মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী আবুল হায়াত–এর গতকাল ছিল জন্মদিন। নির্মাণের সঙ্গেও যুক্ত আছেন। লেখালেখিও করছেন নিয়মিত। করোনাকালের জন্মদিন কেমন কাটল, তা জানতে গতকাল সন্ধ্যায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। কথা প্রসঙ্গে জানালেন আগামী বছরের পরিকল্পনাও
প্রশ্ন :
শুভ জন্মদিন। কেমন কাটল আপনার এবারের জন্মদিন?
করোনাকালে যেমনটা কাটে আরকি। সকালে চ্যানেল আইতে গিয়েছিলাম। সেখানে অনুষ্ঠানে অংশ নিলাম, কেক কাটা হলো। আর রাতে তো নাতনি শ্রীষার (নাতাশার মেয়ে) সঙ্গেও কেক কাটলাম।
প্রশ্ন :
ফেসবুকে নানাজন বয়স নিয়ে ভিন্ন রকম তথ্য দিচ্ছেন। আসলে আপনার কততম জন্মদিন?
আমার এবার ৭৬ বছর শেষ হলো, ৭৭–এ পা দিলাম আরকি।
প্রশ্ন :
একই দিনে নাতনিরও জন্মদিন। কে কার আনন্দে ভাগ বসালেন?
আমার তো মনে হয়, নাতনি শ্রীষার জন্মদিনের আনন্দে আমি ভাগ বসিয়েছি। আমাদের আর নাতাশা-শাহেদের বাসা কাছাকাছি। তাই রাতে ওরা এসেছিল। এরপর নানা–নাতনি দুজন মিলে কেক কাটলাম। ওর জন্মের পর থেকে আমরা দুজন একসঙ্গে জন্মদিন পালন করি। রাত ১২টায় হয় নাতাশা-শাহেদ আমার নাতনিকে নিয়ে বাসায় আসে, না হয় আমি চলে যাই।
প্রশ্ন :
জন্মদিনে দুই মেয়ে বিপাশা ও নাতাশার হাতের মজার রান্না বা কোন রান্নাটা বিশেষ দিনে আপনার পছন্দের...
দুজন যা রান্না করে, তা–ই পছন্দ। বিপাশা তো এই মুহূর্তে পরিবারের সবাইকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আছে। নাতাশা বাসায় যাই-ই রান্না করে, দিয়ে যায়। তা ছাড়া এখন তো জন্মদিনে বাইরে গিয়ে ঘোরাঘুরি হয়। আর এখন তো ঢাকা শহরে এত বেশি রেস্টুরেন্ট, নাতি-নাতনিদের পছন্দের জায়গায় খেতে চলে যাই। এবার অবশ্য হয়নি। বিপাশা রান্নাবান্নার এক্সপেরিমেন্ট করতে খুব পছন্দ করে। এমনিতে বিপাশা স্পাইসলেস রান্না করে। তেল ছাড়া রান্না করে। মাংস, সবজি করে—স্বাভাবিকভাবে সবাই যেভাবে করে, তার চেয়ে আলাদাভাবে।
প্রশ্ন :
একটা সময় ফেসবুক বা মুঠোফোন ছিল না। তখন জন্মদিনের উইশগুলো কীভাবে পেতেন?
তখন ল্যান্ডফোন তো ছিল। জন্মদিনটাও সবার মনে থাকত। ফেসবুকের দিনগুলোর আগে এমন হতো না। তবে লিবিয়াতে যখন ছিলাম, তখন নিজেরা মিলে আনন্দ উদ্যাপন করতাম। ফেসবুকের কারণে এখন একটু বেশি প্রচার হয় তো, তাই সবার নজরে আসে। ফেসবুকে একটা পোস্ট দিলে সবাই জেনে যায়। তবে আমার ৭৫তম জন্মদিন কিছুটা আয়োজন করে করা হয়েছিল। মেয়ে ও স্ত্রী সবাইকে দাওয়াত করেছিল। এ ছাড়া নিজেরা নিজেরাই করি।
প্রশ্ন :
আলাদা করে যদি বলি, জন্মদিনের ধারণা আপনার কাছে কী?
জন্মদিন নতুন করে নিজেকে নিয়ে ভাবার সময়। এটা একরকম পুরোনো বছরের সালতামামি, নতুন বছরের পরিকল্পনা ঠিক করা। এটা আমার মাথায় অটোমেটিক্যালি চলে আসে।
প্রশ্ন :
আচ্ছা, আপনার ১৮তম জন্মদিন কেমন ছিল, মনে পড়ে?
তখন তো ওভাবে জন্মদিন পালন করা হতো না, এখন যেভাবে পালন করা হয়। তাই স্মৃতিও নেই। ১৮ বছরের সময়টায় আমি চট্টগ্রাম কলেজে পড়তাম। টাইগারপাস এলাকায় থাকতাম। সত্যি কথা বলতে, তখন জন্মদিন পালনের সংস্কৃতিও ছিল না।
প্রশ্ন :
পরিকল্পনার কথা শুনতে চাই?
আগামী বছরে হয়তো এত বেশি নাটক নির্দেশনা দেব না। কম কম কাজ করব। টেলিভিশন নাটকের চেয়ে মঞ্চে বেশি সময় দেব।
প্রশ্ন :
বিনোদন অঙ্গনে অনেকে নতুন কাজ করছেন। তাঁদের উদ্দেশে আপনার কাছ থেকে তিনটি উপদেশ শুনতে চাই।
খুব বেশি কিছু করতে হবে না। কাজের প্রতি ভালোবাসা, কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আর যে কাজ করি সেটার বেশি বেশি চর্চা করা।