‘প্রতিধ্বনি’ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
সুদীপ দীপ : এককথায় দারুণ। ভাবতেও পারিনি, এভাবে সবাই ইতিবাচক কথা বলবেন। যাঁরাই দেখেছেন এবং ফেসবুকে মতামত দিয়েছেন, তাতে দেখছি—আমার লুক, ভিন্ন রকম উপস্থাপন নিয়ে বেশি কথা হচ্ছে। এতে আমি একজন লেখকের চরিত্রে অভিনয় করেছি। সাধারণত লেখকের চরিত্র তো আলাদা হয়, তাই সবাই নোটিশ করেছে। অভিনয় নিয়েও কেউ কেউ কথা বলেছে। মুক্তির আগে তো প্রকাশিত পোস্টার নিয়েও কথা বলেছে।
‘প্রতিধ্বনি’ তো হরর ধরনের কনটেন্ট। দেশে গত কয়েক মাসে এ ধরনের বেশ কয়েকটি কনটেন্ট এসেছে। কোনটা দেখেছেন?
সুদীপ দীপ : আমি তো হরর কনটেন্ট খুব ভালোবাসি। হরর কনটেন্ট বাতি জ্বালিয়ে দেখি। দিনের বেলাতেই বেশি দেখার চেষ্টা করি। কারণ, ভয় লাগে। আবার যেহেতু ভালোও লাগে, তাই দেখাও বাদ দিতে পারি না। সম্প্রতি আমার দেখা হলিউডের একটা হরর সিনেমার কথা বলব, নাম দ্য সাবস্ট্যান্স। এটা দেখার পর খুব ভালো লেগেছে। অদ্ভুত সুন্দর।
প্রথম আলো :
‘ময়ূরাক্ষী’র পর নতুন সিনেমার খবর পাওয়া যায়নি।
সুদীপ দীপ : আমি আসলে কাজ করতে চাই, কিন্তু যে পরিমাণে সুযোগ পাওয়ার কথা, ওই পরিমাণ ভালো সুযোগ পাইনি। আমি কিন্তু সবাইকে বলেছিও, আমি কাজ করতে চাই। তারপরও জানি না কেন হচ্ছে না। তবে একটা দারুণ ফিল্ম নিয়ে কথাবার্তা চলছে, কিছুদিনের মধ্যে হয়তো চূড়ান্ত হবে। একটা জিনিস দুঃখজনক, এইচবিওতে কাজ করার পরও যদি ভালো কাজের প্রস্তাব না পাই, তাহলে তো অসহায়ত্ব প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। আমি মনে করি, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দেওয়া, সুযোগ তৈরি করে দেওয়া তো ইন্ডাস্ট্রি থেকেও লাগে। সেটা না পেলে তো দুঃখ লাগে। তবে এটাও ঠিক, পেশাগত জায়গায় অভিযোগ করার কোনো সুযোগ নেই। এখানে প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। যুদ্ধ করতে হবে। কাজ করে যেতে হবে। আবার এটাও ঠিক, আমাকে যে ধরনের চরিত্রে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সবই গতানুগতিক। তাই ভাবছি।
একবার বলেছিলেন, সিনেমায় বেশি মনোযোগী হবেন।
সুদীপ দীপ : পুরোপুরি ফিল্মে মনোযোগী ছিলাম। পরে মনে হলো, না, এখন সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে। শুধু দুই ঈদের সিনেমা দিয়ে একটা ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াতে পারে না। অন্য সময় সিনেমা মুক্তি দিয়ে কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে সারভাইভ করতে পারব না। এ-ও মনে হয়েছে, আপনি যত বড় তারকাই হন না কেন, এ মুহূর্তে শাকিব খান বাদে কারোরই আসলে কোনো ভ্যালু নেই। কারও ছবিই সেভাবে চলে না। এটা বাস্তবতা। যদি কনটেন্ট ভালো না হয়, দর্শক তো প্রেক্ষাগৃহে যাবে না। এটা হচ্ছে এই সময়ের বাস্তবতা। এটা আমার পেশা। তাই ভুলভাল কোনো কাজ করা যাবে না। পাঁচ বছর পর যদি আমার অবস্থান ভালো হয়, তাহলে হয়তো আবার চেষ্টা করব। এখন তাই নাটকেও অভিনয় করছি। মন দিয়ে নাটক করছি। নিয়মিতই করছি। শুধু সিনেমায় অভিনয় দিয়ে বেঁচে থাকা খুবই কঠিন। পরের মাসে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের একটা প্রজেক্ট আসবে, চরকির জন্য বানানো হয়েছে। খুবই ভালো কনটেন্ট, নাম পারফেক্ট ওয়াইফ। নিয়মিত নাটক করছি। একটা বড় প্রজেক্টের কথাবার্তা চলছে, সব ঠিকঠাক হলে ভালো কিছুই যোগ হবে আমার জীবনে। এদিকে ভালোবাসা দিবসের কয়েকটি নাটকের শুটিং শেষ করেছি। ঈদুল ফিতরেরও প্রস্তুতি চলছে।
ফেসবুকে দেখলাম, পুরোনো নাটকের লিংক শেয়ার করছেন...
সুদীপ দীপ : ‘প্রতিধ্বনি’ তো হরর ধাঁচের একটি কনটেন্ট। এর আগে একই জনরার আরেকটিতে অভিনয় করেছি। ভাবলাম, প্রতিধ্বনি যেহেতু দর্শকেরা পছন্দ করেছেন, নক নিয়েও কথা হোক। ওটাও যাঁরা দেখেননি, তাঁরা দেখুন। তাই এটা নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করা। সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া আরকি। পরে দেখলাম, কয়েকজন নক দেখেও তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
প্রাচ্যনাটের সঙ্গে মঞ্চে কাজ করেছেন। এরপর নাটক, সিনেমা। কোনো আক্ষেপের জায়গা আছে কি?
সুদীপ দীপ : আক্ষেপের জায়গা নেই। কারণ, ক্যারিয়ার তো শেষ হয়ে যায়নি। ক্যারিয়ার শেষ হলে হয়তো আক্ষেপ থাকত। আমি বিশ্বাস করি, সামনে হয়তো বড় কিছু ঘটবে। তবে এ ভাবনা প্রায়ই আসে, এইচবিওর মতো প্ল্যাটফর্মে কাজ করার পর আমার আরও ভালো কাজ পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু পাইনি। তবে আমি মনে করি যে অনেক পরিণত হচ্ছি।
প্রথম আলো :
আপনি তো চারুকলায় পড়েছেন...
সুদীপ দীপ : ২০১৪ সালে পড়াশোনা শেষ করেছি। তবে অভিনয়ের বাইরে মাঝেমধ্যে টুকটাক আঁকাআঁকি করি। দেখা যায়, ছয় মাস আঁকাআঁকি করি, এরপর আবার অনেক সময় পর নতুন করে শুরু করি। প্রদর্শনী করা বা ওই ধরনের কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। তবে নেওয়ার ইচ্ছা আছে। এটাও ঠিক, একসঙ্গে দুটি করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। তারপরও নিজের মনের মতো করে আঁকছি।