অনেক ‘প্রথম’ নিয়ে আজ মুক্তি পাচ্ছে ‘অটোবায়োগ্রাফি’
‘“সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি” ইলহাম হওয়ার পর আমার প্রথম কাজ। চিত্রনাট্যকার হিসেবে আমার প্রথম লেখা। ইলহামের প্রথম মিউজিক ভিডিও, একজন পরিচালক ফারুকীর প্রথম অভিনয়—এই ফিল্মে অনেক কিছুই প্রথমবার ঘটেছে। আর যেকোনো প্রথম মানুষের জীবনে অনেক স্পেশাল। তাই সিনেমাটি আমার জন্য বিশেষ কিছু’—কথাগুলো বলছিলেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। বহুপ্রতীক্ষিত এই ওয়েব ফিল্মটি ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ বা ‘অটোবায়োগ্রাফি’ মুক্তি পাচ্ছে আজ। ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে আজ রাত আটটায় মুক্তি পাবে ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’-এর প্রথম সিনেমা ‘অটোবায়োগ্রাফি’।
চরকিতে ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’-প্রজেক্টে জনপ্রিয় ১২ জন নির্মাতা ভালোবাসার গল্প নিয়ে ১২টি চরকি অরিজিনাল ফিল্ম বানাচ্ছেন। এই পুরো প্রজেক্টের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি নিজে নির্মাণ করেছেন দুটি সিনেমা—‘অটোবায়োগ্রাফি’ ও ‘মনোগামী’। সিনেমাটি নিয়ে তিশা আরও বলেন, ‘এই সিনেমা নিয়ে যদি আরও কিছু বলতে হয়, তাহলে আমি ছোট্ট করে বলব, এই সিনেমাটা হচ্ছে সব সন্তানের প্রতি তার মা-বাবার অনুভূতির উপহার।’
ফুরফুরে মেজাজের মানুষ মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তবে সিনেমায় প্রথমবার অভিনয় নিয়ে মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে তাঁর। ফারকী বলেন, ‘অনেক দিন তো কাজ করছি। কখনো ভাবিনি অভিনয় করব। সেটাও করা হয়ে গেল। ফলে একধরনের সংকোচ ভাব তো আছেই। একই সঙ্গে উত্তেজনাও কাজ করছে। নিজেদের জীবন ছেনে গল্প বের করার মধ্যে একটা ভালনারেবিলিটি আছে। কিন্তু হৃদয় খুঁড়ে বেদনা বের করে আনাই তো শিল্পীর কাজ।’
ফারুকী আরও বলেন, ‘নিজের সময়টার সাক্ষী হওয়া ছাড়া আমাদের আর কীই–বা করার আছে। আমরা এখানে সেটাই করার চেষ্টা করেছি। বাবা-মা হিসেবে আমরা বিশেষ কেউ না। সব মা–বাবার গল্পই এক। সন্তানের জন্য সব মা–বাবারই স্পেশাল ত্যাগের গল্প আছে, আনন্দের গল্প আছে, বিব্রতকর গল্প আছে—এই ছবিটা যদি তাঁদের সেসব অনুভূতির কথা মনে করিয়ে দেয়, তাহলেই আমরা খুশি হব।’
সিনেমাটি নিয়ে চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ প্রজেক্টটা আমরা যখন ঘোষণা করি, তখন দর্শকের জন্য এটা অনেক বড় প্রতিশ্রুতি ছিল। সেখান থেকেই প্রথম ছবির প্রতি দর্শকের প্রত্যাশা যেমন বেশি, একই সঙ্গে আমাদের আয়োজনও বেশ বড়। এখন সিনেমা মুক্তির পর দর্শক বিবেচনা করবেন সব। তবে আমি মনে করি, এই যে সব প্রথমের সম্মিলন হয়েছে, এই সিনেমায় সেটা দর্শকের জন্য চমকপ্রদ হবে।’
রেদওয়ান রনির প্রথম নির্মাণের প্রযোজক ছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তাই সিনেমাটি তাঁর জন্য খুব আবেগের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য এই সিনেমার প্রযোজনা করাটা ছিল খুব আবেগের। কেননা আমার জীবনের প্রথম নির্মাণের প্রযোজক ছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
এখন তাঁর সিনেমা আমি প্রযোজনা করছি, সেটা আমার জন্য খুবই ইমোশনের। ফারুকী ভাইয়ের দুটি সিনেমারই গল্প-প্লট একদম ভিন্ন। “অটোবায়োগ্রাফি” অন্য সব সিনেমা থেকে খুব স্পেশাল। কেননা এই সিনেমায় ফারুকী ভাই প্রথমবারের মতো অভিনয় করেছেন। তাঁকে স্ক্রিনে দেখার জন্য আমরা সবাই মুখিয়ে আছি। এখন অপেক্ষা দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখার।’
‘অটোবায়োগ্রাফি’র সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন তাহসিন রহমান, সম্পাদনা করেছেন মোমিন বিশ্বাস। কালার গ্রেডিংয়ে ছিলেন দেবজ্যোতি ঘোষ। সাউন্ড ডিজাইনে ছিলেন রিপন নাথ ও ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর করেছেন পাভেল আরিন। শিল্প নির্দেশক শিহাব নুরুন নবী।
সিনেমার শিল্পীদের ক্যামেরায় অনন্য ও বাস্তবরূপে করে তুলেছিলেন দুই নারী। তাঁরা হলেন মেকআপের আতিয়া রহমান ও কস্টিউম ইদিলা ফরিদ তুরিন।
ফারুকী ও তিশার সঙ্গে এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন ইরেশ যাকের, ডলি জহুর, শরাফ আহমেদ জীবনসহ অনেকে।
অভিনেত্রী তিথি ও তাঁর নির্মাতা স্বামী ফারহানের পক্ষ থেকে তাঁদের সদ্যোজাত কন্যার উদ্দেশে লেখা লাভ লেটার ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। বাইরে থেকে দেখলে এটা সন্তানের দুনিয়াতে আগমন পর্যন্ত একপ্রকার দিনলিপি হলেও ভেতরে লুকিয়ে আছে ব্যক্তি থেকে সমাজ হয়ে রাষ্ট্রের নানা চেহারা। ৮২ মিনিটের ‘অটোবায়োগ্রাফি’তে ফারুকী এভাবেই গল্প ফেঁদেছেন।
একনজরে
সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি
নির্মাতা: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
চিত্রনাট্য: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও নুসরাত ইমরোজ তিশা
অভিনয়ে: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও নুসরাত ইমরোজ তিশা
চিত্রগ্রহণ: তাহসিন রহমান
সম্পাদনা: মোমিন বিশ্বাস
প্রিমিয়ার: বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
দৈর্ঘ্য: ৮২ মিনিট
স্ট্রিমিং: চরকি
দিনক্ষণ: ৩০ নভেম্বর