নন্দনে ‘মহানগর’ দেখে আপ্লুত জয়া বচ্চন
বলিউড তারকা জয়া বচ্চন গতকাল সোমবার কলকাতার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নন্দন প্রেক্ষাগৃহে দেখলেন পুনরুদ্ধার হওয়া তাঁর প্রথম অভিনীত ‘মহানগর’ ছবিটি। সন্ধ্যায় নন্দনে দেখানো হয় ছবিটি। জয়া বচ্চন ছবিটি দেখে আবেগে আপ্লুত হন। এ সময় স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন তিনি।
তখন জয়া বচ্চনের (জয়া ভাদুড়ি) বয়স মাত্র ১৫। বাবা তরুণ ভাদুড়ির সঙ্গে গিয়েছিলেন পুরীতে। নির্জন সৈকতে ছবির শুটিং চলছিল। শর্মিলা ঠাকুর ও রবি ঘোষ অভিনয় করছিলেন। তাঁদের নজরে পড়েন জয়া ভাদুড়ি। শর্মিলা ঠাকুর ও রবি ঘোষ কথাও বলেন জয়ার বাবার সঙ্গে। এরপর জয়া ফিরে আসেন কলকাতায়। হঠাৎ একদিন ডাক পড়ে তাঁর।
সত্যজিৎ রায়ের ডাকে তিনি চলে আসেন কলকাতার ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে। তারপর তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁকে অভিনয় করতে হবে মাধবী মুখার্জি ও অনিল চ্যাটার্জির সঙ্গে। অভিনয় করেন। মুগ্ধ হন সবাই।
এরপরই তাঁকে মনোনীত করা হয় সত্যজিৎ রায়ের ‘মহানগর’ ছবির জন্য। ভয় ও জড়তা নিয়ে অভিনয় করেও পাস করেন জয়া। ছবিটি পরিচালনা করেন সত্যজিৎ রায়। আর অভিনয় করেন মাধবী মুখার্জি, অনিল চ্যাটার্জি, হারাধন ব্যানার্জি, ভিকি রেডউড, শেফালিকা দেবী, হরেন চ্যাটার্জি প্রমুখ।
বাণীর চরিত্রে অভিনয় করেন জয়া ভাদুড়ি, আজকের জয়া বচ্চন। ছবিটি প্রযোজনা করেন আরডি বনশাল। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। জয়া বচনের চলচ্চিত্র অঙ্গনে যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘মহানগর’ ছবির মাধ্যমে ১৯৬৩ সালে। এরপর থেকে তাঁর চলচ্চিত্র অঙ্গনে যাত্রা শুরু।
জয়া বচ্চন হিন্দি ও বাংলার অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত বাংলা ও হিন্দি ছবির মধ্যে— ‘গুড্ডি’, ‘শোলে’, ‘জওয়ানী দিওয়ানী’, ‘উপহার’, ‘অনামিকা’, ‘অভিমান’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘বাবুর্চি’, ‘জাঞ্জির’, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘জননী’, ‘পরিচয়’, ‘পিয়া কা ঘর’, ‘অন্নদাতা’, ‘এক নজর’, ‘সমাধি’, ‘নয়া দিন নয়া রাত দোস্তি’, ‘ফাগুন’ ও ‘মেহেরজান’ উল্লেখযোগ্য।
জয়া বচ্চন বাঙালি পরিবারের কন্যা হলেও জন্মেছিলেন মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে। শৈশবকালে পড়াশোনা করেছেন মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভুপালের সেন্ট যোসেফ কনভেন্ট স্কুলে।
তিনি ভারতের রাজ্যসভার সমাজবাদী পার্টির সংসদ সদস্যও ছিলেন।
সেই জয়া বচ্চন তাঁর জীবনের প্রথম অভিনীত ছবি ‘মহানগর’ দেখতে কলকাতায় আসেন। তারপর গতকাল সেই ছবি প্রদর্শিত হয় নন্দনে। আর তা দেখতে তিনি হাজির হন তাঁর প্রিয় শহর কলকাতায়। সঙ্গে ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের পুত্র পরিচালক সন্দীপ রায়।