ফারিণের স্বপ্নপূরণ, চোখের সামনে টেলর সুইফট!

টেলর সুইফটের কনসার্টে ফারিণ

তখন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পর্দার তারকা তাসনিয়া ফারিণ। সে সময় থেকেই টেলর সুইফটের গানের ভক্ত তিনি। বড় হয়েও সুইফটের গানের প্রতি মোহ কমেনি এই তারকার। সুইফটের গান মুগ্ধ হয়ে শোনেন ফারিণ। কিন্তু তিনি কখনো ভাবেননি যে প্রিয় শিল্পীর গান কোনো দিন সরাসরি শুনতে পারবেন। ফারিণের সেই স্বপ্নের দুয়ার এবার খুলে গেছে। মঞ্চে গাইছেন সুইট, দর্শকের ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে তাঁর গান উপভোগ করেছেন ফারিণ। প্রথমবার সামনাসামনি সুইফটকে শুনে রোমাঞ্চিত হয়েছেন তিনি।
জুনের প্রথম সপ্তাহে ২৫তম রেইনবো আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে নিজের অভিনীত ‘ফাতিমা’ ছবি নিয়ে যোগ দেন ফারিণ। উৎসবের ফাঁকে সুইফটের কনসার্ট উপভোগের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ৭ জুন স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরায় মারিফিল্ড স্টেডিয়ামে সুইফটকে শুনেছেন ফারিণ।

ফারিণের তোলা ছবিতে মঞ্চে সুইফট

৭, ৮ ও ৯ জুন এডিনবরায় মারিফিল্ড স্টেডিয়ামে ২ লাখের বেশি শ্রোতা অংশ নিয়েছেন। সুইফটের কনসার্টের টিকিট পেতে দুনিয়াজুড়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। বেশ চড়াই-উতরাইয়ের পর কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেয়েছেন ফারিণ। কীভাবে টিকিট পেলেন? ফারিণ বলেন, ‘টিকিটের জন্য তখন হাহাকার ছিল। যখন টিকিট পাচ্ছিলাম না, তখন আমার ইনস্টাগ্রামে পোস্টও করেছিলাম টিকিটের জন্য। কিন্তু কাজ হয়নি। পরে একটি ওয়েবসাইট থেকে তিন গুণ দাম দিয়ে টিকিট কাটি।’
ফারিণ জানান, স্কটল্যান্ডে সুইফটের ইরাস ট্যুরের বিষয়টি আগেই জানতেন তিনি। তাঁর ভাষ্যে, ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের কারণে ৮ ও ৯ জুন দেখার সুযোগ ছিল না। কারণ, ৯ জুন ছিল ‘ফাতিমা’র প্রদর্শনী। যেকোনো মূল্যে ৭ জুনের কনসার্ট দেখতেই হবে।
টিকিট পাওয়ার পর আনন্দিত হলেও শঙ্কায় ছিলেন ফারিণ। তিনি বলেন, ‘তারপরও স্টেডিয়ামে ঢোকার আগপর্যন্ত ভয়ে ছিলাম। যদি ওয়েবসাইটের টিকিট ভুয়া হয়, এই ভেবে। কারণ, এর আগে নাকি ওখানে এমন ঘটনা ঘটেছে।’

কনসার্ট শুরুর প্রায় চার ঘণ্টা আগেই স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন ফারিণ। বলেন, ‘নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না যে আমি টেলর সুইফটের কনসার্ট দেখতে যাচ্ছি। অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা ছয়টায়। প্রথমে একটি ব্যান্ড গান পরিবেশন করে। তিনি সাতটায় মঞ্চে আসেন। যতটা পেরেছি মঞ্চের কাছাকাছি ছিলাম। চোখের সামনে সুইফট! মনে হচ্ছিল, স্বপ্ন দেখছি।’

‘রঙে রঙে রঙিন হব’ গানটি প্রথমবার একসঙ্গে গেয়েছেন তাহসান খান ও তাসনিয়া ফারিণ
ছবি: ফেসবুক

ফারিণের বক্তব্য, ‘একজন শিল্পী যে কতটা শক্তিমান, টেলর যখন মঞ্চে প্রবেশ করেন, মনে হচ্ছিল ৭৩ হাজার দর্শকই চিৎকার করছিলেন। আমার জন্য সে এক অন্য রকম মুহূর্ত ছিল। বলে বোঝাতে পারব না।’
মঞ্চে প্রায় আড়াই ঘণ্টা গান পরিবেশন করেন এই আমেরিকান গায়িকা। তাঁর বিভিন্ন অ্যালবামের জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করেন তিনি। এর মধ্যে ‘লাভ স্টোরি’, ‘অল ঠু ওয়েল’, ‘ব্ল্যাক স্পেস’–এর মতো গান ছিল।

‘বাবা, সামওয়ানস ফলোয়িং মি’–তে তাসনিয়া ফারিণ
ছবি: পরিচালকের সৌজন্যে

‘আমার প্রিয় গানগুলো যখন গাচ্ছিলেন, আমি যেন স্বপ্নে ভাসছিলাম। একটা মানুষ মঞ্চ থেকে মাঠের হাজার হাজার মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন। পুরো টিম নিয়ে একেকটা গানের মধ্যে পারফরম্যান্স করে তিনি যেন অভিনয় করছিলেন। এত সময় ধরে মঞ্চে একজন মানুষ কীভাবে প্রাণশক্তি নিয়ে গান করতে পারেন, টেলর সুইফটের এই কনসার্ট না দেখলে বিশ্বাস হতো না। এ সময় প্রায় ২০ বার পোশাকই পরিবর্তন করেছেন তিনি।’ বলেন ফারিণ।
গত ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ডে ‘ক্লোড প্লে’ ব্যান্ডের কনসার্ট উপভোগ করেছেন ফারিণ। এবার সুইফটকে শুনলেন তিনি।