সংসার সুখের হয় সবার গুণে : মৌসুমী

মৌসুমীছবি : প্রথম আলো

একদিন বাড়ির বউ, এরপর মা হয়েছেন তাঁরা। এরও আগে ছিলেন বিনোদন অঙ্গনের প্রিয় মুখ, প্রিয় স্বর তাঁরা। যেমন সংসার সামলিয়েছেন, তেমন পেশাজীবনেও দেননা এক চুল ছাড়। আবার সন্তান হোমওয়ার্ক করল কি না, দুধটা না খেয়ে জানলা দিয়ে ফেলল কি না—এসবের খোঁজও রাখেন। সংসার আর পেশাজীবন—দুই মাঠেই ছক্কা হাঁকানো সেই নারীদের একজন মৌসুমী, যাঁর নামের সঙ্গেই অদৃশ্যভাবে জুড়ে আছে ‘চিত্রনায়িকা’ বিশেষণটি।

১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে সালমান শাহর সঙ্গে অভিনয় করেন। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তরতর করে এগিয়েছেন সামনে। ব্যক্তিজীবন আর পেশাজীবন; সবখানেই দেখা হয়েছে সফলতার সঙ্গে। সফলতা আর মৌসুমী—একজন আরেকজনকে আলিঙ্গন করে পথ চলেছে।

মৌসুমী।
প্রথম আলো

২৭ বছর আগের কথা। দিলীপ বিশ্বাসের ‘দোলা’ চলচ্চিত্রের সেটে দেখা হলো মৌসুমী আর ওমর সানির। বছর পেরোতে না পেরোতেই ১৯৯৫ সালের ২ আগস্ট তাঁরা বিয়ে করে ফেললেন। প্রেমটা বিয়ের আগে সেভাবে করতে পারেননি। বিয়ের পর সেই প্রেম ২৫ বসন্ত পেরিয়ে পা দিয়েছে ২৬–এ। বড় পর্দায় ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে মৌসুমী স্ত্রী আর মা—দুটিই। এই দুই পরিচয় সিনেমার দুনিয়ায় তাঁর দাপটে আঁচ পড়তে দেয়নি। এক বাড়ির বউ, ওমর সানির স্ত্রী, স্বাধীন আর ফাইজার মা হওয়ার পরেও লাখো পুরুষ তাঁর প্রেমে পড়েছেন। ঘরের শোকেজে সাজিয়েছেন তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, তিনটি মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার আর ছয়টি বাচসাস পুরস্কারে। মৌসুমী বিশ্বাস করেন, ভালোবাসার খুবই জরুরি। তবে সেই সঙ্গে সম্মান এবং বিশ্বাস শব্দ দুটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সংসার সুখের হয় কিসের গুণে? সংসার, সন্তান সামলে পেশাজীবনে সফল হওয়া যায় কীভাবে? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর মৌসুমী বেঁধে দিলেন একটি সুতোয়, ‘একটি সংসারে যত মানুষ থাকে, সংসার সুখের হওয়ার জন্য তাঁদের প্রত্যেকেরই অবদান রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার জন্য যেমন পারিবারিক সমর্থন জরুরি, তেমনি কর্মক্ষেত্রের মানুষদের সহযোগিতাও কাম্য।’

মৌসুমী। ছবি: সংগৃহীত

মৌসুমী আরও যোগ করেন, ‘সংসারে তো অনেক কিছুই হয়। স্বামী তো ভুল করতেই পারে। সেই ভুলের শাস্তি দেওয়া থেকে ভুলটা যাতে আর না হয়, বুঝিয়ে সেটা নিশ্চিত করা জরুরি।’ নিজের সফলতা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন সঙ্গীর সঙ্গেও, ‘স্বামী হিসেবে ছবির কাজের ক্ষেত্রে আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। সানি আমাকে সহযোগিতা না করলে, আমার কাজের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে আমি এত কাজ করতে পারতাম না। এমনকি এত দিন পর্যন্ত অভিনয় চালিয়ে নেওয়াটাও আমার জন্য মুশকিল হয়ে পড়ত।’ অন্যদিকে ওমর সানিকে যখন প্রশ্ন করা হয়, তিনি কেন ভালোবাসেন মৌসুমীকে? একবাক্যে বড় পর্দার এই নায়ক বলেছেন, ‘মৌসুমীকে ভালোবাসতেই হবে।’ এরপরে আর কোনো কথা চলে না। এভাবেই পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা সঙ্গে নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে সংসার আর ক্যারিয়ার—দুই ক্রিজেই ‘নট আউট’ মৌসুমী।