কোয়ারেন্টিন শর্টফিল্ম ফেস্ট ২০২০
সিনেমা বানিয়ে লাখ টাকা পুরস্কার
করোনাভাইরাসের উপদ্রব শুরু হওয়ার পর লকডাউনে আয়োজন করা হয় ‘কোয়ারেন্টিন শর্টফিল্ম ফেস্ট ২০২০’। ৩০ বছরের কম বয়সী বাংলাদেশের নাগরিকেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র জমা দিয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের আজ দেওয়া হল পুরস্কার।
ঘরে বসে সিনেমা বানিয়ে এক লাখ টাকা জিতলেন অভি রহমান। ‘পিপীলিকা’ নামে পাঁচ মিনিটের এই সিনেমা জিতেছে ‘কোয়ারেন্টিন শর্টফিল্ম ফেস্ট ২০২০’-এর প্রথম পুরস্কার। প্রথম আলো ডটকম প্রেজেন্টস ‘কোয়ারেন্টিন শর্টফিল্ম ফেস্ট ২০২০’ আয়োজন করেছিল চা সিঙ্গারা নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সহযোগিতায় গ্রে ও অ্যাপলবক্স। আজ শনিবার প্রথম আলো ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পাঁচ বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার
দ্বিতীয় পুরস্কার ৬০ হাজার টাকা জিতেছেন আফ্রিদা মেহজাবিন। রাদিয়া রুহুল, মো. রাইদ আরমান ও ইমরান বিন আবদুল খালিদ যথাক্রমে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম পুরস্কার জিতেছেন। তাঁরা প্রত্যেকে পেয়েছেন ৩০ হাজার টাকা। এই পাঁচ তরুণ নির্মাতাসহ সেরা ১০ নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রগুলো মুক্তি পেয়েছে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে। সারা দেশ থেকে জমা হওয়া ৪৫০টি সিনেমা থেকে সেরা সিনেমাগুলো নির্বাচন করেছেন কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, অভিনয়শিল্পী জয়া আহসান, চলচ্চিত্র গবেষক জাকির হোসেন রাজু, বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ গাউসুল আলম শাওন এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন।
আজ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ ও সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক। বিনোদন অঙ্গনের প্রতিনিধিত্ব করেন অভিনেত্রী জয়া আহসান, বিজ্ঞাপন নির্মাতা পিপলু আর খান, পুরস্কারজয়ী পাঁচ তরুণ নির্মাতাসহ আরও অনেকে। জয়া আহসান জানান, এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি বেশ কিছু ভালো সিনেমা দেখেছেন। এই তরুণদের বানানো ছবিতে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘লকডাউন শুরুর দিনগুলোতে আমিও ভাবছিলাম, কীভাবে নিজের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকব। শর্টফিল্ম আমার খুব ভালো লাগে। এখানে ছোট জায়গা থেকে অনেক বড় কথা বলা যায়। নির্মাতার অনেক স্বাধীনতা থাকে। আমি এই বিজয়ী নির্মাতাদের ভেতর ভবিষ্যতের গুণী নির্মাতাদের দেখতে পাচ্ছি। শুধু ধৈর্য আর কাজের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে আপনারা কাজ করে যান। ভবিষ্যতে হয়তো আপনাদের ছবিতেও কাজ করব।’
পিপলু আর খান বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্মাণ শেখার এ রকম ছোট ছোট স্কুলিং খুবই জরুরি।’ তিনি বিজয়ী পাঁচ নির্মাতার ছোট ছোট নির্মাণ নিয়ে একটি অমনিবাস (অ্যান্থলজি ফিল্ম) সিনেমা প্রযোজনা করতে চান। কবি ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘সময়ের বিবর্তন ও প্রযুক্তির উন্নয়নে সিনেমা বানানোটাও কবিতা লেখার কাছাকাছি চলে এসেছে। স্বল্প সময়ে ঘরে বসে সিনেমা বানিয়ে এই তরুণেরা সেটাই দেখিয়েছে।’ তিনি জানান, এই পাঁচটি নতুন স্বল্পদৈর্ঘ্যের সমন্বয়ে নির্মিত অমনিবাস ছবিটির আয়োজনেও পাশে থাকবে প্রথম আলো। আনিসুল হক বলেন, ‘এই আয়োজনের মাধ্যমে হয়তো সরাসরি লাভবান হয়েছে পাঁচজন, তবে এই আয়োজন নির্মাতা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর অসংখ্য তরুণকে অনুপ্রাণিত করবে।’
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পুরস্কারপ্রাপ্তদের মো. রাইদ আরমান বলেন, ‘শিল্পের প্রাপ্তি যদি কেবল মনের খোরাক হয়, তাহলে সেই শিল্প নিয়ে এগোনো ও টিকে থাকা যাবে না। তাই আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করার জন্য এই আয়োজনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।’
করোনাভাইরাসের উপদ্রব শুরু হওয়ার পর লকডাউনে আয়োজন করা হয় ‘কোয়ারেন্টিন শর্টফিল্ম ফেস্ট ২০২০’। ৩০ বছরের নিচে বাংলাদেশের নাগরিকেরা ১ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র জমা দিয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন।