এগুলো সুবিধাবাদী মানুষের কাজ
‘শিক্ষার্থীরা একতাবদ্ধ হয়ে সাহস নিয়ে যেভাবে এগিয়েছেন, এটা আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করেছে। কারণ, একটা সময় ছিল, আমরা ভাবতাম, এখন মারধর করা হলো, এখন সবাই চুপচাপ হয়ে যাবেন। আগে তো এমন পরিস্থিতিই ছিল। এবারও যখন শিক্ষার্থীদের ওপর প্রথম হামলা হয়, তখন অনেকটা আতঙ্কে ছিলাম। কিন্তু এবার তাঁদের সাহস দেখতে পেলাম পদে পদে। গতকাল যখন শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি আদায়ে সফল হলেন, তখন মনে হলো, আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।’ খুশিমনেই কথাগুলো বললেন গায়িকা এলিটা করিম।
কথা বলতে বলতে এই গায়িকার মন খারাপ হয়ে যায়। এর কারণটা জানালেন নিজেই, গতকাল বিজয় উদ্যাপনের মুহূর্তে গণভবন থেকে অনেকেই লুটপাট করছিলেন। সেসব ঘটনা তাঁকে মর্মাহত করেছে। তবে এসব কাজ শিক্ষার্থীদের নয় বলে মনে করেন এলিটা। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এগুলো সুবিধাবাদী মানুষের কাজ। এটা কোনো শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারে না। তাঁরাই আবার সংসদ ভবনে প্রবেশ করে ধূমপান করছিলেন। আবার ৩২ নম্বরের যে বাড়ি, সেটা কিন্তু জাদুঘর। দেশের ঐতিহাসিক একটা জায়গা। সেটা নষ্ট করায় আমি মর্মাহত হয়েছি। কারণ, আপনি যা–ই করেন না কেন, যে পক্ষেই থাকেন না কেন, আপনি ইতিহাসকে অস্বীকার করতে পারবেন না, যেটা হয়ে গেছে।’
এলিটা আরও বলেন, ‘সবার মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে, এটাও বুঝতে পারছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, যাঁরা বিজয় এনে দেন, তাঁদের স্থান সব সময় অনেক ওপরে থাকে। এখন জাতীয় কোনো সম্পদ পোড়ানো, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে দেওয়া, এর বাইরে আরও অনেকের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হচ্ছে শুনলাম। আমাদের সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত আনা হচ্ছে, এসব ঘটনা আমাকে মর্মাহত করেছে।’
মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা আবার মাঠে থাকায় তাঁদের সাধুবাদ জানান এই গায়িকা। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে ভালো লাগছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের দেখলাম, সংসদ ভবন পরিষ্কারের দায়িত্ব নিয়েছে। রাস্তায় কোনো ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় সেই দায়িত্ব কোনো কোনো জায়গায় পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আবার যেগুলো মানুষ গণভবন থেকে নিয়ে গিয়েছিল, সেগুলো কেউ কেউ ফেরত দিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো যে জাতীয় সম্পদ, সেটা বোঝার উপলব্ধি হয়েছে, এটাও ভালো লেগেছে। একজন সংগীতের মানুষ হিসেবে, একটাই প্রত্যাশা, নতুন বাংলাদেশ ভালো দিকে যাবে।’