কোনো দিন ভিউর কথা চিন্তা করে কাজ করিনি: তটিনী
ভালোবাসা দিবস ও ঈদের নাটকে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নতুন প্রজন্মের অভিনয়শিল্পী তানজিম সাইয়ারা। বিনোদন অঙ্গনে সবাই তাঁকে তটিনী নামেই চেনেন বেশি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন বিমানবন্দরে। যাচ্ছিলেন রাজশাহীতে নতুন নাটকের শুটিংয়ে।
প্রশ্ন :
ফেসবুকে নতুন নাটক ‘মিস ম্যাচ’-এর পোস্টার শেয়ার করলেন। কাজটি করার অভিজ্ঞতা কেমন?
রোমান্টিক ধাঁচের গল্প। কিন্তু এটা তারিক আনাম খান আঙ্কেলের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ। কাজ করে মনে হয়েছে, তিনি অসাধারণ একজন ব্যক্তিত্ব। তাঁর সঙ্গে কাজ করলে আসলে অনেক কিছু শেখা যায়। তাঁর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করা, তাঁর অভিনয় দেখাটাও আমরা যাঁরা নতুন, তাঁদের জন্য খুব দরকারি।
প্রশ্ন :
কী কী শিখলেন?
সবচেয়ে ভালো লেগেছে, তিনি সেটে অনেক সময় দেন। অধৈর্য হন না। বলেন না, আমাকে এই সময়ে চলে যেতে হবে। মনে আছে, একদিন রাত তিনটা-চারটা পর্যন্ত শুটিং ছিল, তিনি শেষ পর্যন্ত একই প্রাণশক্তি নিয়ে শুটিং করেছেন। আমাদের শুটিং ইউনিটে অন্য কেউ কেউ অধৈর্য হলে তারিক আঙ্কেল উৎসাহ জুগিয়েছেন। রাত তিনটা-চারটা তাতে কী, পুরো সময় আনন্দ নিয়ে কাজ করেছি। এ রকম আন্তরিকতা নিয়ে এখন পর্যন্ত করছেন, যা আমার চোখে দুর্লভ মনে হয়েছে।
প্রশ্ন :
ভালোবাসা দিবসে আর কী থাকবে?
বেশ কিছু কাজ আসবে। সম্প্রতি শুটিং শেষ করেছি জাকারিয়া সৌখিনের ‘পথে হলো দেরী’। এর বাইরে ওটিটির একটা কাজ করেছি সৈয়দ শাকিল ভাইয়ের। ওটিটিতে এটি আমার দ্বিতীয় কাজ, প্রথমটা ছিল চরকির। এর বাইরেও কয়েকটি নাটক প্রচারিত হবে।
প্রশ্ন :
এবার তো ঈদের কাজ আগে থেকেই হচ্ছে, আপনি কী কী কাজ করলেন?
বেশ কিছু কাজ করেছি। এখান থেকে হয়তো কিছু ঈদে যাবে। সামনেও কিছু আছে। গতবারের চেয়ে এবার কাজ বেশি করতে হচ্ছে। কারণ, গতবার ঈদের এক-দেড় মাস আগে কাজ করা শুরু করেছি। অবশ্য তখন এত কাজ করতামও না। চলতি বছর অনেক আগে থেকেই করছি, তাই আগের চেয়ে সংখ্যায় বেশি থাকবে।
প্রশ্ন :
শুধু সংখ্যায় বেশি থাকবে, নাকি মানেও?
আশা করছি মানসম্পন্ন নাটকের সংখ্যাটা বেশি থাকবে। যেহেতু অনেক আগে কাজ শুরু করেছি, বুঝেশুনে গল্প বাছাই করেছি, তাই মানটা বেশি ভালো থাকবে আশা করছি।
প্রশ্ন :
কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আপনি কোন পদ্ধতি মেনে চলেন।
প্রথমে গল্প পড়ি, তাই গল্পটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একটা নির্দিষ্ট মানদণ্ডের নিচে নেমে কাজ করে আমিও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করব না। তারপর পরিচালক ও সহশিল্পী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দিন শেষে গল্প ভালো হলেও পরিচালক ও সহশিল্পী যদি ভালো না হন, কাজটা ভালো হওয়া খুবই কঠিন।
প্রশ্ন :
ভিউ নির্ভর আর মানসম্পন্ন কাজের মধ্যে ভারসাম্য রেখে কাজ করা কতটা চ্যালেঞ্জের মনে করেন?
এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। ভিউ ভেবে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের আলাদা কোনো হিসাব থাকে হয়তো। আমি কোনো দিন ভিউর কথা চিন্তা করে কাজ করিনি। তাই এটা নিয়ে বলাটা আমার জন্য মুশকিল। ভিউ তো খুব সহজে পাওয়া যায়। তা ছাড়া আমার কাজের ভিউ তো এত হয় না, তাই আমি জানিও না আসলে। বেশি ভিউ হলে তখন হয়তো বলতে পারতাম।
প্রশ্ন :
ফেসবুকে পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে ছবি শেয়ার করলেন, তাঁর সঙ্গে নতুন কী কাজ করলেন?
একটা বিজ্ঞাপনের কাজ করলাম। আশা করছি ফারুকী ভাইয়ের সঙ্গে সামনে নতুন কাজ হবে। কথা চলছে, চূড়ান্ত না হলে বলা উচিত নয়। প্রথম কাজ বিজ্ঞাপনচিত্র হলেও অভিজ্ঞতা দারুণ। মনে হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কাজ করলে শেখার একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া যায়।
প্রশ্ন :
কাজ দেখে ভালো লেগেছে, এমন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করছেন।
ব্যক্তিগতভাবে অমিতাভ রেজা ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করা আমার খুব ইচ্ছা। ফারুকী ভাইয়ের সঙ্গে ফিকশনে খুব আগ্রহ। আমার মনে হয়, তাঁর স্পেশালিটি এই ফিকশন দিয়েই। পিপলু আর খান ভাইয়ের সঙ্গে কাজ হয়েছে, তিনি আমার খুব পছন্দের একজন পরিচালক। শিহাব শাহীন ভাইয়ের সঙ্গেও কাজ করার ভীষণ ইচ্ছা।
প্রশ্ন :
আপনার অভিনয়জীবন তো অল্প দিনের, এটাকে সামনে এগিয়ে নিতে বা অভিনয়ের আরও উন্নতির জন্য কী করেন।
এক বছর ধরে আমি নিয়মিত কাজ করছি। আমি কাজ খুব উপভোগ করছি। কাজ করে যেতে চাই। অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে চাই। শুরু থেকে কাজের প্রতি সৎ থাকার চেষ্টা করছি। শিখতে চাই সব সময়। আমার খুব ভালো লাগে, যখন সহশিল্পী বা পরিচালকেরা ভুল ধরিয়ে দেন। অনেকে এটা ভালোভাবে নেন না, কিন্তু আমার জন্য বেশ ভালো মনে করি। ভুলটাকে সংশোধন করে দীর্ঘ সময় টিকে থাকার পথে হাঁটতে চাই। এ ছাড়া সময় যখন পাই, তখন মুভি দেখি। আমার ব্যক্তিগত পছন্দ পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, তারপর স্বস্তিকা মুখার্জি—তাঁদের কাজ কমবেশি দেখা আমার। দেশের মধ্যে জয়া আহসান আপা ও চঞ্চল ভাই—এঁদের কাজ দেখা কখনোই মিস করি না। যেভাবে হোক দেখে নিই। শিখতে পারি।
প্রশ্ন :
জুটি হিসেবে তো বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কাজ করলেন, আপনার সঙ্গে পর্দায় কার রসায়ন বেশি পছন্দ করেছেন দর্শকেরা বলে মনে করছেন?
সত্যি বলতে মানুষ পছন্দ করেন ইয়াশ রোহান ভাইয়ার সঙ্গে। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে অপূর্ব ভাইয়ার সঙ্গে কাজ করে খুব মজা লাগে। আমি বলছি না, অন্যদের সঙ্গে কাজ করে ভালো লাগে না। আমাদের কয়েকটি কাজ দর্শক পছন্দও করেছেন। আনুপাতিক হারে অন্যদের সঙ্গে আমার কম কাজ হয়েছে।
প্রশ্ন :
আপনার অভিনীত পাঁচটি নাটকের নাম যদি কেউ জানতে চাই, কোনগুলোর কথা বলবেন?
‘পথে হলো পরিচয়’, ‘সময় সব জানে’, ‘শেষ ঘুম’, ‘প্রণয়’ ও ‘লাস্ট নাইট’।