জাদুশিল্পী জুয়েল আইচের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্ত্রী বিপাশা আইচ।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বিপাশা আইচ জানান, করোনার যে ঝুঁকি ছিল, তা থেকে আপাতত মুক্ত আছেন জুয়েল আইচ, তাই তাঁকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। তিনি আপেল, কমলা, মাল্টা, আনার ও সুপ খাচ্ছেন। আগের মতো ভাত খেতে না পারলেও সবজিতে রুচি বেড়েছে।
গত মঙ্গলবার পরীক্ষার পর জানা যায়, জুয়েল আইচের ফুসফুসের ৪০ শতাংশ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁরা জানান, ফুসফুসের সংক্রমণও এখন কমেছে। করোনার ঝুঁকিমুক্ত বলা যেতে পারে তাঁকে। বিপাশা আইচ বলেন, ‘গতকালের চেয়ে আজকের অবস্থা কিছুটা ভালো মনে হচ্ছে। অক্সিজেন খুব বেশি দরকার পড়ছে না। খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক।’
সপরিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন জুয়েল আইচ। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেও জুয়েল আইচকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। তিনি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। ৪ নভেম্বর জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। জ্বরের মাত্রা বাড়তে থাকায় তাঁর নমুনা পরীক্ষা করালে জানা যায়, তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে সন্তোষজনক সেবা না পাওয়ায় হাসপাতাল বদলে তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুয়েল আইচ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন।
করোনাকালে বই পড়ে সময় কাটাচ্ছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। পড়ছিলেন ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’ নিয়ে। বাংলাদেশের নন্দিত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ অবসরে বাঁশি বাজান, ছবি আঁকেন। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ফেসবুকে মাস্ক পরে নিজের একটি ছবির সঙ্গে তিনি পোস্ট করেন ‘করোনা মারার জাদু’ নামে একটি ছড়া। যেন ছড়া নয়, জাদুমন্ত্র। সেখানে তিনি লিখেছিলেন,‘কালোজিরা মধু/ করোনা মারার জাদু/ গরম জলে লেবু/ কোভিড হবে কাবু/ কাঁচা রসুন খেলে/ ভাইরাস যাবে চলে/ নিমপাতার চা/ গরম-গরম খা/ সব ওষুধের দাদা/ নামটি তার আদা/ তুলসীপাতা মেথি/ বিশ্বজোড়া খ্যাতি/ লবঙ্গ তেজপাতা/ ফুসফুসে হলে ব্যথা/ এলাচি দারুচিনি/ খাবে প্রতিদিনই/ বাষ্প পানির ভাপ/ শুকনো কাশি মাফ/ করলে বেশি দান/ শান্তি পাবে প্রাণ।’
শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন জুয়েল আইচ।