প্রথমবার গান গাইলেন সিয়াম, দ্বৈত এই গানে সহশিল্পী হিমি
নাটকের অভিনয়শিল্পী জান্নাতুল হিমি ছোটবেলা থেকে ছায়ানটে নজরুলসংগীতে তালিম নিয়েছেন। বরেণ্য শিল্পী ফেরদৌস আরার কাছেও গানের তালিম নেন। তবে হাতেখড়ি হয় সাধনা মিত্রের কাছে। অন্যদিকে চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ কখনোই গান শেখেননি। হিমি এর আগে নাটকের জন্য গান গেয়েছেন। সিয়ামকে কখনো কোনো গানে পাওয়া যায়নি। নাটক ও চলচ্চিত্রের এই দুই তারকাকে এবার এক গানে পাওয়া যাবে। দ্বৈত কণ্ঠের এই গানটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে প্রচারিত হবে। এরই মধ্যে গানটির রেকর্ডিং এবং দৃশ্যধারণের কাজ শেষ হয়েছে।
গানটি নিয়ে সিয়াম বললেন, ‘আমি জীবনে কোনো দিন গান গাইতাম না। হানিফ সংকেত ও কবির বকুল ভাই যদি আমাকে তাগাদা না দিতেন। আমি গানের মানুষ না। আমি ভালো গান গাই না। কিন্তু তারপরও তাঁরা দুজন বলেছেন, এটা তোমার দর্শকদের জন্য ঈদ উপহার, তাই গানটা গেয়েছি।’
গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমরান। তাঁর সঙ্গে সিয়ামের সম্পর্কটা বন্ধুত্বের। গানটি নিয়ে সিয়াম বললেন, ‘এত মেলোডিয়াস একটা সুর করেছে, আমার মনে হয় না অন্য কেউ হলে এর চেয়ে ভালো কিছু করত। গানটা ফিল্মি। সুন্দর। গানের মেলোডি তো মানুষের মাথায় থেকে যায়। এত সহজ কথা, খুব সহজে মনের সব অনুভূতি বলে দিচ্ছে—গানটা শুনলে এটা বোঝা যায়। আমি মোটেও পেশাদার গায়ক নই, গানটা শোনার সময় সবাইকে এ বিষয়টা মাথায় রাখলে হবে। পরিবারেরই কেউ গানটি গাইছে—এটা ভেবে নিলে চলবে। এটা ভেবে নিলেই আমি হয়তো পার পেয়ে যাব।’
গানে বাবার প্রভাব নিয়ে সিয়াম বললেন, ‘আমি জীবনে কোনো দিন গানের তালিম নিইনি। সারা জীবন আমি পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। গুনগুন করে আমি তাদের গানই গেয়েছি, বাবা যেসব গান শুনতেন আর আমাকে শোনাতেন। আমার বাবা চমৎকার একজন শিল্পী। বাবাকে যদি সংসার সামলানোর চাপটা তাঁর ছোট বয়সে না নিতে হতো, আমি নিশ্চিত, আমার বাবা একজন সংগীতশিল্পী হতেও পারতেন।’
সিয়াম জানালেন, তাঁর বাবা মান্না দে, খালিদ হাসান মিলু, বারী সিদ্দিকীর মতো শিল্পীদের গান শুনতেন। এই শিল্পীরা সিয়ামেরও প্রিয় শিল্পী। সময়ের সঙ্গে প্রিয় তালিকায় আরও অনেক যোগ হয়েছে। সিয়াম বললেন, ‘বর্তমান সময়ে যাঁরাই গান করছেন, তাঁরা সবাই দুর্দান্ত গায়। মাঝেমধ্যে তাঁদের সঙ্গে গান নিয়ে আলাপ হয়। আমার মনে হয়, প্রত্যেক শিল্পীকে তাঁর শিল্পকর্ম নিয়ে প্রশংসা শুনতে বেশি ভালো লাগে। এটা তাঁদের প্রাপ্যও। আর শিল্পীদের প্রশংসা ওপেনলি করা উচিত। আমি গান গাইতে পারি না; কিন্তু আমি খুব ভালো একজন শ্রোতা। সবার গান শুনি।’
গানটি নিয়ে হিমি বললেন, ‘আমি প্রথম আলোর ক্যাফে লাইভে দুইবার গান গেয়েছিলাম। তখন কবির বকুল (গীতিকার) ভাই আমাকে বলেন, আমরা কি ঈদে গান নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করতে পারি? এরপর তিনি আমার গাওয়া গানের ভিডিও হানিফ সংকেতের কাছে পাঠান। তারপর “ইত্যাদি”তে গান গাওয়ার প্রস্তাব পাই। এমনিতে গাইবার অভিজ্ঞতা বেশ ভালো ছিল। ইমরান ভাইয়ের কম্পোজিশনে প্রথমবার গাইলাম, বিষয়টা মজার ছিল। গানটি আমাদের রেকর্ডিং করতে সময়ও লাগেনি। ইত্যাদি তো নস্টালজিক একটা ব্যাপার। ছোটবেলা থেকেই ইত্যাদি দেখার জন্য এক্সাইটেড থাকতাম। এ রকম একটা অনুষ্ঠানে নিজে অংশ হয়েছি, তাও আবার গানে! এই গানের ব্যাপারটা আমার জন্য খুবই নস্টালজিক, কারণ ছোটবেলা থেকেই আমি গান শিখেছি। এখন তো আমার ঈদের ব্যস্ততা অনেক। দেখা যাবে চাঁদরাত পর্যন্ত ব্যস্ততা থাকবে। কিন্তু গান গাওয়ার যেহেতু বিষয় ছিল, তাই ব্যস্ততার মধ্য থেকেও সময় বের করেছি।’
সিয়াম প্রসঙ্গ উঠতেই হিমি বলেন, ‘সিয়াম ভাইয়ের সঙ্গে অনেক আগে পরিচয় ছিল। গানটি করতে গিয়ে মনে হয়েছে, অনেক দিন পর আমাদের দেখা হয়েছে। আমি শুরুর দিকে উপস্থাপনা করতাম, একবার সেই অনুষ্ঠানে তিনি এসেছিলেন। আর একসঙ্গে গানটা গাইতে পেরে ভালো লেগেছে। গানটাও ভালো। এখন দর্শক–শ্রোতারা কীভাবে নেন, সেটাই দেখার বিষয়।’
‘তুমি আমায় ভালোবাসো, আমি তোমায় ভালোবাসি’—এমন কথার গানটির কথা লিখেছেন কবির বুকল। ‘ইত্যাদি’র গ্রন্থনা, পরিকল্পনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় বরাবরের মতোই আছেন হানিফ সংকেত।