সবাই বলছেন, ‘মুশফিক ভাই, আপনি কি আসলেই এত কৃপণ মানুষ’
‘কঞ্জুস’ নাটক দিয়ে বছরের শুরুতেই আলোচনায় এসেছেন অভিনেতা মুশফিক আর ফারহান। তাঁর চরিত্র দর্শক গ্রহণ করেছেন। নাটকটিও ছয় দিনে কোটি ভিউ অর্জন করেছে। নতুন বছর ও ক্যারিয়ারের বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা হলো এই অভিনেতার সঙ্গে।
প্রশ্ন :
নতুন বছরের শুভেচ্ছা? নতুন বছরে নতুন কোনো আশা আছে?
নতুন বছরের শুভেচ্ছা। আমার সব আশা কাজ নিয়ে। নতুন বছরে দর্শকদের ভালো ভালো কাজ উপহার দিতে চাই। কাজ দিয়েই নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে চাই। কম কাজ করলেও ভালো কাজ করব।
প্রশ্ন :
বছরের শুরুতেই আপনার অভিনীত ‘কঞ্জুস’ নাটকটি প্রশংসা পাচ্ছে, আপনার অনুভূতি কেমন?
খুবই ভালো লাগছে। নাটকটি যে এতটা আলোচনায় আসবে, ভাবিনি। দেশের বাইরে থেকেও অনেকেই প্রশংসা করছেন। প্রবাসী দর্শক, কলকাতার দর্শক প্রতিমুহূর্তে মন্তব্য করছেন। সবার প্রশংসা ভালো লাগছে। এগুলো অনুপ্রাণিত করে।
প্রশ্ন :
আপনার চরিত্রটি একজন কৃপণের। যে প্রতিটা পা ফেলার সময়ও হিসাব করে, চরিত্রটির অনুপ্রেরণা কোথা থেকে পেলেন?
আমার নানাবাড়িতে এ ধরনের এক ব্যক্তি ছিলেন। শৈশবে নানাবাড়ি গেলে তখন সেই ব্যক্তিকে এমনভাবে দেখতাম। তিনি খুব কম খরচে সংসার চালাতেন। বউ কতটা নারকেল তেল মাথায় ব্যবহার করল, সেই হিসাবও রাখতেন। স্ত্রী–সন্তানদের চিকিৎসাও করাতে চান না। নানাবাড়ি গেলে তাঁর সম্পর্কে প্রায়ই শুনতাম। সেটাই আমাকে চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলতে অনেক সহায়তা করেছে।
প্রশ্ন :
চরিত্রের জন্য যে চশমা ব্যবহার করা, স্লিপার পায়ে দেওয়া, দোকানে বসে থাকা—চরিত্রের এই দিক নিয়ে কেউ কিছু বলেছেন?
অনেকেই বলেছেন, এটা বাস্তবিক একটি চরিত্র। সেটা ফারহানকে ছাপিয়ে গেছে। আসলে এই চরিত্র বরিশালের এয়ারপোর্ট রোডের এক দোকানিকে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া। তিনি যেভাবে দোকানে বসে থাকেন, আমিও সেভাবেই চরিত্রটির লুক অনুকরণ করেছি। এটা আমি পরিচালককে আগেই জানিয়েছিলাম। তিনি পছন্দ করেছিলেন। তা ছাড়া আমার চরিত্রের টোন, সংলাপ বলার ধরন আলাদা। সেটা নিয়েও দর্শকেরা অনেক প্রশংসা করছেন।
প্রশ্ন :
কমেডি নাটকের ভিড়ে এ ধরনের নাটকে আপনাকে কম দেখা যায় কেন?
আমি কিন্তু সব সময় চেষ্টা করি ব্যতিক্রমী গল্পে অভিনয় করতে। এই গল্পটাও আমরা কমেডির মধ্য দিয়েই শেষ করতে পারতাম। শেষে একজন নারীর জরায়ুরোগ বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে। এই রোগ আমাদের দেশের অনেক নারীর। কিন্তু অনেকেই এই রোগকে গুরুত্ব দেন না, অবহেলা করেন। এটা আমরা গল্পে আনতে চাইনি। পরে নারীদের সচেতন করার ক্ষেত্রে সিরিয়াস বিষয়টি রাখা হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক প্রশংসা শুনছি। এসব বিষয়ে মা আমার অন্যতম অনুপ্রেরণা।
প্রশ্ন :
সবচেয়ে বেশি শুনতে হচ্ছে কী?
সবাই বলছেন, ‘মুশফিক ভাই, আপনি এত কৃপণ! বাস্তব জীবনে আপনি কি আসলেই কৃপণ।’ এগুলো শুনতে আমার খুব মজা লাগছে। মনে হচ্ছে, আমি চরিত্রে সফল। কিন্তু আমি কখনোই বাস্তব জীবনে এত কৃপণ নয়। আমি কখনোই কিপটেমি করি না। এটা আমার পরিচিতজনেরা সবাই জানেন। কঞ্জুস কেউ আমাকে বলতে পারবেন না।
প্রশ্ন :
বর্তমান ব্যস্ততা কী নিয়ে?
আপাতত কোনো কাজ করছি না। আমি কিছুটা অসুস্থ। ঠান্ডা লেগেছে। এখন বাসাতেই আছি। ভালোবাসা দিবস ও ঈদের অনেক চিত্রনাট্য পেয়েছি। সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করব। এ ছাড়া নতুন বছরে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মেও দর্শক আমাকে দেখবেন।