দীঘি বললেন, ভয়ে হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে ...
ছোট্ট সেই দীঘি এখন আর ছোট্টটি নেই। শিশুশিল্পী দীঘি এখন নায়িকা। বড় পর্দায় মুক্তি পেতে যাচ্ছে তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র। দীঘির অভিষেক হচ্ছে একসঙ্গে দুটি ছবি মুক্তির মধ্য দিয়ে। দুটি ছবির একটি শান্ত খানের সঙ্গে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’, অন্যটি আসিফ ইমরোজের সঙ্গে ‘তুমি আছো তুমি নেই’। সবকিছু ঠিক থাকলে ১২ মার্চ ছবি দুটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। দীঘি জানালেন, মুক্তির দিনক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে, ভয়ে তাঁর হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এমন অনুভূতির কথা জানালেন তিনি।
দীঘি আজ শুটিং করছিলেন ‘শেষ চিঠি’ শিরোনামের একটি চলচ্চিত্রের। সুমন ধর পরিচালিত এই ছবিতে দীঘি অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহানের বিপরীতে। শুটিংয়ের ফাঁকে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বললেন দীঘি। বললেন, ‘অনেকেরই এমন ভাগ্য হয় না। আমার হয়েছে। ভীষণ ভালো লাগছে। দুটোই আমার ছবি। অনুভূতিটাই অন্য রকম।’
‘বাবা জানো, আমাদের একটা ময়না পাখি আছে না, সে আজকে আমার নাম ধরে ডেকেছে, আর এ কথাটা না মা কিছুতেই বিশ্বাস করছে না। আমি কি তাহলে ভুল শুনেছি, কেমন লাগে বলো তো।’ একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনের এই সংলাপ দিয়েই সবার প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন শিশুশিল্পী দীঘি। সেটা এক যুগের বেশি সময় আগের কথা। পরে তিনি শিশু চরিত্রে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
নায়িকা হিসেবে অভিনয়জীবনের শুরুতে ‘টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই’ নামের ছবিতে নায়িকা হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান দীঘি। সেই ছবিটি গতকাল সোমবার সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। পরিচালক শামীম আহমেদ জানান, ১২ মার্চ ছবিটি মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। এই ঘোষণা আসা পর্যন্ত দীঘির একটি সিনেমাই মুক্তির কথা ছিল। সোমবার বদলে গেল সব হিসাবে–নিকাশ। নায়িকা দীঘি খানিকটা টেনশনে পড়েছেন। নিজের সঙ্গে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনুভব করছেন। তবে দুটি ছবিটি দর্শকদের দেখার অনুরোধ করেছেন দীঘি।
দীঘি বললেন, ‘সবাইকে আমি বলব দুটো সিনেমাই দেখতে। কারণ, দুই সিনেমার গল্পের ধরন দুই রকম। মানুষ দুই ধরনের গল্পের মজাটা এক দিনেই পাবে। এটা আমার জন্য টেনশনের পাশাপাশি প্লাস পয়েন্টও। নিজের সঙ্গে নিজের কমপিটিশন মনে হচ্ছে। মানুষ বিচার করার সুযোগ পাবে, কোন চরিত্রটা কেমন করেছি। সত্যি বলতে, ছোটখাটো একটা কমপিটিশনের মধ্যে পড়লাম।’
নায়িকা হওয়ার আগেই দীঘি শিশুশিল্পী হিসেবে দেখা দিয়েছেন ৩০টির বেশি সিনেমায়। ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘এক টাকার বৌ’ আর ‘চাচ্চু আমার চাচ্চু’—এই তিন সিনেমা তাঁকে এনে দিয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
কলেজের গণ্ডি পেরোনো দীঘির বাবা শাহরুখ ফারদিন সুব্রত চলচ্চিত্র অভিনেতা। মা দোয়েল ছিলেন বড় পর্দার নায়িকা। তাই বড় পর্দায় নায়িকা হিসেবে তাঁর অভিষেক হওয়াটা ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার। ১২ মার্চ সেই দিন আসছে। একসময়ের ছোট্ট দীঘি দুটি ছবি নিয়ে দর্শকের সামনে হাজির হচ্ছেন। আনন্দের পাশাপাশি কিছুটা ভয়ও কাজ করছে। নিজের নতুন জন্ম হতে যাচ্ছে বলেও জানালেন দীঘি। বললেন, ‘এ আমার নতুন জন্ম। ছবি মুক্তির দিন যতই কাছে আসছে, ভয়ে আমার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। খুব ভয় লাগছে। আপাতত একটাই চাওয়া, মানুষ যেন ভালোভাবে আমার অভিনীত ছবি দুটি গ্রহণ করে।’
নায়িকা দীঘির অভিষেক সময়ে পরিবার তাঁকে সবচেয়ে বেশি মানসিক সাপোর্ট দিচ্ছে। তবে এই সময়য়ে মাকে খুব মিস করছেন।
বলেন, ‘পরিবার, বন্ধুরা, বিশেষ করে বাবা সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট দিচ্ছে। এই সময়টায় আমার থেকে মা সবচেয়ে বেশি এক্সাইটেড থাকতেন। মেয়ের সিনেমা দেখবেন, এটা নিয়ে কত–কী যে করতেন। নায়িকা হিসেবে প্রথম সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, মা পাশে থাকলে শক্তি ও সাহসটাই থাকত অন্য রকম। একসঙ্গে আমার দুটো ছবি মুক্তি পাচ্ছে, এটা আমি মাকে বলতে পারলাম না, দেখাতে পারলাম, আফসোসটা রয়ে গেল।’