শৈশবের স্বপ্নটা পূরণ হলো ফেরদৌসের
চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের শৈশবের স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে। দুই দশক পর তাঁর স্বপ্ন পূরণ করেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। আজ ১৪ জানুয়ারি ১৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান এই নায়ক। উৎসবে ‘এশিয়ান ফিল্ম প্রতিযোগিতা’ বিভাগের জুরির দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
ফেরদৌস যখন স্কুলে পড়তেন, তখনকার কথা। সেই সময় খবরের কাগজে দেখতেন দেশের বড় তারকা, নির্মাতারা বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে অনেকেই উৎসবের দায়িত্বও পালন করছেন। ববিতা, আমজাদ হোসেনসহ আরও অনেকে ছিলেন সে তালিকায়। তাঁরা বার্লিন, মস্কোসহ দেশ-বিদেশের চলচ্চিত্র উৎসবে যেতেন। এসব দেখে ফেরদৌসও স্বপ্ন দেখতেন, এমন উৎসবে অংশ নেবেন তিনি। ফেরদৌস জানান, তাঁর চলচ্চিত্রে আসার একটি বড় কারণ ছিল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। এখান থেকেই তিনি চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের অভিনয়শিল্পী, নির্মাতাদের মতো আমারও ইচ্ছে ছিল একদিন আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যালে কোনো একটা দায়িত্ব পালন করব, যাব। সেই স্বপ্নটা পূরণ করেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব কর্তৃপক্ষ। এই জন্য তাদের কাছে আমি ঋণী।’ ২২ বছরের মতো তাঁর অভিনয়ের ক্যারিয়ার। এ সময়ের মধ্যে এই সম্মানজনক প্রস্তাব প্রথমবার পেয়েছেন ফেরদৌস।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা ক্লাবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। ১৬ তারিখ থেকে শুরু হবে এটি। এখানে ‘এশিয়ান প্রতিযোগিতা বিভাগে’ জুরির দায়িত্ব পালন করবেন ফেরদৌস।
ফেরদৌস জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ার সময়েই তিনি রেইনবো ফিল্ম সোসাইটির সঙ্গে যুক্ত হন। সে সময় তিনি ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অনেকগুলো আয়োজনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। উৎসব কেন্দ্র করে অনেক আগ্রহ থাকত। সেই জন্য আলাদা সময় রাখতেন এই নায়ক। বিভিন্ন সময় রাত জেগে, টিএসসি, কলাভবন, নিউমার্কেট, শাহবাগসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে উৎসবের পোস্টার লাগাতেন। সেই প্যাশনের জায়গা থেকেই তাঁর চলচ্চিত্রে আসা। অভিনয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া। তিনি বলেন, ‘উৎসব কর্তৃপক্ষ আমাকে জুরির দায়িত্ব দিয়েছে, এটা আমার জন্য অনেক বড় সম্মানের। আমি গর্বিত। সৎ জায়গা থেকে বড় এই দায়িত্ব পালন করব।’
সম্প্রতি তিনি অভিনয় করেছেন ‘হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ ছবিতে। এটি পরিচালনা করেছেন এখলাস আবেদীন। সিনেমাটি ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হবে। ছবিটি সম্পর্কে তিনি জানান, জাতির জনককে ছবিতে ভিন্নভাবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। সম্প্রতি এটি সেন্সরশিপ পেয়েছে। উৎসবে আগামী ২১ তারিখ ছবিটি প্রিমিয়ার শো হবে।
ফেরদৌস বলেন, ‘গত ৯ মাস আমরা ঘরে বসে ছিলাম। এই সময়ে আমরা বিভিন্ন দেশের সিরিজ, গান, সিনেমা দেখে ঘরে কাটিয়েছি। এ জন্য সারা বিশ্বের চলচ্চিত্রকর্মীদের ধন্যবাদ।’
১৬ জানুয়ারি থেকে পর্দা উঠছে ১৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের। এটি আয়োজন করছে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদ। মুজিব শতবর্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করা হয়েছে উৎসবটি। এবারের চলচ্চিত্র উৎসবের স্লোগান, নান্দনিক চলচ্চিত্র, মননশীল দর্শক, আলোকিত সমাজ। ৯ দিনের এই উৎসবে ৭৩টি দেশের ২২৫টি ছবি দেখানো হবে। এবারের উৎসবে ‘লিজেন্ডারি লিডারস হু চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘ট্রিবিউট’ নামে নতুন দুটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। উৎসবটি ২৪ জানুয়ারি শেষ হবে। উৎসব পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন আহমেদ মুজতবা জামাল।