কাজ করতে গিয়ে অনেক ঠকেছি
প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে অভিনয় করলেন হাসান মাসুদ। চরকির ‘উনিশ ২০’ সিনেমায় তাঁকে দেখা গেছে আরিফিন শুভর বসের চরিত্রে। তাঁর অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে প্রশংসা পাচ্ছেন তিনি। শুরু করতে যাচ্ছেন অনিমেষ আইচের ‘আঁশটে’ ও একটি ভারতীয় সিনেমায়। ব্যস্ত ঈদ নাটক ও শুটিংয়ের নানা অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বললেন এই অভিনেতা।
প্রশ্ন :
ওয়েব ফিল্ম ‘উনিশ ২০’–এ আপনার ও শুভর অভিনয় দর্শক পছন্দ করেছেন, ফেসবুকে আলোচনা করছেন। ওটিটিতে আপনার শুরুটা নিয়ে কী বলবেন?
ফিল্মে আমার সিকোয়েন্স ছিল মাত্র ৫–৬টি। এত ছোট চরিত্র নিয়ে দর্শক কথা বলবেন এটা একবারও মনে হয়নি। আমার কোনো প্রত্যাশা ছিল না দর্শকদের ভালোবাসা পাব। দর্শক আমাদের পছন্দ করার জন্য ভালো লাগছে। আমি অভিভূত তবে শুটিংয়ের সময় আমার কাছে মনে হয়েছিল ভালো কিছু হতে যাচ্ছে।
প্রশ্ন :
কেন মনে হয়েছিল?
গল্পটা একটু আলাদা। নতুন একটা জুটি। দীর্ঘদিন পর বিন্দু ও শুভ একসঙ্গে কাজ করেছেন। কাজটি ছিল গুছিয়ে করা। পরিচালক মিজানুর রহমান আরিয়ান আমার তিন দিন শিডিউল নিয়ে পরে পাঁচ দিনে কাজটা শেষ করেছেন। কাজে আলাদা একটা যত্ন ছিল। আর ওটিটির কনটেন্টগুলো আলাদা থাকে। এসব মিলিয়েই ভিন্ন কিছু হবে মনে হয়েছিল। এখন দর্শকও কাজটি নিয়ে প্রশংসা করছেন।
চরিত্র ছোট জেনেও কেন রাজি হয়েছিলেন?
আমি ভালো একটি চরিত্র থাকলে সেখানেও কাজ করতে চাই। কারণ, একটি চরিত্রে অভিনয় করেও বিখ্যাত হওয়া যায়। চরিত্রের গুরুত্ব কেমন সেটাই বিবেচ্য বিষয়। তবে অনেক সময় কনটেন্টের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করেও কাজ করতে হয়। সেখানে ব্যতিক্রম ছিল ‘উনিশ ২০’। পরিচালকের ওপর আস্থা ছিল।
প্রশ্ন :
একসময় আপনি ও শুভ নিয়মিত একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। মাঝে এক যুগের বেশি সময়ের বিরতি, বর্তমান শুভর অভিনয়ের কতটা পরিবর্তন দেখলেন?
শুভর ক্যারিয়ার শুরুর দিকে অনেক কাজই একসঙ্গে করেছি। সেই সময় থেকে এখন শুভ অনেক ম্যাচিউড হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ শুভর ক্রেডিট। সে অন্য একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছে। সেখানে সবকিছু ওভারকাম করে হিরোইজমের জন্য যা যা দরকার, সেগুলো সে রপ্ত করেছে। শুভকে অভিনন্দন।
প্রশ্ন :
এ সময়ের কাজে মানসিক স্বস্তির জায়গা কতটা থাকে?
আমি মেন্টাল পিস নিয়ে কাজগুলো করি। এর অর্থ কাজ শেষ, আমার পেমেন্ট চাই। সেই কারণে বেছে বেছে কাজ করি। এর আগে এক পরিচালক টফির কাজ বলে শিডিউল চাইল। পরে জানতে পারলাম এটা সিনেমা, টফির কাজ না। তার মিথ্যা বলার কারণে বললাম আমাকে অ্যাডভান্স পারিশ্রমিক দিতে হবে। সে রাজি হলো না। সেখানে আরেকজন অভিনেতাকে নিল। পরে শুনলাম কুয়াকাটা থেকে নির্মাতা শুটিং করে পালিয়েছে। নিজেদের পকেট থেকে অভিনয়শিল্পীরা কেউ ২২ হাজার, কেউ ১১ হাজার টাকা খরচ করে ঢাকায় ফিরলেন। আমি কাজ করতে গিয়ে অনেক ঠকেছি। এখন নতুন করে আর প্রতারিত হতে চাই না। নতুন, অপরিচিত কেউ এলে অগ্রিম টাকা নেই।
প্রশ্ন :
যাদের কথা ও কাজের মিল নেই, তাদের উদ্দেশ্যে কী বললেন?
বাজার থেকে আমি এক লাখ টাকার মতো বকেয়া পারিশ্রমিকের অর্থ পাই। এখন আর কারও ফাঁদে পা দিতে চাই না। কথার যাঁরা বরখেলাপ করেন, তাদের উদ্দেশে ধিক্কার। তবে দেশে অনিমেষ আইচ, রাজসহ অনেক নির্মাতা আছেন তাদের কথা কিন্তু আলাদা। তাদের প্রতিশ্রুতি ঠিক থাকে। তাঁদের কাছে আমার শর্ত থাকে শুধু, ভালো একটা জায়গায় রাখবেন।
প্রশ্ন :
দর্শক আপনার অভিনয় পছন্দ করেন কিন্তু সেই তুলনায় আপনার কাজের সংখ্যা কম লক্ষ করা যায়...
নতুনদের সঙ্গে কাজ করতে গেলে আমি শতভাগ অগ্রিম পারিশ্রমিক দাবি করি। আবার কখনো কাজ শেষেই আমার পারিশ্রমিক চাই, সেসব কারণে অনেকেই রাজি হয় না। আর আমি নিজেও ১০–১৫ দিনের বেশি কাজ করি না। আগের মতো ব্যক্তিগত জীবন থাকবে না, ঘরে থাকতে পারব না সেটা চাই না। কাজ নিয়ে ব্যস্ত অনেক ছিলাম, এখন কাজ করে বিশ্রাম ও ঘরে থাকতে ভালো লাগে। এসব কারণে কাজের সংখ্যা কম।
প্রশ্ন :
ব্যস্ততা কী নিয়ে?
‘আঁশটে’ নামের একটি সিনেমা করছি। পরিচালক অনিমেষ আইচ চরিত্র নিয়ে এখনই কিছু বলতে না করেছেন। চিত্রনাট্য নাকি আবার পরিবর্তন করবেন। মাহিদুল রাকিবের নাটক করছি। ঈদের বেশ কিছু কাজ রয়েছে, করব। ‘প্রেম নিকেতন’ নামের দীপ্ত টিভির একটা কাজ করেছি। আর ভারতের একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সিনেমাটির জন্য আমি ভারতে যাওয়ার ভিসা পাচ্ছি না। এখন ভারতের পরিচালক চিন্তা করছেন বাংলাদেশে এসেই শুটিং করবেন। হয়তো এ বছরেই শুটিং হতে পারে। এখন ঈদ নাটক করে যাচ্ছি।