তানিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন এস আই টুটুল

গত বছর জুলাইয়ের শেষের দিকে হঠাৎ করেই শোনা যায় তারকা দম্পতি এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদের সংসারে বিচ্ছেদের সুর। কিন্তু কেন এই বিচ্ছেদ? কে কাকে বিচ্ছেদের চিঠি দিয়েছিলেন, সেটা জানা যায়নি। অন্যদিকে শোনা যাচ্ছিল, এস আই টুটুল যুক্তরাষ্ট্রে আবার বিয়ে করেছেন। এ ছাড়া নানা প্রসঙ্গে আমরা কথা বলতে টুটুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করি। প্রতিবারই তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকেই কথা বলতে সম্মত হন। আলাপচারিতায় উঠে আসে বিবাহবিচ্ছেদের কারণসহ দীর্ঘ সংসারজীবনের নানা ঘটনা ও ক্যারিয়ারের পরিকল্পনা।
এস আই টুটুল
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

বিচ্ছেদ ঘিরে অনেক কথাই শোনা যাচ্ছে। কিন্তু আপনি চুপ। কেন?

যারা সত্যিকার ভালোবাসে, তারা কখনোই বিচ্ছেদ চায় না। আমিও চাইনি। আর প্রকৃত ভালোবাসা থেকে যারা বঞ্চিত হয় তাদের মনে হয়, মিথ্যা সুখের অভিনয়ের চাইতে সম্মানটা নিয়ে দূরে সরে থাকাই ভালো। আমি একজন ক্ষুদ্র সুরকার ও সংগীতশিল্পী। একজন শিল্পীর সুর সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো মানসিক প্রশান্তি। যখন মনে এই শান্তিটাও থাকে না, তখন সেই মানুষটি দুঃখের সাগরে ডুবে যেতে থাকে এবং বাঁচার অবলম্বন হিসেবে একটা কিছু আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করে। আমার জীবনেও তেমনই কিছু ঘটেছিল। আমাদের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়টি নিয়ে কথা বলে ভক্তদের বিচলিত করতে চাইনি বলেই কিছু বলিনি।

প্রশ্ন :

তাহলে সম্পর্কটা বিচ্ছেদে গড়াল কেন? কে চেয়েছেন বিচ্ছেদ?

এটা সত্যি যে তানিয়ার সঙ্গে আমি কখনোই বিবাহবিচ্ছেদটা চাইনি। আমার নিজের উদ্যোগেও আমি বিচ্ছেদ করিনি বরং তানিয়াই বিচ্ছেদ চেয়েছিল বারবার। কেন চেয়েছিল, সত্যটা সে নিজেই সবচেয়ে ভালো বলতে পারবে। সে তো বলেছে সে সত্যটা বলে দেওয়াই পছন্দ করে, তাই এই বিষয়টা তার কাছে জানতে চাইলে ভালো হবে। তানিয়াই আমাকে বলেছিল, সে স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করতে চায়, সংসারের কোনো বাধ্যবাধকতা সে আর একেবারেই চায় না। সে বলেছিল, যখন যেখানে খুশি বেরিয়ে যাবে। কোথায় যাচ্ছে, কখন ফিরবে—এসব কোনো কিছুই আমি জানতেও চাইতে পারব না ইত্যাদি। একসময় সে চলাফেরাও শুরু করেছিল সে রকমভাবেই। এ ছাড়া আমার সঙ্গে তার ব্যবহার-আচার এবং অনেক কিছুই, যা আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই বিচ্ছেদে আমিও একসময় রাজি হয়েছিলাম।

প্রশ্ন :

বিভিন্ন সময় আপনি এটাও বলেছেন, আপনার ক্যারিয়ারে জনপ্রিয়তার জন্য তানিয়ার অবদান আছে। এখন তিনি বলছেন, ‘আগের সেই টুটুলকেই চাই।’ নিজের ব্যাপারে কী বলবেন?

আমার ক্যারিয়ারে তানিয়ার অবদান অবশ্যই আছে। আর তানিয়ার ইচ্ছা, আমি এস আই টুটুল থেকে যেন টুটুল হয়ে ফিরি। আমারও ইচ্ছা, গুরু বাচ্চু ভাইয়ের সেই টুটুলের জায়গাতে বসিয়ে দাও, যে জায়গাটিতে তিনি কোনো দিন আর কাউকে বসতে দেননি। আমিও কোনো দিন কারও ব্যান্ডের কি-বোর্ডিস্ট হইনি। আমি অন্তত বাচ্চু ভাইয়ের স্নেহ, শাসন-বারণ, ভালোবাসা আর মান–অভিমান নিয়েই বাঁচতে পারতাম তাঁর মতো করে; তিনি অন্তত আমাকে এভাবে ছুড়ে ফেলে দিতেন না। সংসার করতে গিয়ে আমি তো তোমার মতো এত যোগ–বিয়োগ করিনি। আমার ভালোবাসাটাও হয়তো তুমি বুঝতে পারোনি।

আরও পড়ুন
এস আই টুটুল ও তানিয়া আহমেদ। ছবি সংগৃহীত।

প্রশ্ন :

বিচ্ছেদ–প্রক্রিয়ার দিকে কে এগোল?

আমাদের বিবাহবিচ্ছেদের সব প্রক্রিয়া তানিয়া নিজেই তাঁর ছোট ভাই এবং ভাবির মাধ্যমে করিয়েছিল। অথচ সবাই জানল, আমিই নাকি তাকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছি। আমার মাধ্যমে ডিভোর্স–প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। এ ব্যাপারে মানুষ আমাকে ভুল বুঝেছেন।

প্রশ্ন :

আপনারা বিচ্ছেদের আগে কত দিন ধরে আলাদা থাকতেন?

দীর্ঘ ৪–৫ বছর সেপারেশন থাকার পর আমি আমেরিকায় আসার প্রায় দেড় বছর আগে আমাদের বিবাহবিচ্ছেদের পেপারে স্বাক্ষর হয়।

প্রশ্ন :

এর মধ্যে আবার শোনা যাচ্ছিল, আপনি যুক্তরাষ্ট্রে বিয়েও করেছেন?

তানিয়ার সঙ্গে আমার বিবাহবিচ্ছেদের যখন এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে, সেই সময়ে আমি একজন সিঙ্গেল মানুষ হিসেবে জীবন কাটাচ্ছিলাম। তখন একটা অনুষ্ঠানের কাজে নিউইয়র্কে আসি। সেখানে একজনের সঙ্গে দেখা হয়, পরে সখ্য হয়, একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমাদের বিয়ের কথাও হয়েছিল। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার হয়তো হুকুম হয়নি তা–ই, কখনো কোনোভাবেই আমাদের বিয়ে হয়নি। আমাদের সম্পর্কটা পরিচয়, সখ্য বা প্রেম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল।

প্রশ্ন :

তাহলে আপনারা বিয়ে করেছেন—এই ভুল তথ্যটি কীভাবে ছড়াল?

আমাদের যে কারও ভুলেই হয়তো চারদিকে আমাদের বিয়ে নিয়ে এই ভুল তথ্যটি ছড়িয়ে পড়েছিল। এটা নিয়ে কেউ কেউ লিখেছেন, আমি তানিয়ার কাছে বাচ্চাদের ফেলে রেখে তাকে ডিভোর্স দিয়েছি এবং যুক্তরাষ্ট্রে এসে নতুন সংসার পেতেছি। এ নিয়ে কত যে মিথ্যা রং চড়িয়ে সবার কাছে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে, তার সংখ্যা আমার জানা নেই।

পরিবারের সঙ্গে তানিয়া আহমেদ ও এস আই টুটুল। এ ছবি এখন শুধুই স্মৃতি। ছবি সংগৃহীত।

প্রশ্ন :

আরও বেশ কিছু গুজব ছড়িয়েছিল। সেগুলো কি শুনতে পেয়েছেন?

কিছু মানুষ না জেনে, মনের আনন্দে কোনো প্রমাণ ছাড়াই আমার নামে মিথ্যা গুজব ছড়িয়েছে। আমি নাকি ঘরোয়াভাবে বিয়ে করতে চেয়েছি। সেই মেয়ের কাছে নাকি টাকাও চেয়েছি। আবার শুনলাম, আমি নাকি নিউইয়র্কের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কনসার্ট খুঁজে বেড়াচ্ছি এবং আমেরিকার সোশ্যাল বেনিফিটও খুঁজে বেড়াচ্ছি। আবার কেউ লিখেছেন, আমার এবং আমার বাচ্চাদের গ্রিনকার্ড করার জন্য আমেরিকান সিটিজেনকে বিয়ে করেছি—ইত্যাদি ইত্যাদি আরও অনেক কিছুই। অথচ তাদের হয়তো জানা নেই যে বহু আগেই আমার মাধ্যমেই আমার এবং আমার পরিবারের সবারই গ্রিনকার্ড হয়েছে এবং সেটাও ভিআইপি ক্যাটাগরিতে।

প্রশ্ন :

এসব নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

আমি দীর্ঘ প্রায় চার দশক সংগীতের সঙ্গেই আছি। আমাকে এমন কোনো অশালীন কিছু করতে কখনো কোথাও কোনো দিন কেউ দেখেছেন? এ কথা কেউ বলতে পারবেন না বলে আমার বিশ্বাস। এসব দেখে আমার খুবই কষ্ট হয়। আপনারা যাঁরা আমাকে ভালোবাসেন এবং বিশ্বাস করেন, তাঁদের কাছে একটা দোয়া চাই, আমি যদি সত্য হই, তাহলে এই কষ্টগুলো যেন আমার মনের শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

প্রশ্ন :

আপনি আপনার তারকাখ্যাতি নিয়ে কি অহংকার করতেন এবং রূঢ় আচরণও নাকি করতেন?

তানিয়া আমার সম্বন্ধে যদি তারকাখ্যাতির অহংকার বা রূঢ় আচরণের অভিযোগ করে, তাহলে এর উত্তরে আমি বলব, আমি যদি এমন কিছু করে থাকি, তা অজান্তে ভুল করে করেছি। কেউ নিজের ব্যবহারকে নিজে উপলব্ধি করতে কমই পারে। যখন মানুষ একজন অন্যজনকে খুবই ভালোবাসে, ধীরে ধীরে অজান্তেই একজন আরেকজনের ওপর একটা অধিকার তৈরি হয়। তখন জীবনের অনেক ধরনের স্ট্রেসগুলো নিজের আপন মানুষের ওপরই কোনো না কোনোভাবে প্রকাশ করে। আমারও এমন কিছু হতে পারে মেনে নিচ্ছি। আর আমার চাইতেও সে যে একজন বড় সেলিব্রেটি, সেটা কে না জানে? আমার রূঢ় আচরণ শুধুই কি তিনিই দেখেছেন? আমার পরিচিত বন্ধুবান্ধব ভক্তরা কেউ দেখেনি? স্ত্রীর সঙ্গে তারকাখ্যাতির অহংকার অবশ্যই কোনো মানসিক রোগী ছাড়া কোনো নরমাল মানুষ করবে না। তবু আমি ক্ষমা চাই, আমার অজান্তে যদি কারও সঙ্গেই এমন কিছু করে থাকি।

এস আই টুটুল
ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

তানিয়া আহমেদকে ব্লক করেছিলেন কেন?

সে আমাকে এই কষ্টের জীবনে ঠেলে দিয়েছে, তাই অভিমান করেই আমি তানিয়াকে ব্লক করেছিলাম। আমাকে তার জীবন থেকেই ব্লক করে দিয়েছে, তার সঙ্গে আর যোগাযোগ থেকেই বা লাভ কি—এমনই মনে হয়েছিল আমার। আরও কিছু কারণও ছিল হয়তো, তা বলতে চাই না, ক্ষমা করবেন। কিন্তু সংসারের দায়িত্ব পালন করা থেকে কখনোই তাদের কাছ থেকে নিজেকে ব্লক করিনি।

প্রশ্ন :

কয়েক দিন আগে তানিয়া একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘টুটুল একদিন খেপে গিয়ে বলেছিল, আমার এই সাকসেস তোমার সহ্য হয় না। টুটুল আমার ভালোবাসাটাই বুঝতে পারেনি’—এটা নিয়ে কী বলবেন?

এ ব্যাপারে আমারও কিছু কষ্ট আছে। আমার যখন বড় বড় অ্যাওয়ার্ড পাওয়া শুরু হলো, আমি রিসিভ করতে যাব, সেই অনুষ্ঠানগুলোর কোনোটাতেই আমি অনুরোধ করলেও তানিয়াকে পাশে পাইনি। সে যেত না। এতে আমার খুব মন খারাপ লাগত। আমার এই অর্জনগুলোতে আমি ওকে আমার পাশে খুব চাইতাম কিন্তু সে বারবার একই কথা বলত ‘আমি যাব না’। অ্যাওয়ার্ড আমি ওকে উৎসর্গ করব ভেবে রাখতাম কিন্তু ওকে পাইনি। তাই হয়তো অভিমান থেকে আমি এ রকম কিছু বলেও থাকতে পারি। হায়রে তানিয়া! আমার ভালোবাসাটাও তুমি বুঝতে পারোনি। আমার এই জীবনটা যে দিয়ে দিয়েছিলাম তোমাকেই, তা তুমি ভালো করেই জানো।

সম্প্রতি ছেলের সঙ্গে এসআই টুটুল। ছবি: ফেসবুক

প্রশ্ন :

তানিয়া একটি ইচ্ছার কথা বলেছিলেন, ‘সেই আগের টুটুলকে ফিরে পেতে চাইতেন’—এটা নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

আমারও যদি একটি ইচ্ছা পূরণ হতো, তাহলে আমি ১৯৯৭ সালের ওই সময়ের তানিয়াকে ফিরে পেতে চাইতাম। ওর ব্যাকপ্যাক নিয়ে পৃথিবী ঘুরে বেড়ানোর সঙ্গী আমিই হতে চেয়েছি, ওর এক কাপ চায়ের সঙ্গী আমিই হতে চেয়েছিলাম। আমাকে ওর মনের মতো একটা মানুষ হিসেবে চাইলেই সে গড়ে নিতে পারত। আমি তানিয়াকে বলব, সংসার করার সময় আমি কোনো যোগ–বিয়োগ করিনি, রাগ করলে আমিই করেছি আর ভালোবাসলেও আমিই বেসেছি। কখনো বলিনি এটা করতে পারবে না, ওটা করতে পারবে না, এখানে যাবে না, ওখানে যাবে না, আমাকে রান্না করে খাওয়াতে হবে। এমন কথা সে কোনো দিন বলতে পারবে না। বরং বাচ্চাদের স্কুল থেকে শুরু করে যেকোনো কাজে নব্বই ভাগ সময় আমিই গিয়েছি। তাহলে এত যোগ-বিয়োগ করে আমার জীবনটা কেন এত এলোমেলো করে দিলা? আমরা কি দোষগুণ মেনে বাকি জীবনটা কাটাতে পারতাম না? অন্তত বাচ্চাদের কথাটা ভেবে। এমন কী দোষ ছিল আমার?

প্রশ্ন :

আপনার নতুন গানের খবর কী?

গান করার কি সেই মন আছে? শিল্পী যখন তার ভক্তদের কাছে অপ্রিয় হয়ে যায়, তখন কি আর সেই ভালোবাসা নিয়ে কাজ করা যায়? গত দুই বছর আমি অনেকটা নিভৃতে আছি। বলতে পারেন একেবারেই একাকী জীবন। নানা মাধ্যমে আমাকে নিয়ে ট্রল আর অসম্মান যেন আমাকে বেঁচে থাকার আগ্রহটাও কেড়ে নিচ্ছে। তবু কিছুদিন হলো কজন শুভাকাক্ষীর অনুপ্রেরণায় আবার কাজ শুরু করেছি।

প্রশ্ন :

যুক্তরাষ্ট্রে গান ছাড়াও অন্য কিছু কি করছেন?

আমেরিকায় আমার নিজের একটা প্রফেশনাল অডিও স্টুডিও আছে। এখন ইন্টারনেটের যুগ, তাই সেখানে কাজ করে পৃথিবীর যেকোনো জায়গাতেই পাঠাতে পারি। এ ছাড়া আমেরিকায় আমি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করছি।

গায়ক এসআই টুটুল। ছবি: ফেসবুক
আরও পড়ুন

প্রশ্ন :

আপনারা এখন কে কোথায় থাকেন ?

তানিয়া এবং ছোট ছেলে ঢাকায় আমাদের ওখানেই বসবাস করছে। গাড়ি ড্রাইভার, দীর্ঘদিনের গৃহকর্মীরা সবাই ঠিক আগের মতোই আছে এবং আর্থিক বিষয়ে তানিয়া যে কারও মাধ্যমে যখন যা চায়, আমি তা পূরণ করার চেষ্টা করি। আমি তা কোনো দিনই বন্ধ করিনি। আমি আর শ্রেয়াশ ফ্লোরিডায় থাকি। এখান থেকেই বিভিন্ন দেশে সংগীতের কাজে যাই । আরশ মাঝেমধ্যে তাঁর মায়ের সঙ্গে আমেরিকায় যখন আসে, তখন সে আমার কাছে এসে কিছুদিন থাকে। বাচ্চাদের সঙ্গে সব সময়ই আমার যোগাযোগ হয়।

প্রশ্ন :

কে দোষী আর কে নির্দোষ, এমন প্রশ্ন কি নিজেকে করেছেন?

কে দোষী আর কে নির্দোষ, তা নিয়ে সবারই নিজের কাছে নিজের কিছু প্রশ্ন বা উত্তর তো থাকেই । এখানে আমার কি ভুল ছিল, তা আজও আমি বুঝতে পারিনি । আর তাই

আমার এই দাম্পত্য জীবনের কষ্টের গল্পটা আমি কাউকেই দোষী করে কিছু বলতে চাইনি । আমার মনে হয়, এটা জনে জনে বলে বেড়ানোর বিষয়ও না। আমাদের বাচ্চারা আছে, তাদের কাছে নিজেদের ছোট করে কেউই সুখী হব না । আমি হাজার ইচ্ছা করলেও যাকে একবার ভালোবেসেছি, তাকে স্মৃতি থেকে কখনো মুছে ফেলতে পারব না। কাউকে মানুষের কাছে ছোট করার ইচ্ছা আমার নেই।

এটা আমার স্বভাবের সাথে এ যায় না। একটা সময় যার মনপ্রাণজুড়ে আমি ছাড়া আর কেউই ছিল না। সেই মানুষটিকেই তো আমি পারিবারিক এবং পরিচিতজনের পক্ষ থেকে শত বাধাবিপত্তি পার করে ভালোবেসেই ঘরে তুলে এনেছিলাম। সুখে–দুঃখে একসঙ্গে এই জীবন পার করব বলে। আমার শেষনিশ্বাসটা নিতে চেয়েছিলাম তারই কোলে মাথাটা রেখে। অবশেষে জানলাম, ‘সব চাওয়া পৃথিবীতে পাওয়া হয় না’।