কোটা আন্দোলনের সেই ভাইরাল কন্যা আসিফের গানে মডেল
‘আপনারা কি কোটার পুলিশ?’ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘অগ্নিকন্যা’, ‘কুইন’, ‘বাঘিনী’ ও ‘আয়রন লেডি’ নামে ভাইরাল হন ফারজানা সিঁথি। সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। পরে অবশ্য এক ভিডিও বার্তায় সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। ভাইরাল সেই ফারজানা সিঁথি এবার আসিফ আকবরের গানের মডেল হতে যাচ্ছেন। প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন আসিফ।
আসিফ আকবরের গাওয়া গানের কথাগুলো হচ্ছে এমন—‘ইচ্ছেরা আজ ইচ্ছেরা যেন মেলেছে ডানা,/ মন খুশির কারণটা আজ কেন লাগছে অজানা,/ ভেসেছি আজ প্রেমের দেশে নিয়ে স্বপ্নকে তোমার,/ ভালোবাসার তাজমহলে খুলে গেছে সিংহদ্বার,/ তুমি আমার এ পৃথিবী, তুমি ছাড়া আজ সব অচেনা।’ গানটির কথা লিখেছেন বূদ্ধাদিত্য মুখার্জি ও শাদাব আখতার। আর সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন রাজীব ও মোনা। দ্বৈত কণ্ঠের এই গানে আসিফের সহশিল্পী ভারতের নিকিতা গান্ধী। গানটি মুক্তি পাবে আসিফ আকবরের ইউটিউব চ্যানেলে।
ফারজানা সিঁথিকে গানের মডেল হিসেবে নির্বাচিত করার প্রসঙ্গ উঠতেই আসিফ বললেন, ‘কোটা আন্দোলনের সময় আমরা ফারজানা সিঁথিকে একভাবে দেখেছি। দেখেছি, হইচই করেছে, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তর্ক করেছে। ইন্টারেস্টিং হচ্ছে, সিঁথির সঙ্গে মেশার পর ভাবলাম, যে মেয়েটাকে আগে দেখেছি, তার একেবারে রিভার্স। সিঁথিকে যখন টেক্সট দেওয়া হলো, যেভাবে সে সাড়া দিয়েছে, সেটাও ছিল চমৎকার। আমার টার্গেট হচ্ছে, আমাদের যে বিপ্লব, সেই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে, আমরা দেখেছি সুনীতি চৌধুরী, শান্তি ঘোষ ও প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার—এই যে শাড়ি পরার ব্যাপারটা, এটাই হচ্ছে মূল। এই বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা মেয়ে জিনস, টপ, এটা-ওইটা পরে। কিন্তু সিঁথিকে ধারাবাহিকভাবে কিন্তু শাড়ি পরা দেখেছি। শাড়িটা তার পছন্দের জায়গা, আমারও পছন্দের জায়গা। আমার পরিচালক সৌমিত্র ঘোষ ইমনের সঙ্গে আলাপ করলাম, ছেলেটা থাকবে স্টাইলিশ, উরাধুরা, আধুনিক মনমানসিকতার—বাইক চালায়, জিপ চালায়, ধনী পরিবারের ছেলে। কিন্তু সে পছন্দ করে আটপৌরে একটা মেয়েকে। পরিপূর্ণ বাঙালি বলতে যা, তা–ই। সে ক্ষেত্রে মেয়েটা আমার কাছে ফারজানা সিঁথিই উপযুক্ত মনে হয়েছে। সিঁথির মধ্যে যে স্মার্টনেস, সেটা পছন্দ হয়েছে।’
কথা প্রসঙ্গে আসিফ বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, যে যত বড় বিপ্লবী, সে তত নরম মনের মানুষ হয়। মানুষ তো ভালোবেসেই বিপ্লবী হয়। আগে ভালোবাসে মানুষকে, মানুষের অধিকার এবং চারপাশকে। কথা বলে দেখলাম, সে বিড়াল খুব পছন্দ করে। আমার অফিসে তো বিড়ালে ভর্তি। আজ দুপুরেও সিঁথি আমাকে ফোন করে জানাল, ভাইয়া, আমি কিছু রেডিয়াম বেল্ট কিনছি। আপনার অফিসের বিড়ালগুলোকে বেল্টগুলো পরিয়ে দিলে কেউ মারবে না। সে খুবই অন্য রকম মেয়ে। তাকে বাইরে থেকে যে রকম দেখা যায়, ঠিক তার উল্টো। সিঁথির যে ইমেজটা মানুষ দেখছে, এটা উচিত নয়। বিপ্লবের সময় সে যা খুশি তা–ই হবে, কোনো সমস্যা নেই। সুতরাং সিঁথির ভেতরকার যে মানুষটা, সেটাই আমি দেখাতে চাই। সিঁথির বেসিক অবয়বটা আমরা তুলে ধরতে চাই।’
২৬ ও ২৭ নভেম্বর—দুই দিন ধরে এই ভিডিও চিত্র ধারণ হবে। গানটি প্রসঙ্গে আসিফ বললেন, ‘গানটা অদ্ভুত সুন্দর। বাংলাদেশের একটা মাইলস্টোন গান হবে। সমসাময়িক সময়ে এত সুন্দর গান হয়নি। আমিও গাইনি।’