ফিল্মফেয়ারে জয়ার টানা ষষ্ঠ মনোনয়ন
ভারতীয় সিনেমার অন্যতম সম্মাননা ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস। বলিউডের পাশাপাশি টালিউডেও ‘ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা’ দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার রাতে প্রকাশ পেয়েছে এবারের মনোনয়নের তালিকা। তালিকায় জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশের পাঁচ তারকা। দুই ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।
‘ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা ২০২৩’–এ সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘দশম অবতার’ সিনেমার জন্য প্রধান চরিত্রে সেরা অভিনেত্রী ও কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত ‘অর্ধাঙ্গিনী’তে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছেন জয়া। আর এর মাধ্যমে টানা ষষ্ঠবারের মতো মনোনয়নের সম্মান জিতলেন তিনি।
২০১৩ সালে অরিন্দম শীলের হাত ধরে কলকাতার সিনেমায় জয়ার যাত্রা শুরু। ওই বছর পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় জয়ার প্রথম টালিউড সিনেমা ‘আবর্ত’। শুরুর কাজেই প্রশংসিত হন তিনি। সিনেমাটিতে তাঁর অভিনয়ের জন্য ‘ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা ২০১৪’–এ সেরা নবাগত অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছিলেন জয়া; তবে পুরস্কৃত হননি।
২০১৭ সালের ফিল্মফেয়ার থেকে এবারের ফিল্মফেয়ার। টানা ছয়টি আসরে এক থেকে একাধিক ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছেন ঢাকার মেয়ে জয়া। এর মধ্যে ২০১৮, ২০২০ ও ২০২১ সালের পরপর তিনটি আসরেই সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার ঘরে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে দুবার জনপ্রিয় বিভাগে, শেষবার ২০২১ সালে সমালোচক বিচারে পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।
জয়ার টানা ষষ্ঠ মনোনয়নের দৌড় শুরু হয় ২০১৭ সালের পুরস্কারের আসর থেকে। অরিন্দম শীলের পরিচালনায় ‘ঈগলের চোখ’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসে মনোনয়ন পেয়েছিলেন তিনি; তবে প্রথমবারের পর সেবারও ফিরতে হয় খালি হাতে।
‘ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা ২০১৭’ আসরে কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘বিসর্জন’ দিয়ে অর্জনের গল্পটা শুরু করেন জয়া। অনুষ্ঠানটি হয় ২০১৮ সালে। সেবার জনপ্রিয় শাখায় শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার ঘরে তোলেন তিনি।এরপর দুই বছর এই আসর বন্ধ ছিল। ২০২০ সালে অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘রবিবার’ ও কৌশিক গাঙ্গুলী পরিচালিত ‘বিজয়া’ সিনেমার জন্য সমালোচকের বিচারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জয় করেন জয়া।২০২১ সালে ফিল্মফেয়ারের হ্যাটট্রিক করেন জয়া। অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘বিনিসুতোয়’ সিনেমার জন্য সমালোচক বিচারে সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে ফিল্মফেয়ার জিতেন তিনি। আর এর মাধ্যমে টানা তিনবার ফিল্মফেয়ার জয় করেন তিনি।গত বছর অনুষ্ঠিত হয় ‘ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা ২০২২’-এর আসর।
এতে টানা পঞ্চমবারের মতো ফিল্মফেয়ারে মনোনয়ন পান জয়া। সায়ন্তন মুখার্জির ‘ঝরা পালক’ ছবিটির জন্য সমালোচক বিভাগে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর মনোনয়ন পান তিনি।তবে সেবার হালি ফিল্মফেয়ারের দখল নিতে পারেননি এ অভিনেত্রী। তাঁর সঙ্গে এই লড়াইয়ে সমালোচকদের বিচারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় (বৌদি ক্যান্টিন) ও গার্গী রায়চৌধুরী (মহানন্দা)।
প্রসঙ্গত, শুধু ফিল্মফেয়ার নয়, ওপারের অন্যান্য পুরস্কারেও দাপট দেখিয়েছেন জয়া। এর মধ্যে তিনি একটি জি সিনে অ্যাওয়ার্ড, তিনটি টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ড, দুইটি বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাওয়ার্ড ও এবিপি আনন্দ সেরা বাঙালি সম্মাননা পেয়েছেন।উল্লেখ্য, জয়া আহসানের আগেও বাংলাদেশের অনেক অভিনেত্রী কলকাতার সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন ববিতা। ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমায় দেখা গিয়েছিল কবরীকে। অঞ্জু ঘোষও কাজ করেছেন কলকাতার অনেক ব্যবসাসফল সিনেমায়। গৌতম ঘোষ ও বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর মতো নামী পরিচালকের সিনেমায় অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা চম্পা। রোজিনাও অভিনয় করেছেন কলকাতার কয়েকটি সিনেমায়। তবে তাঁদের তুলনায় জয়ার সাফল্যের পাল্লা বেশ ভারীই বলতে হয়।