সেদিন সালমান শাহকে বর্জন করা হয়েছিল কেন

সালমান শাহছবি:সংগৃহীত

‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেকের পর রাতারাতি তারকাখ্যাতি পান সালমান শাহ। এরপর একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। আজ সালমান শাহর জন্মদিন।

পর্দায় আকাশচুম্বী সাফল্য পেলেও পর্দার বাইরে সময়টা পক্ষে ছিল না। ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে সালমান শাহকে দুই সপ্তাহের জন্য ‘নিষিদ্ধ’ করেছিল প্রযোজক সমিতি।
নিষেধাজ্ঞার মুখে কোনো সিনেমায় কাজ করতে পারছিলেন না। এর মধ্যে চিত্রালী, সানন্দা, সম্ভারসহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র সাময়িকীতে শাবনূরের সঙ্গে সালমানের বিয়ের গুজব ছড়িয়েছে।

চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার শুরুর আগেই সামিরাকে বিয়ে করেন সালমান। ক্যারিয়ারজুড়ে এক ডজনের বেশি চলচ্চিত্রে শাবনূরের বিপরীতে অভিনয় করেছেন সালমান শাহ। তত দিনে সালমান–শাবনূর জুটির ‘সুজন সখী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘তোমাকে চাই’ আলোচিত হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা ও বিয়ের গুজবের মধ্যে বাধ্য হয়ে ১৯৯৬ সালের ১৯ জুলাই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন সালমান শাহ। ঢাকার এক রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সেই সংবাদ সম্মেলনে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছিলেন এই তারকা অভিনেতা।
পরদিন ২০ জুলাই ভোরের কাগজ পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় এক কলামে সংবাদটি প্রকাশিত হয়। ‘প্রযোজক সমিতির নিষেধাজ্ঞা ও শাবনূরকে বিয়ে প্রসঙ্গে যা বললেন নায়ক সালমান শাহ’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, “‘আগে জানলে টাকা দিয়ে পুরস্কার কিনতাম”—বিতর্কিত এই মন্তব্যের জন্য প্রযোজক সমিতি দুই সপ্তাহের জন্য সালমান শাহকে এফডিসিতে নিষিদ্ধ করেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না করেই প্রযোজক সমিতি থেকে প্রতিটি প্রোডাকশন অফিসকে কোনো ছবিতে সালমান শাহকে কাস্ট না করতে নির্দেশ দেয়।’

১৯৯৬ সালের ২০ জুলাই ভোরের কাগজ পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় এক কলামে সংবাদটি প্রকাশিত হয়
সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে সালমান শাহ বলেছিলেন, ‘কেন নতুন ছবিতে কাস্ট হতে পারব না, তার কারণ দর্শানো হয়নি।’ তিনি বলেছিলেন, ‘আনন্দ মেলা সিনেমা লিমিটেডের সঙ্গে “কেয়ামত থেকে কেয়ামত”–এ অভিনয় করার সময় আরও তিনটি ছবিতে সই করানো হয়। “কেয়ামত থেকে কেয়ামত”–এর পর বাকি তিনটি ছবিতে আমি কাজ করব।’

তবে শিডিউল নিয়ে আনন্দ মেলা সিনেমা লিমিটেডের সঙ্গে সালমান শাহর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আনন্দ মেলা সিনেমার অভিযোগে প্রযোজক সমিতিসহ আরও কয়েকটি সমিতি সালমানকে বর্জন করেছিল।

এর মধ্যে ‘অসদাচরণের’ অভিযোগে শিল্পী সমিতিও তাঁকে বর্জন করেছিল। পরে শিল্পী সমিতির কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। আনন্দ মেলার সঙ্গে মিটমাটের চেষ্টা করা হয়েছিল।
সেই সংবাদ সম্মেলনে শাবনূরের সঙ্গে বিয়ের গুজব নিয়ে সালমান শাহ বলেছিলেন, ‘কয়েকটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় বিয়ের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। শাবনূরকে আমি ছোট বোনের মতো জানি, স্নেহ করি। এ ছাড়া আমি বিবাহিত।’

সম্মেলনে উপস্থিত সালমান শাহর পিতা এ কিউ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আমি আমার সন্তানকে জানি। শাবনূরকেও আমি চিনি। সালমান এ কাজ করতেই পারে না। নিশ্চয়ই কেউ ওর বিরুদ্ধে চক্রান্তে নেমেছে।’

একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৪ বছর বয়সে ঢাকাই চলচ্চিত্র অঙ্গনে বড় শূন্যতা তৈরি করে বিদায় নেন সালমান শাহ।

আরও পড়ুন