সে আমাকে রানির মতো রেখেছে, আমি সুখী: অভিনেত্রী চমক
ব্যবসায়ী আজমান নাসিরকে বিয়ের পর আলোচনায় টেলিভিশন নাটকের অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক। কয়দিন আগে হবু বরের সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় ঘুরতে যাওয়ার পর সমালোচনা যেন আরও বাড়তে থাকে। এরপর নেটিজেনদের ভুল ভাঙাতে চমক ভিডিও বার্তাও দেন। তারপরও যেন আলোচনা থামছেই না। এবার টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী জানালেন, কেন ব্যবসায়ী নাসিরকে বিয়ে করলেন। বললেন, দুটি কারণে ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছেন তিনি।
চমকের বর আজমান নাসির পেশায় ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি চমকের সঙ্গে ‘দ্য লাস্ট হানিমুন’ নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ফেসবুকে স্বামীর সঙ্গে দুটি ছবি প্রকাশ করে বিয়ের খবর নিশ্চিত করেন অভিনেত্রী নিজেই।
বিয়ে প্রসঙ্গে ফেসবুকে চমক লিখেছেন, ‘যদি মনের মিল হয়, তবে ৯০০ টাকার শাড়ি পরেও বিয়েতে বসা যায়!’ সমালোচকদের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে চমক লিখেছেন, ‘জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে নাকি পূর্বনির্ধারিত ভাগ্য— তাহলে বিয়ে বিষয়টি নিয়ে কেন আমরা এত আলোচনা–সমালোচনা করি? বিধাতা আমার বিয়েটা এই মানুষটার সাথেই লিখে রেখেছিল। এই মানুষটাকে সবাই প্রচণ্ড ধনকুবের কিংবা অসম্ভব ক্ষমতাশীল, খারাপ বা চরিত্রহীন মানুষ বলছে—অথচ এই মানুষটা এগুলোর একটাও না! টাকাপয়সা, ক্ষমতা বরং আমারই বোধ হয় একটু বেশি! এখন নিশ্চয়ই বলবেন তাহলে কেন তাকে বিয়ে করলাম?’
ব্যবসায়ীকে বিয়ের প্রথম কারণ হিসেবে চমক লিখেছেন, ‘বিয়েটা পূর্বনির্ধারিত ভাগ্য।’ দ্বিতীয় কারণ হিসেবে চমক লিখেছেন, ‘সারা দিন আমি কাজ করে বাড়ি ফিরলে মানুষটা জিজ্ঞাসা করে, রাতে কী খাবে? শরীর কেমন? প্রচণ্ড মাথাব্যথা ও জ্বরে মানুষটা আমার পাশে সারা রাত জেগে থাকে! আমার শুটিংয়ের ফাঁকে খোঁজ নিতে আসে এই কারণে যে আমার কিছু লাগবে কি না অথবা অনর্থকই আমার পাশে বসে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা! আমার কাছে এসবের মূল্য টাকা দিয়ে বিচার হয় না! খুব সাধারণ চাওয়া–পাওয়া আমার। তাই খুব সাদামাটাভাবেই এই মানুষটিকে জীবনসঙ্গী করে নিলাম।’
একপর্যায়ে চমক লিখেছেন, ‘কোনো দামি শাড়ি, সোনা, গয়না, মোটা অঙ্কের দেনমোহর কিছুই না! ৯ টাকা দেনমোহরে, ৯০০ টাকার শাড়ি, হাজার টাকার রজনীগন্ধা, বান্ধবীর শাড়ি আর এক পেজের থেকে স্পনসর ইমিটেশনের গয়না পরেই বিয়েটা করলাম! মানুষটার সম্পদ বলতে কিছুই নেই, অতীতও খুব একটা মধুর নয়! কিন্তু রাজার মতো একটা মন আছে, যেখানে সে আমাকে রানির মতো রেখেছে। আমি সুখী। এই মুহূর্তে আমার মতো সুখী কজন আছে জানি না। আবার এই সুখ কত দিন টিকবে তা–ও জানি না। তবে এই মানুষটার সাথে সারা জীবন কাটিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে আছে, বাকিটা ওপরওয়ালার ইচ্ছে। আপনারাও সুখে থাকুন, আমার জীবন নিয়ে নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট না করে অল্পতেই সুখ খুঁজতে শিখুন! আপনার জীবনসঙ্গী কিংবা আশপাশের মানুষকে জাজ না করে ভালোবাসুন, ভালো থাকুন, ভালো রাখুন। আর বিয়েটা যেন টাকাপয়সা দেখানো, স্ট্যাটাস শো-অফের জন্য না হয়, বিয়েটা যেন হয় ভালোবাসার, ভালো থাকার।’
রুকাইয়া জাহান চমকের জন্ম বরিশালে; তবে বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা ঢাকায়। ঢাকায় সাংস্কৃতিক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন তিনি। শৈশব থেকেই নাচের তালিম নিয়েছেন। চমকের মা-বাবার ইচ্ছা ছিল মেয়ে চিকিৎসক হবে। মা-বাবার সেই ইচ্ছাও পূরণ করেছেন তিনি। তাঁর তথ্যমতে, তিনি মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেছেন। ২০১৭ সালে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ হয়ে বিনোদন অঙ্গনে পথচলা শুরু চমকের। লেখাপড়ার বিরতি শেষে ২০২০ সালে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু করেন তিনি। তাঁর উল্লেখযোগ্য নাটক ও সিরিজ হলো ‘হায়দার’, ‘হাউস নং ৯৬’, ‘মহানগর’, ‘সাদা প্রাইভেট’, ‘অসমাপ্ত’ ও ‘ভাইরাল হাজব্যান্ড’।