যুক্তরাষ্ট্র থেকে শাফিনের মরদেহ কবে আসছে জানালেন হামিন

২০১৪ সালে মা ফিরোজা বেগমের মরদেহের পাশে দুই ছেলে (বাঁ থেকে) শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় ২৫ জুলাই সকালে মারা যান ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ। এরপর থেকে শাফিনের মরদেহ দেশে আনার প্রস্তুতি শুরু হয়। মরদেহ দেশে আনতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথাও ছিল বড় ভাই হামিন আহমেদের; কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর যাওয়া হয়নি। আজ শনিবার বিকেলে হামিন জানান, ২৯ জুলাই বিকেলে শাফিনের মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছাবে।
প্রথম আলোকে হামিন আহমেদ জানান, শাফিনের মরদেহ বহনকারী উড়োজাহাজ ২৯ জুলাই বিকেল সাড়ে পাঁচটায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। ৩০ জুলাই দুপুরে গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে বাবার কবরে সমাহিত করা হবে শাফিনকে। পাশে তাঁর মা সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের কবর রয়েছে। ১৯৭৪ সালে মারা গেছেন শাফিনের বাবা কমল দাশগুপ্ত।

জানা গেছে, শাফিন আহমেদের অসুস্থ হওয়ার পরই তাঁর স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। মৃত্যুর খবর শোনার পর বড় ভাই হামিন আহমেদেরও দেশটিতে যাওয়ার কথা ছিল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারিবারিক এবং যুক্তরাষ্ট্রে থাকা স্বজন ও বন্ধুদের সিদ্ধান্তে তার যাওয়া হয়নি।

শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ
ফাইল ছবি

হামিন বলেন, ‘আমার ও শাফিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব অনেকে ওখানে আছে। তারা বলল, এর মধ্যে এত কষ্ট করে আসার দরকার নেই। আমরা ম্যানেজ করছি। এরপর ওরাই শাফিনের মরদেহ বাংলাদেশে আনার উদ্যেগটা নেয়। আমরা এখান থেকে ফোনে সার্বক্ষণিক যুক্ত ছিলাম। তা ছাড়া শাফিনের স্ত্রী যেহেতু ওখানে আছেন, বাড়তি কারও থাকার প্রয়োজন পড়েনি। তাই ঢাকায় থাকা পরিবারের সদস্যদের এবং যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বন্ধুবান্ধবদের পরামর্শে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হয়।’  

দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দেন ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ। দেশটির একটি অঙ্গরাজ্য থেকে আরেক অঙ্গরাজ্যে গানে গানে শ্রোতা মাতাবেন, তেমনটাই পরিকল্পনা ছিল। শুরুটা ঠিকঠাক হয়েছিল।

শাফিন আহমেদ জীবনের শেষ দিনগুলোয় ছিলেন মাইলসের বাইরে
কোলাজ

দ্বিতীয় কনসার্ট ছিল ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায়। কনসার্টের আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর আয়োজকদের উদ্যেগে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে ভর্তির দিনই তাঁর গুরুতর হার্ট অ্যাটাক হয়। এরপর তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। কয়েক দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পর গত বৃহস্পতিবার চিকিসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শাফিন আহমেদের জন্ম ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। শৈশবে বাবার কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত শিখেছেন আর মায়ের কাছে শিখেছেন নজরুলসংগীত।

শাফিন আহমেদের গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে রয়েছে ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা জ্বালা...এ অন্তরে’, ‘ফিরিয়ে দাও হারানো প্রেম’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’, ‘জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় লাইন’ প্রভৃতি।

শাফিন আহমেদ
সংগৃহীত

শাফিন আহমেদ তাঁর বাবা কমল দাশগুপ্তের কিছু গান নিয়েও একক অ্যালবাম করেছিলেন। মাঝখানে কিছুদিন রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী হয়েও আলোচনা সৃষ্টি করেছেন। শাফিন আহমেদ স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।