ভিউ ব্যবসায়ীরা নাটক সিনেমার নতুন শত্রু: চঞ্চল চৌধুরী
চঞ্চল চৌধুরী শুটিং শুরু করেছেন ‘পাপ পুণ্য’ ছবির। দীর্ঘ ১২ বছর পর পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে কাজ করছেন। পাশাপাশি চলছে নিয়মিত টেলিভিশন নাটকের কাজ। সিনেমা, নাটক ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কথা বললেন তিনি।
প্রায় ১২ বছর পর সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করছেন...
সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ ‘এনেছি সূর্যের হাসি’ নামের একটি সিরিয়ালে। গুরুত্বপূর্ণ কোনো চরিত্রে সেবারই প্রথম অভিনয় করি। ২০০৫ সালের কথা। এরপর ২০০৭ পর্যন্ত তাঁর প্রায় সব প্রডাকশনেই কাজ করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে সিনেমার শুরু ২০০৭ সালে। ২০০৯ সালে ছবিটি মুক্তি পায়।
আপনার করা চরিত্রগুলো ব্যতিক্রমী। এই চরিত্র কেমন?
এটা তো এখন বলা যাবে না। সেলিম ভাই মাস তিনেক আগে চরিত্রটির কথা বললেন। ছবির গল্পটা শোনালেন। দুর্দান্ত গল্প। আগে যত চরিত্র আমি করেছি, সব চরিত্র থেকে এই চরিত্র একেবারে আলাদা। একটা চমক আছে। তা জানার জন্য ফার্স্ট লুক প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এ ধরনের চরিত্রে আমি আগে কখনো অভিনয় করিনি। আমরা আশাবাদী, মনপুরার চেয়েও ভালো কিছু হতে পারে।
পৃথিবীব্যাপী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের একটা আধিপত্য শুরু হয়েছে। আপনি কীভাবে দেখছেন?
এটা সময়ের দাবি। সময়ের প্রয়োজনে অনেক কিছুই আসবে। কিন্তু এটাকে কীভাবে ব্যবহার করবেন, এটা বোঝা জরুরি। ইউটিউবে অবাধ স্বাধীনতা আছে। যে কেউ ইচ্ছা করলেই যেকোনো কনটেন্ট দিতে পারে। সুতরাং এই জায়গাটা নষ্ট করার জন্য মানুষের অসৎ ইচ্ছাই যথেষ্ট। আর জায়গাটা আমরা নষ্ট করে ফেলেছি। আগে ইউটিউবে ভালো নাটক প্রকাশ করা হতো। এখন যাচ্ছেতাই নাটক আপ করা হচ্ছে। কিছু কিছু ইউটিউব চ্যানেলের লাখ লাখ সাবস্ক্রাইবার। সেখানে যেকোনো কিছু দিলেই লাখ লাখ ভিউ হয়। যার ইউটিউব চ্যানেল আছে, যা খুশি আপ করে দিচ্ছে। আবার বুস্টের মাধ্যমে মানহীন নাটকেরও লাখ লাখ ভিউ করানো হয়। তাতে দর্শক বিভ্রান্ত হয়। তারা ভাবে, এই নাটকের লাখ লাখ ভিউ, তার মানে এটা ভালো নাটক হতে পারে। এ রকম বেশি দিন হলে দেখা যাবে, সস্তা নাটকই স্ট্যান্ডার্ড মনে করবে দর্শকেরা।
নিম্নমানের কাজকে কৌশল করে কোটি কোটি ভিউ করা হয়। ওই ভিউকে বিক্রি করা হয়। একধরনের অসাধু এই ভিউ ব্যবসায়ী ভিউ–বাণিজ্য করছে। ভিউ ব্যবসায়ীরা নাটক–সিনেমার নতুন শত্রু। সস্তা কনটেন্ট দিয়ে এরা দর্শকের রুচি নষ্ট করছে। এখানে যেহেতু সেন্সরশিপ নেই, নিজেদের বিবেকের দায় থেকে সেন্সরশিপ দরকার। আমাদের মিডিয়ার অনেকেই এই বিবেকবর্জিত কাজ করছে। এর প্রভাব সমাজের ওপর, শিল্পের ওপর পড়ছে। আবার স্ট্রিমিং সাইটগুলো যেমন নেটফ্লিক্স, ওদের একটা মান আছে। যে ধরনের কনটেন্টে আমার দেশের সংস্কৃতিকে খুঁজে পাই, সে ধরনের কাজ করতে চাই আমি।
শেষ তিন প্রশ্ন
আনমনে চঞ্চল যে গানটি গেয়ে ওঠেন।
পুরানো সেই দিনের কথা।
কোন বাজে অভ্যাসটি ছাড়তে চেয়েও পারছেন না।
আমার তেমন কোনো বাজে অভ্যাস নেই।
ভবিষ্যতে কোন ভালো কাজটি করতে চান।
নিজের ক্যারিয়ারের জন্য অনেক কিছু করেছি। এখন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।