দীঘির কি কোনো ‘প্রিয় প্রাক্তন’ আছে, জবাবে যা বললেন অভিনেত্রী

অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেই রাজি হয়ে যান না। গল্প মনের মতো হলে তবেই সবুজসংকেত দেন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। প্রিয় প্রাক্তন-এও সেই বিবেচনা থেকেই অভিনয় করেছেন। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে মুক্তি পাওয়া স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নিয়ে আলাপের সূত্র ধরে ক্যারিয়ারের নানা বিষয় নিয়ে ‘বিনোদন’–এর সঙ্গে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রেজওয়ান সিদ্দিকী

প্রথম আলো :

‘প্রিয় প্রাক্তন’ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: হুট করেই এটি মুক্তি পেয়েছে। তা ছাড়া কম প্রচারণা হয়েছে। তাই ধরে নিয়েছিলাম, মানুষের কাছে হয়তো দেরি করে পৌঁছাবে। কিন্তু না, খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। অনলাইনে পজিটিভ লেখালেখি হচ্ছে।

প্রথম আলো :

আপনার কি কোনো ‘প্রিয় প্রাক্তন’ আছে?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: আমার মনে হয়, প্রাক্তন কেউ ওভাবে প্রিয় হয় না। মুহূর্তগুলো প্রিয় হয়। তবে আমার আসলে কিছু নেই।

প্রথম আলো:

ওয়েব কনটেন্টেই কি বেশি মনোযোগ এখন?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: তেমনটা নয়। যখন কাজের প্রস্তাব আসে, গল্পটা শুনি। পছন্দ হলে অভিনয় করি। সেটা সিনেমা হোক কিংবা ওটিটি।

প্রথম আলো:

সিনেমার সংখ্যা কম কেন?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: কারণ, অনেক বেছে কাজ করি। চাইলে তো অনেক সিনেমাই করতে পারি। এমন সিনেমা বা চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, মারা যাওয়ার পরও যা দর্শকের মনে থাকবে।

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি
শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

কিন্তু আপনি যে সিনেমাগুলো করেছেন, তা কি মনে রাখার মতো?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: বিশ্বাস করুন, কোনো না কোনোভাবে মানুষ মনে রেখেছেন। কাজ নিয়ে কখনো আমি রিগ্রেট করি না। তবে আমি শিক্ষা হিসেবে নিই।

প্রথম আলো :

কাজ নিয়ে এত ব্যস্ত। পড়াশোনার কী অবস্থা?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: আমি মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজমে পড়ছি। এটা সাংবাদিকতার পাশাপাশি আমাকে মিডিয়া–সম্পর্কিত অনেক কিছু শেখাচ্ছে। এ বিষয়ে পড়ার উদ্দেশ্য হলো, মিডিয়া বিষয়ে আরও জানতে চাই। কী কী টার্ম আছে, সেগুলো শিখতে চাই। যেহেতু এখানেই ক্যারিয়ার, ভবিষ্যতে কোনো একদিন বিহাইন্ড দ্য ক্যামেরায় কাজ করব। কিন্তু সাংবাদিকতা আগে থেকেই ভালো লাগে। এটা নিয়ে পড়তেও ভালো লাগে। আমি অনেক কিছু শিখি। তখন বুঝতে পারি, কোনটা ঠিক হচ্ছে আর কোনটা হচ্ছে না।

প্রথম আলো:

সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নিলে কার সাক্ষাৎকার নিতে চান?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: শাহরুখ খানের সাক্ষাৎকার নিতে চাইব। কারণ, তাঁর উত্তর শুনতে আমার এত ভালো লাগে...! একটা মানুষ এতটা ইন্টেলিজেন্ট কীভাবে হন যে মনে হয়, আমি তাঁকে কোনোভাবে (প্রশ্ন করে) কিছু করতে পারব না। সব উত্তর প্রস্তুত থাকবে। তাঁর উত্তর শোনার জন্য সাক্ষাৎকার নিতে ইচ্ছা করে। যদি বাংলাদেশের বলি, তাহলে অবশ্যই শাকিব খান। তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়া অনেক বড় ব্যাপার।

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি
শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

শিশুশিল্পী হিসেবে দর্শকের যতটা ভালোবাসা পেয়েছেন, নায়িকা হওয়ার পর কি তা ধরে রাখতে পেরেছেন?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: অবশ্যই পেরেছি। এ জন্যই মানুষ হয়তোবা দীঘিকে বেশি চেনেন। ছোটবেলায় আমার প্রতি তাঁদের যে ভালোবাসা ছিল, এখন পর্যন্ত আছে। ঢাকা থেকে যখন দূরে কোনো গ্রামে যাই, ওখানে আমাকে বয়স্করা যেভাবে ভালোবাসেন, নিজের মেয়ে কিংবা মা বলেন, এতে এতটুকু নিশ্চিত যে মানুষ আমাকে ভালোবাসেন অনেক। সুতরাং ওই ভালোবাসা থেকে দীঘিকে মনে রাখেন। নতুন কাজ এলে সেটা দেখেন।

প্রথম আলো:

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সমালোচনা কীভাবে সামলান?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: সমালোচনায় কখনো কান দিই না। তবে যদি সামনে পড়ে যায়, তাহলে শোনা উচিত। মাথা ঘামানো উচিত নয়। যখন নতুন ছিলাম, তখন সমালোচনা আমাকে অনেক বেশি হিট করত। এখন কারও সমালোচনা করা ট্রেন্ডি হয়ে গেছে। কাউকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বললে মনে করেন, তিনি অনেক বোঝেন। অনেক জানেন। আরেকজনকে ছোট করে নিজেকে বড় মনে করেন। তাঁরা শোধরানোর জন্য সমালোচনা করেন না। আমি এটা বুঝতে পারি, কে আমার ভালো কিংবা খারাপ চান। যদি ভুল শোধরানোর কিছু থাকে, তাহলে বাসায় বাবা আছেন, যিনি আমার সবচেয়ে বড় সমালোচক, কখন কোনটা করা উচিত, তিনিই আমাকে বলে দিতে পারবেন। বাদ বাকিগুলো না কানে শুনি, না গায়ে লাগাই।

প্রথম আলো :

দর্শক আকর্ষণে নেতিবাচক প্রচারণায় বিশ্বাস করেন?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: নেগেটিভ কখনো আমার পছন্দ নয়। অবশ্য প্রচারণা যদি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে সাহায্য করে এবং তা পজিটিভভাবে হাসিঠাট্টার মতো হয়, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু একটা মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলা, দুঃখ পাইয়ে দেওয়া, ভয় পাইয়ে দেওয়া, ডিপ্রেশনে পড়ে যাওয়া—এগুলো কখনো সাপোর্ট করি না। আমাদের তো পজিটিভিটি অনেক আছে।

প্রথম আলো:

‘মিডিয়া পলিটিকস’-এর শিকার হয়েছেন?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: কিছুটা তো অবশ্যই। এটা বলতে কোনো দ্বিধা নেই। এখন কাজে খুব সিন্ডিকেট হয়। যেটা জানি, দেখি, বুঝে উঠতে পারি। একজন পরিচালকের পছন্দের শিল্পী পাঁচজন, ছয়জন কিংবা তিনজন। এর বাইরে কাজ করতে হয়তো তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। নতুনদের নিয়ে কাজ করতে চান না। আবার নতুনদের মধ্যেও বেছে নেন। এমনটা শুধু নায়িকা নয়, নায়কদের ক্ষেত্রেও হয়। এর মধ্যে হয়তো আমি পড়ে গেছি। এখনো কারও আই ক্যান্ডি হতে পারিনি। আমি আসলে একজনের আই ক্যান্ডি হতেও চাই না। সবার সঙ্গে কাজ করতে চাই।

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি
শিল্পীর সৌজন্যে

প্রথম আলো :

সিন্ডিকেট কীভাবে মোকাবিলা করছেন?

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: আমি জানি না, এটা আসলে কীভাবে করতে হয়! জেনে গেলে অনেকজনের সঙ্গে কাজ হয়ে যেত। স্টিল সার্চিং। এই জিনিসটা ভেদ করে কীভাবে যাওয়া যায়! তবে আমি যেসব কাজ করছি, সেগুলোর মধ্যে পারফেক্ট একটা কাজ দিয়ে সবার নজরে আসি, তারপর হয়তো হয়ে যাবে।

প্রথম আলো :

শেষ নতুন কাজের খবর যদি অল্প করে বলতেন...

প্রার্থনা ফারদিন দীঘি: ভ্যালেন্টাইন, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কাজ করছি, ফটোশুট করছি। ঈদে জংলি মুক্তি পাবে। এটা নিয়ে বেশ কিছু পরিকল্পনা আছে। নতুন ফিল্মের কথা চলছে। আগেই কিছু বলতে চাই না। শুরু হোক, তারপর জানাব। তবে এটা নিশ্চয়তা দিতে পারি, ভালো কিছু দেখতে পাবেন দর্শক।