পুরস্কার হাজির বিজয়ীর দরজায়
সাদের ডেরায়
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের ২০১৯ সালের আয়োজনটি করোনার কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই আয়োজক কর্তৃপক্ষ নিয়েছে এক অভিনব উদ্যোগ। প্রতিবার অনুষ্ঠানস্থল থেকে বিজয়ীরা পুরস্কার বাসায় নিয়ে যান। এবার পুরস্কারগুলো নিয়ে তারকাদেরই বাসায় হাজির আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
সাদের ডেরায়
এবারের চলচ্চিত্রে সমালোচক পুরস্কারের গোটাটাই গেছে ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’র ঘরে। তাই ছবির পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের অফিসে হানা দিল মেরিল-প্রথম আলো আয়োজক দল। গুজব আছে, সাদ নাকি সূর্যের আলো দেখেন না! সন্দেহ ছিল সাদকে কি পাওয়া যাবে? সব গুজবের মুখে চুনকালি দিয়ে সাদ এগিয়ে এলেন স্বাগত জানাতে, সঙ্গে প্রযোজক এহসানুল হক। পুরস্কার হাতে সাদ মুখোমুখি হলেন আনিসুল হকের কিছু প্রশ্নের। ভালো ছবি বানানোর আকাঙ্ক্ষা কীভাবে পেলেন? ‘আমি আসলে জানি না। আমার লাইফে অনেক কিছু করার ট্রাই করেছিলাম। সামহাউ কেন জানি ওয়ার্ক করেনি। ফিল্ম নিয়ে একটু আগ্রহ ছিলই আগে থেকে। তবে ছোটবেলা থেকেই ফিল্মমেকার হতে চেয়েছিলাম, ঠিক ও রকম নয়। ট্রাই করে দেখলাম ওয়ার্ক করে কি না।’ সাদ বললেন। সাদের হাতে দেওয়া হলো সেরা পরিচালকের পুরস্কার আর এহসানুল হকের হাতে সেরা ছবির।
মুস্তাফা মনোয়ার নয়, মোস্তফা মনওয়ার
সাদের ডেরা থেকে বেরিয়ে মেরিল-প্রথম আলো আয়োজক দল ঢুকে পড়ল লাইভ ফ্রম ঢাকা ছবির অভিনেতা মোস্তফা মনওয়ারের বাসায়। মোস্তফা মনওয়ার নিজেই খুলে দিলেন দরজা। তারপর চলল ফটোসেশন। বাসায় টানানো এই ছবিরই একটি বাঁধাই করা পোস্টার। প্রতিক্রিয়ায় বললেন, ‘অসম্ভব সম্মানিত বোধ করছি। এ রকম বাসায় এসে পুরস্কার দিয়ে যাওয়া, গুণী সব মানুষের বাসায় আসা সত্যিই আনন্দের।’ কথায় কথায় উঠে আসে তাঁদের নামবিভ্রাটের কথা। গুণী শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার আগে থেকেই পরিচিত। মোস্তফা মনওয়ারের নামও কাছাকাছি হওয়ায় গুলিয়ে ফেলেন সবাই। মোস্তফা মনওয়ার জানান, বিভিন্ন জায়গায় এই ছবির কাস্ট হিসেবে মুস্তাফা মনোয়ারের নাম আর তাঁর ছবিই দেওয়া আছে এখনো!
অভিভূত তাসনুভা তামান্না
কাছাকাছিই পাওয়া গেল এই ছবির অভিনেত্রী তাসুনভা তামান্নাকে। এত গুণী মানুষের পদচারণে অভিভূত এই অভিনয়শিল্পী। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় সেরা অভিনেত্রীর সমালোচক পুরস্কার। প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অভিভূত। সত্যিই আজকের দিনটা সুন্দর হয়ে গেল। বছরের শেষ দিনটা অন্য রকমভাবে কাটল। ধন্যবাদ মেরিল-প্রথম আলোকে।’
তৃতীয়বার সেরা গায়ক ইমরান
ততক্ষণে দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে। আয়োজক দল চলে এলেন কণ্ঠশিল্পী ইমরান মাহমুদুলের বাসায়। বিশ্বসুন্দরী ছবির ‘তুই কি আমার হবি রে’ গানের জন্য সেরা গায়কের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ইমরানের দেখা পাওয়া যাবে, কিন্তু গান হবে না, তা কি হয়? ‘তুই কি আমার হবি রে’ গানটি গেয়ে শোনালেন ইমরান মাহমুদুল। ইমরান বলেন, ‘অনেক ধন্যবাদ মেরিল–প্রথম আলোকে। তৃতীয়বারের মতো মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার পেলাম। মনোনয়ন পাওয়াটা আমার কাছে অনেক বড় কিছু মনে হয়। সেখানে পরপর পুরস্কার পাওয়া সে আনন্দ আরও বাড়িয়ে দেয়।’
স্পর্শিয়া নাচলেন
আবার বসন্ত ছবির জন্য সেরা নবীন অভিনয়শিল্পীর পুরস্কার পেলেন অর্চিতা স্পর্শিয়া। তখন দুপুর গড়িয়ে ক্লান্ত বিকেল। আয়োজক দলকে দেখে বিস্মিত তিনি। এত এত গুণী মানুষ। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়া অনেক বেশি আনন্দের। কাজ করতে অনেক বেশি ইন্সপায়ারড হই। কিন্তু আজকের আয়োজনটি একেবারে ব্যতিক্রম, অন্য রকম। এটা আমার জন্য আরও বেশি সম্মানের।’
মেহ্জাবীন গেয়েছেন, নিশো গেয়েছেন, স্পর্শিয়া কেন নয়? তাঁকেও গান গাইতে অনুরোধ করা হলো। কিন্তু স্পর্শিয়া জানালেন, গান নয়, নাচ করবেন তিনি। পুরস্কারের সঙ্গে ছিল একটি কারভান। গান ছেড়ে দেওয়া হলো। তাঁর সঙ্গে নাচলেন স্পর্শিয়া।
যাত্রা শেষ
সবার কাছে পুরস্কার আর শুভেচ্ছা স্মারক পৌঁছে দিয়ে আয়োজক দল যখন কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো অফিসে পৌঁছায়, তখন সন্ধ্যা নেমে এসেছে। কিছুক্ষণ পরে ছুটে আসবে ট্রাক। কারওয়ান বাজারে নেমে আসবে ব্যস্ত আরেক রাত।