আসিফ কেন মেয়েদের কাছে অজনপ্রিয়—নিজেই জানালেন কারণটা
দেশের সংগীতাঙ্গনে তুমুল জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। ক্যাসেট-সিডির আমলে অডিওতে রাজত্ব করা এই শিল্পী এখনো বেশ দাপুটে। তাঁর মতো করেই গান প্রকাশ করে চলছেন। তৈরি করে নিজস্ব ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তাঁর গাওয়া গানের অডিও-ভিডিও সবই পাওয়া যায়। ফেসবুকে সরব এই গায়ক আজ রোববার বিকেলে তাঁর এক পোস্টে জানালেন, মেয়েদের কাছে তিনি অজনপ্রিয়, তাঁর এই অজনপ্রিয়তার কারণ গীতিকবিরা।
প্রায় দুই যুগের পেশাদার সংগীতজীবন গায়ক আসিফ আকবরের, যেটার আনুষ্ঠানিক শুরু হয় ২০০১ সালের ৩০ জানুয়ারি। এদিন দেশের অডিও ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ও ব্যবসা সফল অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের শ্রোতা তো বটেই, বিশ্বের অন্য দেশের বাংলাভাষীরাও চিনে ফেলে কুমিল্লার এই তরুণকে।
এই অ্যালবাম প্রকাশের পর আসিফকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্যাসেটের যুগের এই গায়ক এখনো দাপিয়ে বেড়ালেও গান প্রকাশের নতুন মাধ্যম সম্পর্কে নিজের মতো করে জানার চেষ্টা করে চলেছেন।
আসিফ তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ইউটিউব নিয়ে কখনোই গবেষণা করিনি। ছোট ভাই আতিক আকবর করপোরেট মহাজন। একদিন জার্নিতে মোবাইল নিয়ে চেক করে দেখল, ঠিক কোন ধরনের শ্রোতা এবং কোন দেশে আমার গান বেশি শোনা হয়। ছোটটা একটু কাঠখোট্টা টাইপের, আবেগ কম হিসাব বেশি। এসব তথ্য ইচ্ছা করেই জানতে চাই না। ক্যাসেট-সিডি আমলের গায়ক আমি, ভার্চ্যুয়াল জগতের জ্ঞান ভালোও লাগে না। তারপরও সে বলে, বিজনেস ডেভেলপমেন্টের জন্য এসব জানা উচিত।’
ছোট ভাই আতিক আকবরের উৎসাহে ডিজিটাল বিজনেস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। আবার কোন কোন দেশ থেকে কোন বয়সীরা তাঁর গান শুনছেন এসবও জানলেন। ফেসবুকে সেই তথ্য জানিয়ে আসিফ লিখলেন, ‘জানলাম, বাংলাদেশের বাইরে আমার গানের শ্রোতা প্রথম ইন্ডিয়ায়, দ্বিতীয় মালয়েশিয়া, তৃতীয় সৌদি আরবে। আরও জানলাম, ১৮ থেকে ৩৬ বছর বয়সী শ্রোতার সংখ্যাই ৯০%। শিশু, মধ্যবয়সী এবং সিনিয়র সিটিজেনদের মধ্যে আমার গান প্রভাব বিস্তার করেনি এখনো। সবচেয়ে হতাশাজনক তথ্য হচ্ছে, মাত্র ১৬% মেয়েরা আমার গান পছন্দ করে! ৮৪% তরুণ যুবকদের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, এটাই সান্ত্বনা।’
মেয়েদের কাছে জনপ্রিয়তা কম—এমনটা আসিফকে হতাশ করেছে। সেই হতাশার দায়ভারটা তুলে দিয়েছেন গাওয়া গানের গীতিকারদের ওপর।
বিষয়টি উল্লেখ করে আসিফ লিখেছেন, ‘মেয়েদের কাছে আমার অজনপ্রিয়তার কারণ গীতিকবিরা। তাঁরা ধারাবাহিকভাবে মেয়েদের নানা রকম অভিনয়, ছলনা, প্রতারণা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমার মুখ দিয়ে গান বের করেছে। গানের ব্যাপারে গীতিকার-সুরকারই মুখ্য, আমি সিম্পল গায়কমাত্র। অথচ তাঁদের কারণে আজ মেয়ে শ্রোতার সংখ্যা খুব গরিব অবস্থায় আছে। পরিসংখ্যান অবশ্য সব সময়ই দুমুখো সাপ। প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আগে বিয়ে করেছি, সেটা নিয়ে একটা হালকা ক্ষোভ থাকতে পারে! এত দিন পরও সেই ক্ষোভ অটুট রয়েছে জেনে আতঙ্কিত হলাম! মেয়েরা যেন আমার গান শোনে—এখন সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’