পাঁচ-ছয় বছর পরে বিয়ের চিন্তা
গতকাল ছিল প্রার্থনা ফারদিন দীঘির জন্মদিন। বন্ধুদের নিয়ে প্রথম ঢাকার বাইরে দিনটি উদ্যাপন করছেন তিনি। সর্বশেষ ‘মুজিব: একজন জাতির রূপকার’ ছবিতে কৈশোরের রেণু চরিত্রটি করে প্রশংসা পেয়েছেন দীঘি। এসব নানা প্রসঙ্গে গতকাল তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদন।
প্রশ্ন :
জন্মদিন কীভাবে কাটছে?
এবার একটু ভিন্নভাবে উদ্যাপন করছি। প্রতিবছরই বাসায় জন্মদিন উদ্যাপন করি। এবারই প্রথম বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকার বাইরে দিনটি উদ্যাপন করছি। বৃহস্পতিবার সকালে আমরা সাত-আটজন বন্ধু মিলে গাজীপুরে একটা রিসোর্টে এসেছি। এখানে অনেকগুলো কেক কাটলাম। হইচই করে আনন্দের মধ্য দিয়ে দিনটি যাচ্ছে।
প্রশ্ন :
জন্মদিনে বিশেষ কাউকে মনে পড়ে?
সব সময়ই মা আমার জন্মদিন উদ্যাপনের পরিকল্পনা করতেন। আমার বয়স যখন ১০, তখন মা মারা যান। এর পর থেকে যতবারই জন্মদিন এসেছে, মাকে বেশি মিস করেছি। যখন থেকে বুঝতে শিখেছি, আমার জন্মদিন নিয়ে মাকে বেশি এক্সসাইটেড দেখেছি। এখন বড় হয়েছি। মা বেঁচে থাকলে আমার জন্মদিন নিয়ে তাঁর কেমন অনুভূতি হতো, এই বিষয়টি খুব মনে হয়।
প্রশ্ন :
ছোটবেলায় মডেল হিসেবে আলোচিত হয়েছিলেন। সেই সময় আপনাকে নিয়ে মা-বাবার কী ইচ্ছা ছিল?
আমার প্রায়ই ইচ্ছা হতো চিকিৎসক হব। মা যখন অসুস্থ হতেন, তখন মাকে বলতাম, আমি বড় হয়ে চিকিৎসক হয়ে তোমার চিকিৎসা করব। আস্তে আস্তে একটু বড় হলাম। শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় ও মডেলিং শুরু করলাম। তখন মা সবার কাছে বলতেন, ‘আমি ওর ইচ্ছা পূরণ করব, আবার মাঝেমধ্যে টুকটাক সিনেমা, মডেলিং করাব। তবে পেশা হবে চিকিৎসক।’ একটা সময় মা মারা গেলেন। এরপর আর চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা হয়নি। কারণ, চিকিৎসক হওয়ার মূল কারণই ছিল মাকে সেবা দেওয়া, মা-ই যখন নেই, চিকিৎসক হয়ে আর কী হবে। মা চাইতেন আমি সিনেমা করি, আমিও সিনেমাকে ভালোবাসি, তাই সিনেমায় আসা।
প্রশ্ন :
অনেক সময় বলেন, আপনাকে নাকি দর্শকেরা ভুল বোঝেন। কেন বলেন এটি?
অনেক সময় দেখা যায়, একটা কথা একভাবে বললাম, উপস্থাপন হয়ে যাচ্ছে একটু অন্যভাবে। এসব কারণে দর্শকেরা অনেক সময় ভুল বোঝেন আমাকে। যেমন আমার প্রথম ছবি ‘তুমি আছো, তুমি নেই’ নিয়েও ভুল বুঝেছেন দর্শকেরা। ভুল-ঠিক মিলিয়েই কিন্তু মানুষের জীবন। আমি যে পথে হাঁটছি, দিন শেষ সাফল্য এলে ভাবব, ঠিকপথেই আছি আমি।
প্রশ্ন :
দীঘি ছোটবেলায় বেশি জনপ্রিয় ছিল, নাকি এখন?
দীঘি সেই ছোটবেলা থেকে এখনো জনপ্রিয়—কোনো পরিবর্তন হয়নি। জনপ্রিয়তার ব্যাপারটি পরিমাপ করা কঠিন। কারণ, ছোটবেলাতেই যত মানুষ আমাকে চিনেছেন, এখনো চেনেন। আগে ‘ময়না পাখিটা’ সংলাপ যেমন মুখে মুখে ছিল, এখন ‘মুজিব: একজন জাতির রূপকার’ ছবিতে কৈশোরের রেণুর কথা সবার মুখে মুখে।আপনার প্রেম নিয়ে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল।
প্রশ্ন :
আপনার প্রেম নিয়ে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল।
প্রেমের ঘটনা সত্য নয়। এটি ছিল শুধুই রটনা। নায়িকাদের আসলে ঘটনা ঘটা লাগে না, এমনিতেই গুজব ছড়ায়। তবে মিডিয়াতে অনেকে প্রেম করেও অস্বীকার করেন। যখন খবরটির সত্যতা প্রকাশ্যে আসে, তখন অন্যদের প্রেমের সত্যিকারের গুজবও বিশ্বাস করেন না দর্শক। এসব কারণেই আমরা প্রেম না করেও ফাঁসি। হা হা হা...।
প্রশ্ন :
প্রেমের বিয়ে, নাকি পরিবারের পছন্দের বিয়ে করবেন?
যখন হবে, তখন এটি দেখা যাবে। পাঁচ-ছয় বছর পরে বিয়ের চিন্তা। তবে এর মধ্যে যদি প্রেম হয়, তাহলে প্রেমের বিয়ে হতে পারে। আর না হলে পারিবারিক পছন্দেই বিয়ে করে ফেলতে পারি। এ জীবনে এখনো কারও প্রেমে পড়িনি। অনেকে প্রেমে পড়তে চেয়েছেন কিন্তু সাড়া দিতে পারিনি, এটি আমার ব্যর্থতা বলতে পারেন।
প্রশ্ন :
‘মুজিব: একজন জাতির রূপকার’ ছবিতে রেণু চরিত্রটিতে অভিনয় করে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
আমার চরিত্রের দৃশ্য সিনেমায় খুব বেশি নেই। যতটুকু করেছি, সবাই প্রশংসা করেছেন। কমবেশি সবাই বলেছেন, আমাকে নাকি চরিত্রটিতে মিষ্টি লেগেছে। শান্তনু মৈত্রীর কাছে গিয়ে আমি নিজের পরিচয় দিচ্ছিলাম, তখন তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আমি আপনাকে চিনি, আপনি ছোট রেণু চরিত্র করেছেন।’ এটি আমার অবাক লেগেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছবিটি দেখে আমাকে বলেছেন, ‘আমার ছোট রেণু অনেক মিষ্টি ছিল, তুমি ওই রকমই মিষ্টি।’ এক জীবনে এই চরিত্র আমার জন্য আর্কাইভ হয়ে থাকবে।