দেশ স্বাধীনের পর যত ঘটনা ঘটেছে, সবকিছু চলচ্চিত্রে উঠে আসুক

সেন্সর বোর্ডের আপত্তিতে কয়েক মাস আটকে আছে রায়হান রাফীর ওয়েব ফিল্ম অমীমাংসিত। এতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানজিকা আমিন। গতকাল এই অভিনেত্রী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘অমীমাংসিত আসছে...আসতেই হবে।’ বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হলে কথা হলো আরও নানা প্রসঙ্গে।

প্রথম আলো:

কোথায় আছেন, কী করছেন?

তানজিকা আমিন : উত্তরায় নাটকের শুটিংয়ে আছি। দীর্ঘদিন পর শুটিং শুরু করেছি। ‘সিটি লাইফ’ নামের এই ধারাবাহিকের পরিচালক শাহরিয়ার তাশদিক। আমার সহশিল্পী নাঈম। নাটকটি মাছরাঙা টেলিভিশনে রোববার থেকে প্রচার শুরু হয়েছে। দুটি পরিবারের গল্প। একটা গ্রাম থেকে এসেছে আর আমরা বাড়িওয়ালা। এদের মধ্যকার নানা ঘটনায় এগিয়ে যায় গল্প।

প্রথম আলো:

নতুন সরকার এসেছে, ‘অমীমাংসিত’ মুক্তি নিয়ে নতুন খবর আছে?

তানজিকা আমিন : মুক্তির কথা চলছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কনটেন্ট যেহেতু সেন্সরের কথা কিন্তু ছিল না। যেহেতু আগের সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চেয়েছিলেন, তাই সেন্সরে জমা দেওয়া হয়। এর পর থেকে সেন্সরেই আটকে আছে। আমরা চাইলেও মুক্তি দিতে পারব না। এখন আবার দেখা হবে, মুক্তির ব্যাপারে আমরা ইতিবাচক।

তানজিকা আমিন
ছবি : শিল্পীর ফেসবুক

প্রথম আলো :

এটা কি প্রেক্ষাগৃহে দেবে?

তানজিকা আমিন : মনে হয় না। আইস্ক্রিনে দেখানো হবে।

প্রথম আলো :

‘অমীমাংসিত’ মুক্তি পাচ্ছে, খবরটা তো স্বস্তির?

তানজিকা আমিন : খুবই স্বস্তিদায়ক খবর। আরও কয়েকটা ছবি আটকে ছিল, সেগুলোও মুক্তি পাবে একে একে। আটকে থাকার এই প্রথা যেন ভাঙে। কোনো ছবি যেন আর আটকে রাখা না হয়। একজন শিল্পীর সামনে যেন কোনো বাধার দেয়াল না থাকে। ‘অমীমাংসিত’ সিনেমায় আমি নিহত সাংবাদিক রুনির চরিত্র করছি, এটা শুনেই পরিবারের সদস্যরা বলেছিল, ‘জীবনেও এটা মুক্তি দিতে দেবে না।’

‘অমীমাংসিত’তে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ ও তানজিকা আমিন
ছবি : ফেসবুক থেকে

প্রথম আলো :

একটা কনটেন্ট আটকে থাকা শিল্পীর জন্য কতটা হতাশার?

তানজিকা আমিন : হতাশা শুধু শিল্পীর নয়, পুরো টিমের। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অনেক টাকা লগ্নি করে, এটাও হতাশার। একটা কনটেন্ট দিয়ে সমাজ বা রাষ্ট্রকে বার্তা দেওয়া হয়। দেশে যে এত বর্বরতা ঘটেছে, এসব নির্মাতাদের তুলে আনা উচিত। আমি নির্মাতাদের বলব, দেশ স্বাধীনের পর যত ঘটনা ঘটেছে, সবকিছু চলচ্চিত্রের গল্পে উঠে আসুক। মানুষের এসব দেখা উচিত। এত দিন হাত–পা বাঁধা ছিল। এমনটা সব সরকারের আমলে কমবেশি হয়েছে, শুধু এর আগের সরকারের সময় নয়।

তানজিকা আমিন
ছবি : প্রথম আলো

প্রথম আলো :

ওয়েবে আপনাকে দেখা গেছে স্বল্পদৈর্ঘ্যের চরিত্র করেও নজর কাড়তে। এর রহস্য কী?

তানজিকা আমিন : কোনো রহস্য নেই। গল্প যখন বাছাই করেছি, ব্যাপ্তিকাল দেখিনি, গুরুত্বটা দেখেছি। ‘মহানগর’ সিরিজের বোনটাকে যারাই দেখেছে, কতক্ষণ আছি তা দেখেনি, যতক্ষণ ছিলাম মুগ্ধ হয়ে দেখেছে। প্রশংসা করেছে। ‘কালপুরুষ’–এও তা–ই।

প্রথম আলো:

অনেক দর্শকের অভিযোগ, আপনি এমন অনেক টিভি নাটক করেন, যেগুলো না করলেও পারতেন। আপনার বক্তব্য কী?

তানজিকা আমিন : তাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত। তবে এটাও বলতে চাই, কাজগুলো আমাকে করতেই হবে। কারণ, নাটক আমার রুটিরুজির জায়গা। ওটিটির সব কাজও তো সব সময় করতে পারি না।

তানজিকা আমিন
ছবি : সংগৃহীত

প্রথম আলো :

সামনে নতুন কী আসছে?

তানজিকা আমিন : ওটিটিতে নতুন কাজ নিয়ে কথা হচ্ছে। চূড়ান্ত কিছু করিনি। এর বাইরে বেঁচে থাকার জন্য নাটকের কাজ করছি।

প্রথম আলো :

সাংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা কী?

তানজিকা আমিন : একটাই প্রত্যাশা, আগের সরকারের কাছ থেকে তারা যেন শিক্ষা নেয়। এটা সব দলেরই নেওয়া উচিত। ছাত্র-জনতাকে যেন কোনোভাবে কেউ দুর্বল না ভাবে, বোকা না ভাবে। জনগণই চাইলে সবকিছু করতে পারে, এটা বারবার প্রমাণিত।