মাত্র তিন–চার ঘণ্টা ঘুমাতেন, অনার্সে কত সিজিপিএ পেলেন অভিনেত্রী হিমি
একসঙ্গে দুইটা কাজ হয় না। তাই পরিবারের প্রথম কথা পড়াশোনায় ভালো করতে হবে। তারপর অন্য কিছু। তাহলে অভিনয়ের কী হবে? স্নাতকে ভর্তি হয়ে এই ভাবনাই ছিল তরুণ অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমির। তারপর শুরু হয় নতুন সংগ্রাম। অবশেষে সফলতার সঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী হিমি। কত পেলেন সিজিপিএ?
সারা দিন শুটিং শেষে গভীর রাতে বাসায় ফিরতেন। মাত্র ৩-৪ ঘণ্টা কখনো ২ ঘণ্টা ঘুমিয়ে আবার সকাল ৮টায় যেতে হতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে। ক্লাস শেষে আবার চলে যেতেন শুটিংয়ে। এভাবে ঢাকার বাইরেও যাওয়া-আসা করতে হতো।
সেখানেও শুটিংয়ের ফাঁকে চলত পড়াশোনা। আবার মাঝেমধ্যে নিজেকেও সময় দিতেন। হিমি বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েশন ঠিকমতো সময়ে শেষ করতে পারব কি না, সেটা নিয়েই সবচেয়ে বেশি চিন্তা ছিল। কারণ ঠিকমতো পড়াশোনা আর অভিনয় চালিয়ে যাওয়া আমার জন্য খুবই কষ্ট ছিল। এটা বোঝানো যাবে না। আজ (গতকাল) কনভোকেশনের পর সেই দিনগুলোর কথাই মনে পড়ছে। অনেক দিন দম ফেলার সময় পাই নাই।’
শুটিংয়ে কিছুটা বিরতি। সবাই আড্ডা দিচ্ছেন। এর মাঝেই হিমি ল্যাপটপ খুলে শুরু করেছেন পড়াশোনা। দু-এক ঘণ্টা এভাবেই চলত। আবার পরীক্ষা থাকলে আগেই বলে নিতেন সময় লাগবে। এভাবে করোনার সময় অনলাইনে পরীক্ষা দিয়েছেন। এ জন্য শুটিং ইউনিটকে অপেক্ষা করতে হতো ২-৩ ঘণ্টা। সহকর্মীদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেতেন। হিমি বলেন, ‘আমি পড়াশোনা ও অভিনয় নিয়ে এতটাই চাপে ছিলাম যে একদিন অভিনেতা বাবু ভাই বললেন, “এই মেয়েটা পড়াশোনা-অভিনয় দুই জায়গায় সমানতালে সমান দেয়, খুব কষ্ট করে। দুই জায়গায়ই সে ভালো।” এই কথাগুলো অনুপ্রেরণা দিত। অন্য সহকর্মীরা সহযোগিতা করতেন।’
হিমি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিষয়ে স্নাতক শেষ করেছেন। আজ বুধবার ছিল সমাবর্তন। জানালেন, এখন অভিনয় নিয়ে খুবই ব্যস্ত। আপাতত মাস্টার্স করবেন না।
ইচ্ছা আছে দু-এক বছর পরে দেশের বাইরে পড়তে যাবেন। তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু অনেক কাজের প্রস্তাব আসছে। সেই কাজগুলো শেষ করি। ক্যারিয়ার হয়তো সব সময় এক রকম থাকবে না। একসময় অভিনয়ের পাশাপাশি মার্কেটিং নিয়েও কাজ করব। তখন হয়তো পড়াশোনা নিয়েও ব্যস্ত থাকব।’
স্নাতকে কত সিজিপিএ পেলেন জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার সিজিপিএ ৩.৫৮ (৪-এর মধ্যে)। প্রথম সেমিস্টারে ৩.৮০ পেয়েছিলাম। পরে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত হওয়ার কারণে পরের প্রতিটি সেমিস্টারে রেজাল্ট কিছুটা খারাপ হয়েছে। তারপরও আমি খুশি। পরিবারও খুশি। তারা স্বাধীনতা দিয়েছিল বলেই এত দূর আসতে পেরেছি।’ তিনি এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
এবারের ঈদের নাটকগুলো নিয়ে তিনি ভালো সাড়া পাচ্ছেন। সর্বশেষে জানালেন, ঈদে তাঁর অভিনীত ‘ফ্যামিলি ট্রাবল’, ‘মেজবানি ভালোবাসা’, ‘কোটি টাকার ডিপোজিট’, ‘লাভ ইউ ম্যাডাম’, ‘আফ্রিকান গেস্ট’, ‘জামাই শ্বশুরের কোরবানি’ নাটকগুলো প্রশংসিত হয়েছে।