হঠাৎ কিডনির জটিলতাসহ শরীরে নানা সংকট বেড়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন নায়ক ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। স্ত্রী ফারহানা পাঠানের ভাষায়, ফারুক অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শুরু করেন। তারপর চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করান। এখন মোটামুটি ভালো আছেন। আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে ফারুকের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বললেন তাঁর স্ত্রী ফারহানা পাঠান।
ফারুকের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীও একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কারণ, কোভিড-১৯ টেস্টে ফারহানা পাঠানের ফলাফল পজিটিভ এসেছে বলে জানালেন তিনি। তিন দিন ধরে তাঁরা দুজনেই ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফারককে একজন কিডনি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
সিঙ্গাপুরে দেড় মাসের চিকিৎসা শেষে গত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় ফেরেন বরেণ্য অভিনয়শিল্পী ফারুক। দেশে ফেরার ১১ দিনের মাথায় করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর জানতে পারলে ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাঁকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
করোনার সঙ্গে লড়াই করতে করতে কিছুটা সুস্থ বোধ করার পর ২৪ নভেম্বর রাতে কোভিড-১৯ পজিটিভ নিয়েই বাসায় ফেরেন ফারুক। বাসায় ফেরার আট দিনের মাথায় আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরই মধ্যে জানতে পারেন, স্ত্রীও কোভিড-১৯ পজিটিভ। ৩ ডিসেম্বর স্বামী-স্ত্রী দুজনেই একই হাসপাতালে ভর্তি হন।
ফারহানা পাঠান বলেন, ‘সেদিন রাতে ফারুকের অবস্থা দেখে আমরা সবাই ঘাবড়ে যাই। দিশেহারা হয়ে পড়ি। কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। সিঙ্গাপুর ও ঢাকার সব ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। এরপর সবার পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করাই।’
দফায় দফায় জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় ঢাকার দুটি বড় হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন ফারুক। দুটি পরীক্ষাতেই তাঁর কোভিড-১৯ নেগেটিভ আসে। এ ছাড়া টাইফয়েড, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার পরীক্ষাও করানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনো রোগ ধরা পড়েনি। এতে দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে ফারুকের পরিবারের। সে সময় চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছিলেন, এ অভিনেতা টিবিতে (যক্ষ্মা) ভুগছেন। অবশেষে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হন, ফারুক টিবিতে আক্রান্ত।
প্রায় পাঁচ দশক ধরে ঢালিউড মাতিয়েছেন ফারুক। অভিনয় ছাড়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
সংসদ ফারুক এখন কিছুটা সুস্থ আছেন বলে জানালেন তাঁর স্ত্রী ফারহানা পাঠান। তিনি বললেন, ‘চিকিৎসকেরা বেশ আন্তরিকতা নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই কয় দিন খুব কষ্ট পেয়েছে ফারুক। তিন দিনের মাথায় আজ কিছুটা ভালো লাগছে বলে জানিয়েছে। কোভিড-১৯ পজিটিভ হলেও তা মোটেও ভয়ের কিছু না বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।’
অসুস্থ ফারুককে গত ১৩ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সাত বছর ধরে সিঙ্গাপুরের এ হাসপাতালেই তিনি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে আসছেন। এবার সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে নায়ক ফারুক দীর্ঘদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন।