সেই দিনের কথা মনে হলে এখনো ট্রমা হয়: ফারিণ

সপ্তাহখানেক আগে এক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন । এখন অনেকটাই সুস্থ। শিগগিরই শুটিংয়ে ফিরবেন। এ ছাড়া ২২ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে কারাগার-এর দ্বিতীয় কিস্তি। এসব নিয়েই ‘বিনোদন’–এর সঙ্গে কথা বললেন অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ।

তাসনিয়া ফারিণ

প্রশ্ন :

এখন কেমন আছেন?

অনেকটাই ভালো। পুরোপুরি বিশ্রামে আছি। ক্ষতগুলো প্রায় শুকিয়ে এসেছে। ব্যান্ডেজ খুলে ফেলেছি। এই কদিন একেবারেই বিছানাবন্দী। ঘরের বাইরে বের হইনি। সেই দিনের কথা মনে হলে এখনো ট্রমা হয়। এটা কাটাতে তাড়াতাড়ি কাজে ফিরতে চাই।

প্রশ্ন :

কবে নাগাদ কাজে ফেরার ইচ্ছা?

দুর্ঘটনার কারণে বেশ কিছু কাজ ছেড়ে দিয়েছি। আমি চাইনি আমার কারণে কাজগুলো আটকে থাক। পরিচালক-প্রযোজকদের ভোগান্তি হোক। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারব। ১৫ ডিসেম্বর (আজ) একটি বিজ্ঞাপনের শুটিং দিয়ে শুরু করব। ভ্যালেন্টাইনের জন্য ভিকি জাহেদের একটি কাজের শিডিউলও দেওয়া আছে।

প্রশ্ন :

শুনলাম নতুন একটি ওয়েব ফিল্মে কাজ করতে যাচ্ছেন?

হ্যাঁ, ২০ ডিসেম্বর থেকে শুটিং শুরুর কথা। নাম নিকষিত। এটি পরিচালনা করবেন রুবেল হাসান। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘দীপ্ত প্লে’র জন্য তৈরি হচ্ছে। নারীকেন্দ্রিক গল্প। ঢাকায় দু-এক দিন শুটিং হবে। বেশির ভাগ শুটিং হবে সুন্দরবন ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন লোকেশনে। শরীরের এই অবস্থা নিয়ে ঢাকার বাইরে শুটিং নিয়ে কিছুটা চিন্তায় আছি। সুস্থ হয়ে উঠলেও আউটডোরের শুটিং কতটা সহজ হবে, বুঝতে পারছি না।

তাসনিয়া ফারিণ
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

বছরখানেক ধরে নাটক, টেলিছবির চেয়ে ওটিটির কাজেই বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে...

এটা সত্য। কারণও আছে। গত বছর থেকে ওটিটির কাজ শুরু করেছি। প্রথম কাজ লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলমেন। এরপর নেটওয়ার্কের বাইরে, নিশ্বাস, কারাগার করেছি। করপোরেট অফিস বলেন, শপিং মল বলেন বা দেশের বাইরে—ওটিটির কাজগুলোরই বেশি প্রতিক্রিয়া পাই। আগে আমি এই শ্রেণির দর্শকের প্রতিক্রিয়া পাইনি। তা ছাড়া ওটিটিতে গল্প বলার স্বাধীনতা আছে, চরিত্রগুলোতে কাজের সুযোগ আছে, বাজেট বেশি। ফলে কাজ করে আরাম পাই। মোট কথা এসব কাজের আর্কাইভ ভ্যালু আছে। ওটিটির কাজের জন্যই আরও এক পৃথিবী সিনেমাটির প্রস্তাব পেয়েছিলাম।

‘কারাগার’-এ তাসনিয়া ফারিণ

প্রশ্ন :

তাহলে কি নাটকে আপনাকে আর দেখা যাবে না?

অবশ্যই দেখা যাবে। একটা সময় পরিচিতির জন্য টানা নাটকে কাজ করেছি। নাটকে আমার ভালো-মন্দ কাজ আছে। তবে এখন আর প্রচুর নাটক করতে চাচ্ছি না। বেছে বেছে গল্প, চরিত্র দেখে কাজ করছি, করব। যে কাজগুলো দর্শকের মনে দাগ কাটতে পারবে, নাটকে সে ধরনের কাজ করার চেষ্টা করছি। তবে এখন আমার  প্রথম পছন্দ ওটিটি।

প্রশ্ন :

২০১৯–এর শেষ থেকে ২০২২। মাত্র তিন বছরেই জনপ্রিয়তা। কীভাবে সম্ভব হয়েছে?

দেখুন, তালিকার শীর্ষে থাকতে হবে বা এক নম্বর অভিনেতা হতে হবে—এটা আমি বিশ্বাস করি না।  শুধু আমার কাজটুকুই ভালোভাবে, মন দিয়ে করার চেষ্টা করেছি, করি। এই চেষ্টাটা হয়তো দর্শকের ভালো লেগেছে। আমার নিজস্বতা, স্বকীয়তা থেকে কাজ করে দর্শকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে পেরেছি। ফলে কম সময়েই দর্শকের মাঝে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে এ কারণে আমার ওপর একটা চাপও তৈরি করেছে। কারণ, অবস্থান ধরে রাখাও চ্যালেঞ্জের বিষয়।

৯ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে ফারিণের প্রথম ছবি ‘আরও এক পৃথিবী’র ট্রেলার

প্রশ্ন :

‘কারাগার’–এর প্রথম কিস্তি দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছে। দ্বিতীয়টি নিয়ে প্রত্যাশা কী?

আমার কাছে মনে হয়েছে দ্বিতীয়টি আরও বেশি রহস্যময়, বেশি আকর্ষণীয় হবে দর্শকের কাছে। আরও বেশি চমক দেবে। দ্বিতীয় কিস্তির ট্রেলারের দর্শক প্রতিক্রিয়ায় সেটা আঁচ করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কথা, এর গল্প আমাকে বেশি আকৃষ্ট করেছে। এ ধরনের কাজ আগে দেখিনি, করিওনি। একেবারে নতুন গল্পের কনটেন্ট। তবে মানুষের জীবনের সঙ্গে গল্পটি সম্পৃক্ত। পরিচালক (সৈয়দ আহমেদ) শাওকী ভাইয়ের টিমের সঙ্গে কাজের রসায়নটাও ভালো ছিল। আফজাল (হোসেন) ভাই, চঞ্চল (চৌধুরী) ভাইদের মতো ভালো ভালো সহশিল্পীর সঙ্গে কাজের সুযোগ হয়েছে। এ কাজটি ভালো হওয়ার পেছনে আরেকটি কারণ মনে হয়েছে, শুটিংয়ে শিল্পীদের নির্ভার রেখে কাজটি করিয়ে নিয়েছে পরিচালকের টিম।

প্রশ্ন :

কলকাতায় আপনার প্রথম সিনেমা ‘আরও এক পৃথিবী’ ২ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। পেছাল কেন?

বিশ্বকাপ খেলা তো একটা ব্যাপার আছেই, তা ছাড়া সময়মতো ভারতের ভিসাও পাইনি। যেহেতু আমার প্রথম সিনেমা, তাই ছবির প্রযোজক-পরিচালক চেয়েছিলেন একটা বড়  আয়োজন করে সবার সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবেন। সেখান থেকেই ছবিটির প্রচার শুরু হওয়ার কথা ছিল। প্রচারের একটা সূচিও তৈরি আছে। কিন্তু ভিসা জটিলতায় যেতে পারিনি। এখন শুনছি, আগামী ফেব্রুয়ারিতে মুক্তির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

লন্ডনে তাসনিয়া ফারিণ
সংগৃহীত

প্রশ্ন :

শোনা যাচ্ছে, কলকাতার আরও কিছু ছবিতে কাজের প্রস্তাব পেয়েছেন?

প্রথম ছবির কাজ শেষ করার পরপরই কলকাতার আরও বেশ কিছু সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছি। কয়েকটি ছবির গল্প ও চরিত্র আমার ভালো লাগেনি। দু-একটি ছবির ব্যাপারে এখনো ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছুই বলিনি। ভিন্নধারা বা মূলধারা—কোনো সিনেমাতেই আমার সমস্যা নেই। তবে অবশ্যই আমার চরিত্রের গভীরতা থাকতে হবে, কাজের সুযোগ থাকতে হবে। এবার গিয়ে সিনেমা নিয়ে অনেকগুলো মিটিং আছে কলকাতায়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন
আরও পড়ুন