শুনলাম আপনার মেয়েও বলছে, তার মায়ের একজন সঙ্গী দরকার।
আজমেরী হক বাঁধন : আমার মেয়ে তো এখন একটু বড় হয়েছে। ও আস্তে আস্তে বুঝছে, মায়ের সবকিছুই একা একাই করতে হয়। মাকে একা কষ্ট করতে হয়, যুদ্ধ করতে হয়। সবকিছু দেখে মেয়ের মনে হয়েছে, মায়ের একজন সঙ্গী দরকার।
কবে থেকে আপনার মেয়ের এমনটা উপলব্ধি হয়েছে?
আজমেরী হক বাঁধন : গত এক–দেড় বছরে মেয়ে আমার এটা বুঝছে। আগে বুঝতাম, আমাকে আমার ফোনে কাজিনেরা ফোন করলেও মেয়ে পছন্দ করত না। বিষয়টা এমন, কাজিন কেন ফোন করছে (হাসি)। মাকে নিয়ে এত অবসেশড, এটা হয়। সাধারণত, সিঙ্গেল পিতা-মাতা হলে এটা হয়ই। সিঙ্গেল মা–বাবার ছেলে-মেয়েরা এত বেশি অ্যাটাসড থাকে যে ওরা আর অন্য কাউকে তাদের মা-বাবার সঙ্গে সহ্য করতে পারে না। এখন যেহেতু মেয়ে একটু বড় হয়েছে, স্পেস দেয়। আশপাশের মানুষও বলতে থাকে, একজন জীবনসঙ্গীর কথা। মেয়ে আমাকে বোঝে, তারও মনে হয়, মায়ের এটা হয়তো দরকার আছে। আমি আসলে ওভাবে হয়তো চিন্তা করি নাই, একদম অনেস্টলি। এত বছর আমি চিন্তা করিনি। সম্ভবত এখন আমি চিন্তা করছি। কেননা, একজন জীবনসঙ্গী যদি থাকে অসুবিধা তো নাই।
প্রথম আলো :
কেমন জীবনসঙ্গী চান?
আজমেরী হক বাঁধন : জীবনসঙ্গীর ক্ষেত্রে আমাকে আমার মতো যে গ্রহণ করবে, সেই জিনিসটা খুব জরুরি। আর এটা আমাদের সমাজে তো খুবই দুর্লভ। এ রকম না যে আশপাশে অজস্র খুঁজে পেয়েছি, সে রকমও না।
আপনার জীবনে একজন জীবনসঙ্গীর দরকার, এই উপলব্ধি কবে থেকে?
আজমেরী হক বাঁধন : এক–দেড় বছর হবে জীবনসঙ্গীর কথা চিন্তা করছি।
প্রথম আলো :
যদি বলি, আপনি সে রকম কাউকে খুঁজে পেয়েই এমন সিদ্ধান্তের বিষয় সামনে এনেছেন।
আজমেরী হক বাঁধন : না না, বিষয়টা মোটেও সে রকম না। আমি এখনো কাউকে খুঁজে পাইনি। আমি তো বললাম, বিষয়টা এ রকম না যে আশপাশে জীবনসঙ্গী ছড়ায়ে–ছিটায়ে আছে। কিন্তু নিঃসন্দেহে মনে করি, জীবনসঙ্গী দরকার আছে। এখন অনেক বেশি মনে করি যে একজন জীবনসঙ্গী থাকতেই পারে সঙ্গে। মানুষের থাকে না...। জীবনসঙ্গী শব্দটা যে বুঝবে, সে রকম কেউ যদি আসে, নিঃসন্দেহে সঙ্গী হিসেবে তাঁর সঙ্গে পথচলা যাবে।
এখন মেয়ের কথাও বলছেন, নিজের কথাও বলছেন, অথচ এই আপনি কিন্তু বছরখানেক আগেও বিয়ে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যেতেন। হঠাৎ বিয়ের পরিকল্পনা সামনে আনার কোনো বিশেষ কারণ আছে কি?
আজমেরী হক বাঁধন : বিশেষ কোনো কারণ নেই। ৪০ বছর বয়স পার হয়ে গেছে তো। আমি তো আপনাকে আগেও বলছি, ৪০ বছরে আমি অন্য রকম একটা জীবন লাভ করছি। তাই এই নতুন জীবনে মনে হয়েছে, একজন সঙ্গী থাকতেই পারে। সঙ্গী ছাড়া তো মানুষ থাকতে পারে না। আমার পুরো জীবনটা সঙ্গী ছাড়াই কেটেছে, অলমোস্ট। বিয়ে হোক বা ওই রকম কিছু হোক, আমার জীবনে কখনো ওই রকম কিছু হয় নাই যে পথচলায় সত্যিকারের একজন সঙ্গী পেয়েছি কখনো। সব সময় হয় একজন দানব পেয়েছি, না হলে যে আমাকে অত্যাচার করছে, এ রকম মানুষ পেয়েছি। আমাকে অ্যাবিউজ করছে, এ রকম মানুষই পেয়েছি। আমার জীবনে যারা আসছে, সবাই বাধা হিসেবেই আসছে। আমার চলার পথটাকে মসৃণ করতে আসেনি কেউ। তাই আমার জীবনে যারা বাধা হবে, তাঁরা তো আমার জীবনে থাকতে পারবে না। এটা সম্ভবও না। তাই ওই অর্থে আমি কোনো জীবনসঙ্গী পাইনি, এটা সত্যি। সব মিলিয়ে এখন মনে হয়েছে, পথচলার একজন সঙ্গী হতেই পারে।
প্রথম আলো :
যারা আসছিল, আসার আগে ভেবেছিলেন তারা দানব হতে পারে...
আজমেরী হক বাঁধন : (কিছুক্ষণ ভেবে) নিঃসন্দেহে না। মানুষকে তো আর ওইভাবে দূর থেকে দেখে কিছু বোঝা যায় না।
তাহলে নতুন যে জীবনসঙ্গী আসবে, তার ব্যাপারেও ভয় কিংবা আতঙ্ক থেকে যায় কী?
আজমেরী হক বাঁধন : একরকম আতঙ্ক থেকেই যায়। এই কারণে ভয়ে জীবনসঙ্গী খোঁজার চেষ্টাও করতে পারি না। ধরেন কাউকে চিন্তা করব, করার আগে এক হাত এগোলে দশ হাত পিছিয়ে যাই। ভাবতে থাকি, না, আসলে দরকার নাই।
প্রথম আলো :
কাজকর্মের খবর বলুন।
আজমেরী হক বাঁধন : খুব শিগগিরই ‘এশা মার্ডার’ ছবির বাকি অংশের শুটিং শুরু হবে। আগামী বছর এক-দুটা কাজের কথাবার্তা চলছে। দেখা যাক, সব চূড়ান্ত হলে তবেই জানা যাবে।