লাইন ধরে নানুবাড়ি থেকে সালামি নিতাম
একটা সময় অভিনেতা আবদুন নুর সজলের কাছে ঈদ মানেই ছিল নানাবাড়ি যাওয়া। ঢাকার পুরান ঢাকায় ছিল তাঁর নানাবাড়ি। তাঁরাও থাকতেন ঢাকায়। তবু নানাবাড়িতে ঈদ করা চাই। সেখানে স্বাধীনতা বেশি। সেটা উপভোগ করতেন। মামাতো ভাইদের সঙ্গে সকালে দলবল নিয়ে চলে যেতেন নামাজ পড়তে। তারপর ফিরে এসে লাইন ধরে ঈদের সালামি নিতেন। সেই স্মৃতি এখনো সজলকে ঈদের আনন্দ দেয়।
বয়স সবে ৮/৯ বছর। দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। তখন নানাবাড়িতে আরও ৮/১০ জন মামাতো ভাই–বন্ধুর সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠতেন এই অভিনেতা। সেই স্মৃতি স্মরণ করে সজল বলেন, ‘আমরা ছিলাম একদল কাজিন। সারাক্ষণ দুষ্টুমি করতাম। ছুটে বেড়াতাম মহল্লাজুড়ে। এ সময় কোনো শাসন ভালো লাগত না। কিন্তু আমরা অপেক্ষায় থাকতাম ঈদের সালামির জন্য।’
৯০ দশকের সেই সময়ের স্মৃতিচারণা করে সজল আরও বলেন, ‘আমরা দল ধরে কাজিনরা নামাজ পড়তে যেতাম। ফিরে এসে দৌড় শুরু করতাম, কে আগে লাইনে দাঁড়াবে। স্কুলে অ্যাসেম্বলির মতো করে দাঁড়িয়ে সালামি নিতাম। সে সময় একটা কষ্ট লাগত; আমার নানা ছিলেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তিনি বিছানায় শুয়েই আমাদের ২ টাকা থেকে ৫ টাকা, ১০ টাকা করে সবাইকে দিতেন। মামা–মামি, খালারাও দিতেন। সেই সব সময় এখন খুব মিস করি।’
তবে ঈদের দিন কিছুটা শাসনের মধ্যে থাকতে হতো এই অভিনেতাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করতেন না। এ জন্য মেজ মামার বকা খেতে হতো। মামা এই কিশোর দলের পেছনে আঠার মতো লেগে থাকতেন। মজার সেই দিনে এটাই ছিল ছোট মনে কষ্টের ঘটনা। সজল বলেন, ‘আমরা সকালে উঠে ব্রাশ করতাম না। কিন্তু মামার কথা, ব্রাশ করতেই হবে। অনেক বলেকয়ে তবেই রাজি হতাম। এতে আমরা একবার বিরক্ত হয়ে মামাকে ভয় দেখানোর পরিকল্পনা করেছিলাম।
‘নানাবাড়িতে শেভ করার ফোম ছিল। সেই ফোম মাথায় দিয়ে মামাকে ভয় দেখানোর পরিকল্পনা করি। পুরো মাথা সাদা হয়ে ছিল। পেছন থেকে একজন মাথার ওপর লাইট ধরে ছিল। পরে মামা আমাদের দেখে ভয় পেয়েছিলেন। এই মজার দুষ্টুমির ঘটনা এখনো মনে পড়লে হাসি পায়।’ নানা–নানি এখন আর বেঁচে নাই। তবু ঈদের সময় মায়ের সঙ্গে বা একা একা নানাবাড়িতে যাওয়ার চল এখনো রয়েছে।
সজল জানালেন, এবার ঈদের জন্য কোনো নাটকে অভিনয় করেননি। আগের অভিনয় করা কিছু নাটক প্রচারিত হবে। তবে গতকাল চাঁদরাতে তাঁর অভিনীত ‘রুমি’ ওয়েব সিরিজ মুক্তি পেয়েছে। ওয়েবে রুমি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। এটি পরিচালনা করেছেন ভিকি জাহেদ। ওয়েবটি নিয়ে আশাবাদী সজল।