‘রাস্তাঘাটে রাত কাটানো মানুষদের থাকার ব্যবস্থা করে দেব’

সামনে ‘বান্টির বিয়ে’সহ প্রায় এক ডজন নাটকে দেখা যাবে তরুণ অভিনেত্রী মারিয়া শান্তকে। ঈদের শুটিং নিয়েই এখনো ব্যস্ত এই তরুণ অভিনেত্রী। বর্তমান ব্যস্ততা, ব্যক্তিগত জীবনের নানা প্রসঙ্গে নিয়ে ‘বিনোদন’–এর মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মনজুরুল আলম

প্রথম আলো :

শুটিং নিয়ে ব্যস্ততা কেমন?

এখন তো কাজের মৌসুম। ব্যস্ততা বেশি। সকালে গিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত শুটিং করতে হয়। সম্প্রতি শুটিং শেষ করলাম। আমি বিরতি দিয়ে শুটিং করি। যে জন্য শুটিং রাখিনি আজ (শনিবার)। এ ছাড়া কাজের সংখ্যাও কমিয়ে দিয়েছি।

প্রথম আলো :

ক্যারিয়ার শুরুর দিকে অনেকে পরিচিতি বাড়ানোর জন্য বেশি নাটকে অভিনয় করছেন। কাজ কমিয়ে দিলেন কেন?

কম কাজ করে কীভাবে ভালো করা যায়, সেই চেষ্টা করছি। ভালো কাজ দিয়েই দর্শক চিনুক, এটাই চাই। এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যদিও অনেক ভালো কাজও সেভাবে দর্শকপ্রিয়তা পায়নি। দেখা গেছে, চিত্রনাট্য সুন্দর কিন্তু উপস্থাপনা যথাযথ নয়। আবার কিছু কাজের জন্য প্রশংসাও জুটেছে। ক্যারিয়ারের জন্যও এটা গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। এ ছাড়া মাঝের সময়ে পরীক্ষার জন্য কিছুদিন কম কাজ করেছি। পড়াশোনা ও অভিনয় একসঙ্গে খুবই কঠিন। কিছু কাজ সময়মতো রিলিজ হয়নি। এবার ঈদের জন্য ১০টির বেশি নাটকে অভিনয় করেছি কিন্তু কয়টি মুক্তি পাবে, বলতে পারছি না। বান্টির বিয়েসহ আরও কিছু কাজ ভালোবাসা দিবসের জন্য করা ছিল। সেগুলো ঈদে যোগ হচ্ছে। সময়মতো কাজগুলো মুক্তি পেলে এই বিরতি চোখে ধরা পড়ত না।

অভিনেত্রী মারিয়া শান্ত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

প্রথম আলো :

শুটিংয়ের পর মুক্তি পেতে দেরি হলে মন খারাপ হয় কি না?

প্রতিটা কাজের পেছনে আলাদা নিবেদন থাকে। সেই কাজটা নিয়ে একটা আশা নিয়ে বসে থাকি। একটা কাজ এক সময়ের জন্য করলাম, সেটা সেই সময়ে প্রচারিত হলো না, তখন মন খারাপ হয়। ইদানীং এই সমস্যা বেশি হচ্ছে। অনেক অভিনয়শিল্পীর কাজই মুক্তি পাচ্ছে না। যত দূর শুনেছি, স্পনসর সমস্যার কারণে। এখানে তো আসলে আমাদের কোনো হাত নেই।

প্রথম আলো :

পরিচালকের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব কিন্তু তাঁর চিত্রনাট্য পছন্দ হচ্ছে না, এ ক্ষেত্রে কীভাবে না করেন?

বাধ্য হয়ে আমি খুব একটা কাজ করিনি। পরিচালকদের সঙ্গে সেভাবে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেনি, সবার সঙ্গে আমার পেশাগত সম্পর্ক।

অভিনেত্রী মারিয়া শান্ত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

প্রথম আলো :

অল্প সময়ের ক্যারিয়ারে পরিচিতি পেয়েছেন। কোন অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন?

আমাকে অভিনয়ে অনেক ভালো করতে হবে। সবার সঙ্গে কাজ করে শিখতে হবে। এ জন্যই ধীরে এগোচ্ছি। আমি কচ্ছপের গতিতে বিশ্বাসী। কারণ, আমার স্কুলিং নেই। আমাকে টিকে থাকতে হলে শিখতে হবে। ইচ্ছা আছে অভিনয় নিয়ে পড়াশোনা করতে বিদেশ যাওয়ার। আমার সৌন্দর্য নয়, আমার অভিনয়ের প্রশংসা শুনতে চাই।

প্রথম আলো :

আপনাকে সহশিল্পীদের সঙ্গে জুটি হিসেবে দেখা যায় না কেন?

সবার সঙ্গে একটি, দুটি বা বেশি কাজ করেছি। কিন্তু জুটি হয়ে পরপর কারও সঙ্গে কাজ করা হয়নি। জুটি হয়ে কাজ করতে ভালোই লাগে। শৈশবে অনেক অভিনয়শিল্পীকে জুটি হিসেবে দেখে ভালো লাগত। তখন ভাবতাম, ওর সঙ্গেই যেন ওর বিয়ে হয়। এখন নাটকের যে জুটি, তারাও কিন্তু ভালো করছে। আমারও কারও সঙ্গে জুটি হলেও সমস্যা নেই।

অভিনেত্রী মারিয়া শান্ত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

প্রথম আলো :

অভিনয়ে আপনাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করে কে?

অনেকের কাজই আমার ভালো লাগে। যাঁদের কাজ দেখে আমি অভিনয় শিখেছি, অনুপ্রাণিত হয়েছি, এমন ছিলেন বলিউডের তিনজন—কাজল, দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভাট। তাঁদের অভিনয় দিয়ে আমি অনুপ্রাণিত। দেশের অপি (করিম) আপাসহ অনেকের অভিনয় আমার পছন্দের। তবে বন্ধুরা যখন আমার প্রশংসা করে, তখনো অনুপ্রাণিত হই।

প্রথম আলো :

হঠাৎ যদি আলাউদ্দিনের চেরাগ হাতে পান, কোন তিনটি ইচ্ছা পূরণ করবেন?

প্রথমত, দেশের রাস্তাঘাটে রাত কাটানো মানুষদের থাকার ব্যবস্থা করে দেব। দ্বিতীয়ত, আমি যেন অনেক ভালো অভিনয় করতে পারি, সেটা চাইব। তৃতীয়ত, আমি যেন সারা জীবন ভালোভাবে জীবন চালাতে পারি, সেটা চাইব।

প্রথম আলো :

ক্যারিয়ার নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনা কী?

ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। ভালো অভিনয় করতে হবে। আর সব সময়ই এটাই আমার কাছে মনে হয়, আমাকে প্রমাণ করতে হবে। শুনতে চাই, সবাই বলছে, আরও ভালো কাজে দেখতে চাই।

বান্টির বিয়ে নাটকের একটি দৃশ্যে সহশিল্পীদের সঙ্গে মারিয়া শান্ত। ছবি: ফেসবুক