মস্কোতে দুই পুরস্কারজয়ী ‘আদিম’ চরকিতে দেখা যাবে
দুই বছর আগে রাশিয়ার মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দুটি পুরস্কার পায় বাংলাদেশের সিনেমা ‘আদিম’। এই অর্জনে পরবর্তী সময়ে সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়। সেই সিনেমা এবার মুক্তি পাচ্ছে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে। আগামী মে মাসের ২ তারিখে সিনেমাটি চরকিতে দেখতে পাবেন দর্শকেরা।
‘আদিম’ সিনেমার পরিচালক যুবরাজ শামীম জানান, সিনেমা দেখার জন্য প্রচুর দর্শক অপেক্ষা করছেন। আগামী মাসে সেসব দর্শকের কাছে সিনেমাটি পৌঁছাবে, এই ভেবে তিনি খুশি। চরকির কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন শামীম। কারণ, বিকল্প ধারার বা ইনডিপেনডেন্ট সিনেমার প্রচার নিয়ে অনেক সময় পরিচালকদের বিপাকে পড়তে হয়। তিনি বলেন, ‘“আদিম”–এর এখন একটা জায়গা হলো। চরকির মতো একটা প্ল্যাটফর্মে সিনেমা থাকবে, এটা আমাদের জন্য ভালো লাগার। বিশ্বের যেকোনো দেশের দর্শক এখন সিনেমাটি দেখার সুযোগ পাবেন। একজন পরিচালক হিসেবে চরকি আমাকে এই সুযোগ দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বড় সংখ্যায় দর্শকদের আমরা ধরতে পারব। এটা আমাকে আস্থা ও সম্ভাবনার জায়গায় নিয়ে গিয়েছে।’
২০১৮ সালে ছবির নির্মাণকাজ শুরু করেন তিনি। শুটিংয়ে নানা বাধাবিপত্তি পেরোতে হয়েছে। অর্থাভাবে কখনো শুটিং বন্ধও থেকেছে। শেয়ার বিক্রি করে অর্থ সংস্থান করে সিনেমার কাজ চালিয়ে গেছেন নির্মাতা। ৫৩ জন শেয়ার কিনে সিনেমার অর্থায়নে অবদান রেখেছেন। পরিচালক বলেন, ‘সিনেমাটির হলে মুক্তি ও চরকিতে বিক্রি করে যে অর্থ পেয়েছি, সেখানে আমি নির্মাতা ও প্রযোজক হিসেবে নিজেকে সফল বলব। কারণ, আমার সিনেমা ব্যবসাসফল। ইতিমধ্যে আমি যাঁদের কাছ থেকে ধার করে সিনেমাটির শুটিং করেছিলাম, তাঁদের অনেকের টাকা ফিরিয়ে দিয়েছি। স্বাধীনভাবে সিনেমা নিয়ে ভাবতে পারছি, এটাও আমার প্রাপ্তি। বাড়তি প্রাপ্তি ছিল দেশ–বিদেশের উৎসবে অংশগ্রহণ করা।’
২০২২ সালে ৪৪তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্পেশাল জুরি পুরস্কার জয় করে নির্মাতা যুবরাজ শামীমের সিনেমা ‘আদিম’। এ উৎসবে নেটপ্যাক জুরি পুরস্কারও পায় সিনেমাটি। এরপর বাইরের আরও কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি পুরস্কৃত ও প্রশংসিত হয়েছে। পরে এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের (ডিইউএফএস) আয়োজনে ‘আমার ভাষার চলচ্চিত্র ১৪৩০’ উৎসবে প্রদর্শিত হয় ‘আদিম’। সেখান থেকে হীরালাল সেন পদক-১৪৩০ জয় করে সিনেমাটি। এটি ছিল বাংলাদেশ থেকে প্রথম পুরস্কার।
‘আদিম’ সিনেমার প্রধান চরিত্র ল্যাংড়ার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বাদশা। ৩৫ জনের মধ্য থেকে তাঁকে বাছাই করা হয়। সিনেমার বাকি চরিত্রের মধ্যে সোহাগী খাতুন, দুলাল মিয়া, সাদেককেও বস্তিতেই খুঁজে পেয়েছেন নির্মাতা। নির্মাতা জানান, ছবির প্রয়োজনেই বস্তির বাসিন্দাদের দিয়ে অভিনয় করিয়েছেন, তাঁদের জীবনের গল্প তাঁরাই ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। পরে সেটাই হয়েছে। সিনেমাটি যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা সবাই প্রশংসা করেছেন।