‘এ যাত্রায় বেঁচে যেতে পারি’, আইসিইউ থেকে কাজী হায়াৎ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন ঢালিউডের বরেণ্য পরিচালক কাজী হায়াৎ। তাঁর শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছেন তাঁর ছেলে অভিনেতা কাজী মারুফ।
গতকাল সোমবার রাতে পোস্ট করা ভিডিওটিতে কাজী হায়াৎ বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি আইসিইউতে। ভালো আছি। আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই। হয়তো এ যাত্রায় বেঁচে যেতে পারি। সৃষ্টিকর্তার কাছে আপনাদের দোয়া অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হবে। মানুষের দোয়া, সারা বাংলাদেশের ভক্তদের দোয়া আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে।’
কাজী হায়াতের মেয়ে কাজী আফরোজা মিম আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে জানান, তাঁর বাবার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তিনি নিজেই খেতে পারছেন। আফরোজা বলেন, ‘আব্বা নিজেই খেতে পারছেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। এক দিন আগেও তাঁর যে অবস্থা ছিল, সেখান থেকে উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে স্বস্তি পাচ্ছি।’ তিনি জানালেন, গত রোববার তাঁর বাবাকে হাসপাতালের কেবিন থেকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তাঁদের মা রোমিসা হায়াৎ সুস্থ হলেও এখনো হাসপাতালেই রয়েছেন। মিম বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে আব্বাকে ঘরের বাইরে বের হতে দিইনি। এমনিতেই তাঁর অনেক ধরনের শারীরিক জটিলতা, তাই তাঁকে বাইরে বের হতে দিতে ভয় লাগত। আমার সেই আব্বাকে করোনা কীভাবে ধরল, ভাবতেই পারছি না। হাসপাতালে আব্বাকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে কিছুই ভালো লাগছে না। সবাই আমার আব্বার জন্য দোয়া করবেন।’
চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াৎ ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, রক্তচাপ, কিডনি জটিলতাসহ নানা সমস্যায় আক্রান্ত বলে জানালেন তাঁর মেয়ে আফরোজা। করোনাভাইরাস তাঁর ফুসফুসেও আক্রমণ করেছে। তাঁকে ১৫ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁর স্ত্রীকেও। ৮ মার্চ দুজনই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত জানার পর থেকে তাঁরা বাসাতেই ছিলেন। ২ মার্চ টিকা গ্রহণ করেছেন কাজী হায়াৎ। এদিকে অসুস্থ বাবার পাশে থাকতে চান বলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সম্প্রতি দেশে এসেছেন কাজী হায়াতের ছেলে অভিনেতা কাজী মারুফ।
বাসা ও বাইরে যথেষ্ট সতর্ক ছিলেন পরিচালক কাজী হায়াৎ। এমনকি বিরত ছিলেন কাজ থেকেও। কোনো কাজে বের হলেও থাকত বাড়তি সতর্কতা। কিন্তু শেষ রক্ষা পেলেন না এই নির্মাতা, প্রযোজক ও অভিনেতা। মার্চের প্রথম সপ্তাহে জ্বর নিয়ে সস্ত্রীক করোনার নমুনা পরীক্ষা করিয়েছেন তিনি। ফল হাতে পেলে জানতে পারেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
সম্প্রতি কাজী হায়াৎ অভিনয় করেছেন হিরো আলম প্রযোজিত ‘টোকাই’ ছবিতে। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত শুটিংয়ে অংশ নেন তিনি। কাজী হায়াতের পরিচালনায় এখন পর্যন্ত সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ছবি ‘বীর’। ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শাকিব খান ও শবনম বুবলী। এটি ছিল কাজী হায়াৎ পরিচালিত ৫০তম ছবি।