আসছে ২৫টি ওয়েবসিরিজ
চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই। গত শুক্রবার এই প্ল্যাটফর্মটি নিজেদের প্রযোজিত ২৫টি ওয়েব সিরিজের ঘোষণা দিল। পুরোনো সিরিজের নতুন সিজন যেমন আছে, তেমন একেবারে নতুন সিরিজও আছে তালিকায়।
হইচই–এর যৌথ কর্ণধার মহেন্দ্র সোনি ও বিষ্ণু মোহতা ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে জানান তাদের আগামী দিনের পরিকল্পনার কথা। চতুর্থ মৌসুমের সিজন ফোর–এর ওয়েব সিরিজগুলো হলো, ‘তকদীর’, ‘মানি হানি সিজন টু’, ‘ভাল থাকিস বাবা’, ‘হ্যালো সিজন থ্রি’, ‘মহাভারত মার্ডার্স’, ‘দেবদাস ও একটি খুনের গল্প’, ‘ঠাকুমার ঝুলি’, ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি’, ‘ব্যোমকেশ সিজন সিক্স’, ‘দময়ন্তি’, ‘তানসেনের তানপুরা পার্ট টু’, ‘বন্য প্রেমের গল্প সিজন টু’, ‘ললিতা’, ‘লাল মাটি’, ‘রহস্য-রোমাঞ্চ সিরিজ সিজন থ্রি’, ‘সেই যে হলুদ পাখি সিজন টু’, ‘চৌরঙ্গী’, ‘মোহমায়া’, ‘গঙ্গা’, ‘একেনবাবু সিজন ফোর’, ‘মেকআপ স্টোরি’, ‘চরিত্রহীন সিজন থ্রি’, ‘গোরা’, ‘ইনটিউশন’, ‘মন্দার’ ইত্যাদি। এর সঙ্গে থাকছে ২টি ‘ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো’ কলকাতা আন্ডারগ্রাউন্ড ও টিকটিকি।
বাংলাদেশ থেকে এই প্ল্যাটফর্মে এবার দেখা যাবে আশফাক নিপুণ, মিজানুর আরিয়ান, সৈয়দ আহমেদ, সালেহ সোবহানের কাজ। বাংলাদেশ থেকে আগেই কাজ করেছেন কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় ও তানিম নুর। এবার তাঁরা ফিরছেন ‘মানিহানি টু’ নিয়ে। আরেক বাংলাদেশী লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এর ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেনি’ উপন্যাসটি ওয়েব সিরিজ হিসেবে আসছে। এই প্ল্যাটফর্মে চলচ্চিত্র নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির প্রথম ওয়েব সিরিজ হতে যাচ্ছে এটি। সিরিজটি মূলত একটি গোয়েন্দা কাহিনি। বাংলাদেশি এসব সিরিজে অভিনয় করবেন চঞ্চল চৌধুরী, পার্থ বড়ুয়া, অপূর্ব, সানজিদা প্রীতি, মনোজ প্রামাণিক, নিশাত প্রিয়ম প্রমুখ।
হইচই এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিষ্ণু মোহতা বলেন, ‘বিগত তিনটি বছর ছিল আমার জীবনের প্রাপ্তির বছর। এই অল্প সময়ে আমরা এতদূর আসতে পেরেছি, তার জন্য আমরা গর্বিত। মার্চ মাস থেকে যখন পৃথিবীজুড়ে লকডাউন চলছে, তখন আমরা অনুধাবন করি যে, এই মুহূর্তে আমাদের দর্শকদের সবচাইতে বেশি প্রয়োজন বিনোদন। এ কারণে গত ছয় মাসে আমরা বেশ কিছু ওয়ার্ল্ড ডিজিটাল প্রিমিয়ার, অরিজিনাল শো এবং এর পাশাপাশি আমাদের নতুন সংযোজন ‘ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো’ (চলচ্চিত্রের ডিরেক্ট টু ডিজিটাল প্রিমিয়ার) এর আয়োজন করি, যার মাধ্যমে আমাদের দর্শকেরা নতুন ছবি সরাসরি এখানে দেখতে পেয়েছেন।’
এসভিএফ ও হইচই–এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা মহেন্দ্র সোনি বলেন, ‘হইচইয়ের মাধ্যমে আমরা চমৎকার সব গল্প বলতে পারব, নতুন প্রতিভাদের সঙ্গে কাজ করতে পারব এবং এটা সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে পৌঁছে দেবে—২০১৭ সালে যাত্রালগ্নে এটাই ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আমরা ওয়ার্ল্ড ডিজিটাল প্রিমিয়ার, সাম্প্রতিক ব্লকবাস্টার এবং ধ্রুপদি সিনেমার একটা বিশাল সংগ্রহ গড়ে তুলেছি। আমরা শুরু করার পর থেকে ৬০টি অরিজিনাল শো এনেছি। ইতিমধ্যে আমরা বাংলাদেশের সেরা নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করেছি এবং বাংলাদেশের সিনেমার ওয়ার্ল্ড ডিজিটাল প্রিমিয়ার ও ডিজিটাল প্রিমিয়ার করেছি। আগামী বছরটি হইচইয়ের ভিন্নধর্মী গল্প বলার প্রচেষ্টাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।’
জানা গেছে, হইচইয়ের অন্যতম আলোচিত ধারাবাহিক ‘চরিত্রহীন’–এর তৃতীয় মৌসুম আসছে শীগগির। আর সবচেয়ে বড় চমক হিসেবে এই মৌসুমে সৌরভ দাসের সঙ্গে এবার থাকছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। রাইমা সেন-প্রিয়াঙ্কা সরকারের ‘হ্যালো’র তৃতীয় পর্ব আসতে যাচ্ছে। রহস্য-রোমাঞ্চ বরাবরই বাঙালির প্রিয়। এ কারণেই অনিবার্ণ ফিরছেন ‘ব্যোমকেশ’–এর ষষ্ঠ মৌসুম নিয়ে। এবার ‘মগ্ন-মৈনাক’ উপন্যাস নিয়ে তৈরি হবে এই সিরিজ। পরিচালকের আসনে থাকছেন সৌমিক হালদার। আসতে যাচ্ছে নারী ডিটেকটিভ ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘দময়ন্তী’। ‘দময়ন্তী’র ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তুহিনা দাস।
‘গোরা’ শিরোনামের একটি সিরিজের নাম ভূমিকায় দেখা যাবে ঋত্বিক চক্রবর্তীকে। প্রযোজনায় সাহানা দত্ত। এ ছাড়া বিক্রম চট্টোপাধ্যের ‘তানসেনের তানপুরা’র দ্বিতীয় মৌসুম, ‘বন্যপ্রেমের গল্প ২’, ‘রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ ৩’, ‘সেই যে হলুদ পাখি ২’, ‘একেন বাবু সিজন-৪’ ও ‘মানি হানি ২’।
শিগগিরই নতুন চরিত্রে দেখা যাবে অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে। কাহিনিকার ও সৃজনশীল পরিচালক হিসেবে এবার নাম লেখালেন এই অভিনেতা। ‘ম্যাকবেথ’ নাটকের আধুনিক অ্যাডাপ্টেশন ‘মন্দার’ নির্মাণ করবেন অনির্বাণ। এ ছাড়া মিতালি ভট্টাচার্য্যের ‘ইনটিউশন’ সিরিজের সঙ্গে ওয়েব প্ল্যাটফর্মে অভিষেক হচ্ছে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী সোহম ও শ্রাবন্তীর।
ছোটদের জন্য ঠাকুমার ঝুলি নিয়ে সিরিজ তৈরি হবে। সম্পর্কের জটিল গল্প নিয়ে আসছেন মৈনাক ভৌমিক। ওয়েব প্ল্যাটফর্মে পরিচালক হিসাবে অভিষেক হচ্ছে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়েরও। সিরিজের নাম ‘মোহমায়া’। রুদ্রনীল ঘোষের হাত ধরে ‘গ্যাং লর্ড’–এর ভূমিকায় ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখা মিলবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের, সিরিজের নাম ‘গঙ্গা’।