একজন রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের কথা
‘আই অ্যাম আয়রন ম্যান’—এই সংলাপের পর তাঁর পরিচয় নতুন করে দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। এক সংলাপে ডুবতে বসা ক্যারিয়ার এবং মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স দুই-ই একসঙ্গে দেখেছিল সাফল্যের মুখ। তাঁর নাম রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। এর চেয়ে বড় করে পরিচয় দেওয়ার মতো আসলেও কিছু নেই। কারও কাছে টনি স্টার্ক, আবার কারও কাছে শার্লক হোমস।
আমাদের জীবনের প্রথম সুপারহিরো হয়ে আসেন আমাদের বাবা। হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন, ‘পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ থাকতে পারে, কিন্তু একটাও খারাপ বাবা নেই।’ রবার্ট ডাউনির ক্ষেত্রে আক্ষরিক অর্থে তাঁর বিপরীত। তাঁর জীবনে তাঁর বাবা কোনো সুপারহিরো নন, বরং সুপার ভিলেন। ছয় বছরের বাচ্চার হাতে যেখানে বাবারা তুলে দেন আইসক্রিম কিংবা চিপস, সেখানে তিনি তুলে দিয়েছিলেন মাদক। ছয় বছর বয়সে নিয়মিত হিরোইন সেবন করা ডাউনি আট বছরের মধ্যেই হয়ে যান পুরোপুরি মাদকাসক্ত। একজন মাদকাসক্ত যেভাবে গোগ্রাসে মাদক সেবন করতে পারে, ঠিক সেভাবেই পারতেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র।
বাবা রবার্ট ডাউনি সিনিয়রকে নিজের জীবনের সুপার ভিলেনের বদলে অ্যান্টি হিরো হিসেবে কল্পনা করলেই ভালো হবে। মুখে মাদক তুলে দেওয়ার আগে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন সিনেমার ক্যামেরার সামনে। সিনিয়র রবার্ট ডাউনি ছিলেন সিনেমার পরিচালক, নিজের বানানো ‘পাউন্ড’ (১৯৭০) সিনেমায় এক মিনিটের চরিত্রে সুযোগ দেন ছেলেকে। সিনেমায় তাঁর একমাত্র সংলাপ ছিল, ‘ডু ইউ হ্যাভ অ্যানি হেয়ার ইন ইয়োর বলস?’ ওটুকুই যথেষ্ট ছিল। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানো নয়। একসঙ্গে দুই নেশায় জড়িয়ে পড়ে ছোট্ট ডাউনি। এক মাদক, দুই অভিনয়। গভীর রাতে এই দুই নেশার একমাত্র দর্শক ছিলেন তাঁর বোন অ্যালিসন। মাদকে যখন পুরোপুরি ডুবে আছেন, তখনই শিখে ফেললেন ব্যালে নাচ, মাত্র ১০ বছর বয়সে!
মা এলসি অ্যানের অভিনয় ক্যারিয়ার আর রবার্ট ডাউনি সিনিয়রের সিনেমা। দুইয়ের মধ্যে এক হয়ে ছিল দুই ভাইবোন অ্যালিয়াস আর অ্যালিসন। কিন্তু তা–ও শেষ হয়ে গেল ১১ বছর বয়সে। মা-বাবার বিবাহবিচ্ছেদ দুই ভাইবোনকে সরিয়ে দিল চিরতরে। স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার বেদনায় সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে মদ্যপান করতেন ডাউনি সিনিয়র। ১৭ বছর বয়সে তাঁকে বের করে দেওয়া হয় স্কুল থেকে। বাবা তাঁকে ছেড়ে দিয়েছেন, সঙ্গী বলতে ওই এক মাদক। এ অবস্থায় এসে ভাবলেন, মাদক সেবন বাদে আর একটি জিনিসই তিনি পারেন, সেটা হলো অভিনয়!
বাবার নামের জোরে হলিউডপাড়ায় টুকটাক ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করে সময় কাটছিল। কিন্তু পাশার দান বদলে দিল ‘লেস দ্যান জিরো’ সিনেমার স্ক্রিপ্ট! সেখানে তাঁর চরিত্র ছিল জুলিয়ান ওয়েলস নামে এক তরুণের, যার পুরো জীবন কেটেছে মাদকে ডুবে। কোকেনে ডুবে থাকা ওয়েলসের চরিত্রে যেন জীবন্ত হয়ে উঠলেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। সিনেমা শেষ করার পর নিজের কাছেই উপলব্ধি করলেন, এই যে দর্শকের তালি পাচ্ছেন, তা তো অভিনয়ের জন্য নয়। এই জুলিয়ান ওয়েলস তো অন্য কেউ নন, এ তো তাঁর নিজের জীবনের কাহিনি। নিজের জীবনকে সিনেমার পর্দায় তুলে ধরেছেন, সিনেমার পর্দায় ছাড়তে পেরেছেন, তবে বাস্তবে কেন নয়?
১৯৮৯ সালে ‘দ্যাটস অ্যাডেকোয়েট’ নামের কমেডি সিনেমায় ফুটিয়ে তুললেন আলবার্ট আইনস্টাইনকে। তা দেখেই রিচার্ড অ্যাটেনবোরোর মন গলে গেল। এই ছেলেকেই তো এত দিন খুঁজছিলেন। এক বিশেষ চরিত্রের জন্য, কিন্তু সময় মিলছিল না কারও। চরিত্রে কাজ করার কথা ছিল জনি ডেপ, জিম ক্যারির মতো তারকার। কিন্তু ভাগ্যদেবী চরিত্রটি যে রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের জন্যই প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। চরিত্রের জন্য যখন প্রথম স্ক্রিপ্ট পেলেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে সাইন করে ফেললেন। ফেলবেন না কেন? কারণ সিনেমাটি ছিল চার্লি চ্যাপলিনের জীবনের ওপর তৈরি করা ‘চ্যাপলিন’। এরপর যখন স্ক্রিপ্ট পড়লেন, তখন আবার আকাশ থেকে পড়লেন। মনে হচ্ছে, আমাকে এক বিলিয়ন ডলারের লটারি দিয়ে জেল খাটানো হচ্ছে। কারণ সিনেমার চার্লি চ্যাপলিনের মতো হাঁটাচলা এমনকি স্ট্যান্ট—সব নিজেকে করতে হয়েছে।
অবশেষে ‘চ্যাপলিন’ মুক্তি পায়। তাঁর দুর্দান্ত অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক থেকে সমালোচক—সবাই। তবে ‘বাফটা’ ও লন্ডন ক্রিটিকসদের কাছ থেকে সেরা অভিনেতার পুরস্কার বাগিয়ে নেন। অস্কারে মনোনয়ন পেলেও জেতা হয়নি। নিজের তীক্ষ্ণ সেন্স অব হিউমার দিয়ে বলেছিলেন, ‘ব্যাপার না। একদিন না একদিন পাবই। বুড়ো হলেও একটি অস্কার দেওয়া হয় আজীবনের সম্মাননাস্বরূপ। বুড়ো তো হবই, সুতরাং অস্কার আমার হবে।’
অস্কারের মঞ্চে পরিচয় দেবোরাহ ফ্যালকোনারের সঙ্গে। তাঁকে বিয়ে করেন ডাউনি। তাঁদের এক সন্তানও হয়, নাম ইন্দিও ফ্যালকোনার। ঝামেলা তাঁর কাছে ছিল নিকট আত্মীয়ের মতো। ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল—এই কয়েক বছরে সম্ভবত জেল-আদালত-বাসা বাদে অন্য কোনো দিকে নজর দেওয়ার সময় পাননি। একবার জেলে যান, এরপর মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পাওয়া। এর কয়েক দিন পর আদালতে হাজিরা দেওয়া। আবার জেলে যাওয়া নতুন কোনো অভিযোগে। ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জ’ সিনেমার ইনফিনিটি টাইম লুপের মতো। চলতেই আছে, কোনো থামাথামি নেই। মায়ের স্নেহের অভাব বোধহয় খুব বাজেভাবে অনুভব করছিলেন। এই সময়ে মেয়েকে নিয়ে চলে যান স্ত্রী ফ্যালকোনারও।
বারবার প্রতিজ্ঞা করেও যেন বৃত্ত থেকে বের হতে পারছিলেন না। হলিউডপাড়াতেও তত দিনে খারাপভাবে তাঁর নাম ছড়িয়ে গেছে। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। না ছাড়তে পারছেন মাদক, না পারছেন মনোযোগ দিতে অভিনয়ে। কেউ সুযোগও দিচ্ছেন না। মাদকাসক্তি কাটাতে শুরু করলেন বিশেষ ধরনের মার্শাল আর্ট। বিপদ এগিয়ে এলেন অভিনেতা ও বন্ধু মেল গিবসন। সুযোগ দেন ‘দ্য সিঙ্গিং ডিটেকটিভ’ সিনেমায়। এই প্রতিদানে এখন বলেন, মেল গিবসন তাঁর কাছে একজন অভিনেতা, একজন বন্ধুর চেয়েও বেশি কিছু। মাদক থেকে বাঁচাতে যেন ত্রাতা হয়ে এলেন একজন। নাম তাঁর সুজান ডাউনি। সুজান তাঁদের বিয়ের সময় একটি শর্ত দিয়েছিলেন, আর জীবনে কখনো মাদক ধরা যাবে না! সেই শেষ! মাদকের সঙ্গে এত বছরের প্রেম শেষ করে প্রেম করা শুরু করলেন সুজান ডাউনির সঙ্গে। মাত্র ৪২ দিন প্রেম করে বিয়ে, সেই প্রেম চলছে এখনো। হলিউডপাড়ায় সেরা দম্পতির তালিকায় সুজান-রবার্ট নামটা ওপরের দিকেই থাকে।
বিয়ের পর বাকি রইল দুই—এক সুজান, দুই ক্যারিয়ার। ফলে ক্যারিয়ারের গ্রাফও আস্তে আস্তে ওপরের দিকে উঠতে থাকে। ‘কিস কিস ব্যাং ব্যাং’, ‘গুড নাইট’-এর মতো সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হয় তাঁর নাম। তবে সবচেয়ে কাঁপিয়ে দেওয়া অভিনয় করেন ‘জোডিয়াক’ সিনেমায়। গত শতকের সত্তর দশকে ঘটে যাওয়া সিরিয়াল কিলিংয়ের ওপর বানানো সিনেমায় জ্যাক গিলেনহ্যাল, মার্ক রাফেলো, অ্যান্থনি অ্যাডওয়ার্ডসের পাশে থেকেও আলো কেড়ে নেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। ‘পল অ্যাভেরি’ চরিত্রে ডাউনির অভিনয় চোখ রাঙিয়ে দেয় জন ফ্যাভ্রুয়ের।
মার্ভেলের অবস্থা তখন নড়বড়ে। নিজেদের সেরা সুপারহিরো ক্যারেক্টার ‘হাল্ক’, ‘স্পাইডার-ম্যান’, ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর’, ‘এক্স-ম্যান’ বিক্রি করে দিয়েছে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে। তবুও দেউলিয়া হওয়া থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারছিল না। শেষমেশ ধারদেনা করে একটি সিনেমা বানানোর কাজে হাত দেয় ‘মার্ভেল’। সিনেমার কাজ দেওয়া হলো ‘জঙ্গল বুক’–এর মতো সিনেমা বানানো জন ফ্যাভ্রুয়ের হাতে। মার্ভেল বলেছিল ব্র্যাড পিট কিংবা টম ক্রুজের কাছে যেতে। কিন্তু ‘টনি স্টার্ক’ চরিত্রের জন্য একজনকেই পছন্দ ছিল জন ফ্যাভ্রুয়ের। তাই মার্ভেলের সঙ্গে মোটামুটি যুদ্ধ করে সিনেমার পুরো স্ক্রিপ্ট না নিয়েই শুরু করলেন মার্ভেল ইউনিভার্সের।
‘এসি/ডিসি’ ব্যান্ডের ‘ব্যাক ইন ব্ল্যাক’ গান ব্যাকগ্রাউন্ডে, হাতে ওয়াইনের গ্লাস টলমল। সেই শুরু। একজন টনি স্টার্ক কিংবা রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের উত্থান! এ দৃশ্য দিয়ে শুরু টনি স্টার্ক কিংবা রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের উত্থান হয়নি। উত্থান হয়েছিল সিনেমা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ইউনিভার্সের। শুরুর শুটিংয়ের দিনও হয়তো কেউ ভাবেনি, ১২ বছর পর এখনো সমানভাবে সেই একই আগ্রহ থাকবে। কিন্তু টনি স্টার্ক চরিত্রে সঙ্গে একেবারে মিশে যান ডাউনি। একদিকে সনির ‘স্পাইডারম্যান’, অন্যদিকে ডিসির ‘ব্যাটম্যান’। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কমিক বুক সুপারহিরো এই দুজন। অন্যদিকে কমিক দুনিয়ার ‘বি-গ্রেড’ একটি চরিত্র ‘আয়রন ম্যান’। জন ফ্যাভ্রুয়ের হাতে অন্য চরিত্র বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু এই মাতাল, বিলিয়নিয়ার, সুপার জিনিয়াস স্টার্ককেই মনে ধরল তাঁর। লাইভ অ্যাকশন সুপারহিরো দুনিয়ায় নতুন করে আবির্ভূত হলেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র। স্পাইডারম্যান কিংবা ব্যাটম্যানের মতো পুরো শহর বাঁচানোর দায়িত্ব তার কাঁধে না। স্টার্ক ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক থেকে অপহৃত হওয়া এক বন্দী। গুহার ভেতরে বানিয়ে ফেলা এক আয়রন ম্যান স্যুট! এরপর নিজেকে আর বিশ্বকে রক্ষা করা। ছোট্ট করে এই ছিল টনি স্টার্কের সূচনা।
কিছুদিন আগে এই সিনেমার ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করা জেফ ব্রিজেস বলেছেন, ‘আমাদের কাছে পুরো স্ক্রিপ্ট কখনোই ছিল না। আমরা হাফ স্ক্রিপ্টে কাজ করতাম। আমরা অভিনয়ের মাঝেমধ্যেই নিজ থেকে ডায়লগ বলতাম, যেগুলো মুভিতে জায়গা পেয়েছে। এমনকি আমি, রব, জন মিলে মুভির কোন সিন শুট করা যায়, তা–ও ভেবে বের করতাম।’
গিনেথ প্যালট্রো আর জেফ ব্রিজেসকে নিয়ে শুরু করা মার্ভেল ইউনিভার্সে সিনেমা, লোক আর পয়সার অভাব নেই। শুধু আয়রন ম্যান থেকে টিম-আপ করেছেন বিশ্বের সব সুপারহিরোর সঙ্গে। ক্যাপ্টেন আমেরিকা, হাল্ক, থর, ব্ল্যাক উইডো, হক আই আর আয়রন ম্যান। সব মিলে ‘অ্যাভেঞ্জার্স’। এই চবির তিন পর্ব শেষে আসছে চতুর্থ পর্ব। টিম-আপ হয়ে গেছে গার্ডিয়ান্স, ডক্টর স্ট্রেঞ্জের সঙ্গে। নিজের ছত্রচ্ছায়ায় এনেছেন স্পাইডারম্যানকে। ২২ সিনেমা শেষে এখন এই কাহিনি এসে পৌঁছেছে ‘এন্ডগেম’–এ। মার্ভেলের বিশাল ‘ইনফিনিটি সাগা’র শেষ হবে এই ‘এন্ডগেম’ দিয়ে।
আয়রন ম্যান তো মাত্র শুরু! সঙ্গে সঙ্গেই স্ক্রিপ্টের পর স্ক্রিপ্ট জমা হতে লাগল। সুজানের কাজ পড়ল ডাউনির জন্য ভালো সিনেমা বের করা। এর মধ্যেই অভিনয় করলেন ‘ট্রপিক থান্ডার’ সিনেমায়। ২০১১ সালে সুযোগ পেলেন বইয়ের পাতা থেকে তুলে আনা আরেক চরিত্রে অভিনয়ের। স্যার আর্থার কোনান ডয়েল রচিত ‘শার্লক হোমস’! আলবার্ট আইনস্টাইন, চার্লি চ্যাপলিন, টনি স্টার্কের পর শার্লক হোমস—একটুও ঘাবড়ালেন না তিনি। বিলিয়নিয়ার প্লে বয় টনি থেকে ডিটেকটিভ শার্লক হতে এক মিনিটও যেন সময় লাগেনি তাঁর। পুরো চরিত্র যেন তাঁর জন্যই তৈরি। শার্লকের দুই পর্ব শেষ করে তৃতীয় পর্বের শুটিং করছেন এখন। এর আগে শার্লকের ক্যারেক্টরকে সিনেমা পর্দায় এত সুন্দরভাবে ফোটাতে পারেনি কেউই।
জাজ হ্যাঙ্ক প্যালমারের চরিত্রে ‘দ্য জাজ’ আর বন্ধু জন ফ্যাভ্রুয়ের ‘দ্য শেফ’ সিনেমায় অনবদ্য অভিনয় যে কাউকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। এ বাদে আর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি তাঁকে। মার্ভেল ইউনিভার্সের টনি স্টার্ক চরিত্রের কারণেই অন্যান্য সিনেমা থেকে তাঁর দূরে থাকা।
ব্যক্তিগত জীবনে একেবারেই অদ্ভুত রকমের একজন মানুষ তিনি। যেমন বিনয়ী, তেমনই সময় পেলে সহ-অভিনেতাদের পচাতেও পিছপা হন না। হলিউডপাড়ায় সেন্স অব হিউমারের দিক দিয়ে শীর্ষস্থানীয় ডাউনি। একসময় যিনি মাদকের পেছনেই সব ডলার উড়িয়ে দিতেন, সেই মানুষটা এখন বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতাদের একজন। এক আয়রন ম্যান চরিত্রে অভিনয় করেই তাঁর আয় প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। সামনে আসা ‘এন্ডগেম’ থেকে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিক নেবেন ডাউনি। নিজের ফ্যামিলি আর আয়রন ম্যান ছাড়া আর এখন কোনো চিন্তা নেই তাঁর মাথায়।
তাঁর জন্মই হয়েছিল ‘টনি স্টার্ক’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। এখন এটাই মনে করেন নিজে। নিজের নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ‘ডাউন’ শব্দটা। জীবনের শুরু থেকেই ডাউন হওয়া ডাউনির জীবনে এখন শুধুই ওপরের দিকে ওঠা। নিজের স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখী রবার্ট। জীবনে অনেক ঘাত–প্রতিঘাত যিনি দেখেছেন, মাদক এত বছরে যার চেহারাকে তেমন কিছুই করতে পারেনি। সেই মানুষটার জন্মদিন ছিল ৪ এপ্রিল। শুভ জন্মদিন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র।