজিজ। স্নাতা শাহরিনের পরিচালনায় পরিবেশিত হয় সমবেত কত্থক নৃত্য। ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় নাচ করেন ধৃতি নৃত্যালয়ের শিল্পীরা।
‘নতুন ফসল আইলো রে এই বাংলার ঘরে ঘরে’ শিরোনামের সংগীত পরিবেশন করেন সরকারি সংগীত মহাবিদ্যালয়ের শিল্পীরা। অন্তর দেওয়ানের পরিচালনায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন চাকমা, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা শিল্পীরা। একক কণ্ঠে লোকগান পরিবেশন করেন শফি মণ্ডল।

সমবেত নৃত্য পরিবেশনা
ছবি: সংগৃহীত