২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘অ জেডা ফইরার বাপ’ গানের গীতিকার সৈয়দ মহিউদ্দিন আর নেই

গীতিকার, সুরকার সৈয়দ মহিউদ্দিনসংগৃহীত

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের খ্যাতনামা গীতিকার, সুরকার সৈয়দ মহিউদ্দিন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি মহি আল ভান্ডারী নামেও পরিচিত ছিলেন। ‘অ জেডা ফইরার বাপ’, ‘মেজ্জান দিয়ে দিয়ে’, ‘মনহাচারা মাঝিরে তোর সাম্পানত চইড়তাম ন’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গীতিকার ও সুরকার মহিউদ্দিন দীর্ঘদিন ধরেই নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ রোববার সকাল ১০টায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। আজ বাদ জোহর কাতালগঞ্জের কাতালপির মসজিদে তাঁর জানাজা হয়েছে।
লোকগীতি গবেষক ও সাংবাদিক নাসির উদ্দিন হায়দার তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, চিরকুমার সৈয়দ মহিউদ্দিন আজীবন সংগীত সাধনা করে গেছেন। চট্টগ্রাম নগরের শুলকবহর মির্জাপুলের বাসায় তিনি একাই থাকতেন। সংগীতের সঙ্গে জড়িত লোকজনই ছিল তাঁর পরিবারের সদস্যের মতো।

গত ১৩ মার্চ স্ট্রোক করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন এই গুণীজন। এরপর তিন দফা স্ট্রোক করেন। এর আগে ২০১৫ সালের ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের ডিসি হিলে এক অনুষ্ঠানে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেদিন তিনি ক্রেস্ট ও সনদ নিয়ে মঞ্চ ত্যাগ করার সময় পা পিছলে পড়ে বাম হাত ও বাম পা ভেঙে ফেলেন। তার পর থেকেই রোগভোগের দিন শুরু চিরকুমার এই শিল্পীর।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার সুয়াবিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সৈয়দ মহিউদ্দিন। তাঁর বাবা সৈয়দ আমির হোসেন এবং মা সৈয়দা আনোয়ারা বেগম।

আরও পড়ুন

পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই ছবি আঁকায় তাঁর বেশ আগ্রহ ছিল। ইচ্ছা ছিল শিল্পী হবেন।  কিন্তু সমাজে বিদ্যমান সংস্কার, গোঁড়ামি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মহিউদ্দিন গানের মাধ্যমে সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখতেন। তখন সংগীতের কথা ও সুর তাঁর মনে দোলা দিত। গান লেখার ইচ্ছা জাগত। এই অবস্থায় সুন্দর সমাজ নির্মাণের স্বপ্নে গান লেখার প্রতি তিনি ঝুঁকে পড়েন।

১৯৮০–এর দশকের প্রথমে বাংলাদেশ বেতার চট্টগাম কেন্দ্রে আধুনিক গানের পান্ডুলিপি জমা দেন। যে বছর জমা দেন, সে বছরই বেতারের গীতিকার হিসেবে অনুমোদন পান। আশির দশকে তাঁর লেখা ও সুর করা  ‘অ জেডা ফইরার বাপ’ গানে কণ্ঠ দেন আঞ্চলিক গানের বিখ্যাত শিল্পী শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণব। বাংলাদেশ টেলিভিশনে গানটি প্রচারিত হওয়ার পরপরই বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। এরপর নিয়মিতই তিনি জনপ্রিয় আঞ্চলিক গান উপহার দিয়েছেন দর্শক–শ্রোতাদের।