সাত বছর আগে শুটিং হওয়া ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবি ঘিরে ঢালিউডে এখন বেশ আলোচনা। এই ছবির নায়ক শাকিব খানকে ঘিরে এই আলোচনা। হঠাৎ গত সপ্তাহে ছবির নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে শিডিউল নিয়ে গড়িমসি, ছবির শুটিং না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ দাবি এবং সহপ্রযোজক এক নারীকে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ এনে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংগঠনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন রহমত উল্লাহ। শাকিব খানের সঙ্গে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবিটি নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভার্টেক্স মিডিয়ার চুক্তি হয়। আর ভার্টেক্স মিডিয়ার সঙ্গে সহপ্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যুক্ত হয় সিনেফ্যাক্ট, যার মালিকানায় আছেন মাহিন আবেদীন, রহমত উল্লাহ ও অস্ট্রেলীয় একজন নারী।
শাকিব খানের বিরুদ্ধে রহমত উল্লাহর অভিযোগের কয়েক দিনের মাথায় অস্ট্রেলিয়া ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন এই তারকার আইনজীবী উপল আমিন। ৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, রহমত উল্লাহ যে অভিযোগ করেছেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। রহমত উল্লাহর উচিত, এই অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা।
উপল আমিন জানিয়েছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির সেন্ট জর্জ গোয়েন্দা কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন। গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা মাইকেল বাগ তাঁকে শাকিব খানের ব্যাপারে চারটি বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
এর মধ্যে আছে—১. শাকিব খানের নামে কখনো কোনো মামলা হয়নি অস্ট্রেলিয়ায়। ২. শাকিব খানকে কখনো কোনো ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়াতে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ৩. যেহেতু তিনি গ্রেপ্তার হননি, সেহেতু উনার পালানোর কথা আসেই না। এ ব্যাপারে পুলিশের তদন্ত শেষ এবং এই বিষয়টি পুরোপুরি নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়েছে। ৪. শাকিব খানের নামে কখনো কোনো অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ছিল না।
উপল আমিন তাঁর ভিডিওতে বলেন, ‘কখনো তাঁর (শাকিব খান) নামে কোনো অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ছিল না, মামলা ছিল না, তাঁকে কখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাহলে তো অস্ট্রেলিয়া থেকে তাঁর তো পালানোর কোনো প্রশ্নই আসে না।’
ভিডিওর শুরুতে উপল আমিন বলেছেন, ‘অভিযোগ তো মানুষ করতেই পারে। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে, অভিযোগ করার পর কী হয়েছিল? নারী সহপ্রযোজক এবং রহমত উল্লাহ শাকিব খানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছিল সিডনি অস্ট্রেলিয়াতে, এই বিষয় তো শাকিব খান অস্বীকার করেননি। এই যে রহমত উল্লাহ মিডিয়ার কাছে এসে বলছেন, শাকিব খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ হওয়ার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁর নামে মামলা করা হয়েছিল। তিনি নাকি দুবার অস্ট্রেলিয়াতে মামলা থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়াতে যে কেউ পুলিশ স্টেশনে গিয়ে যেকোনো ব্যাপারে একটা রিপোর্ট করলে, তাঁকে একটা ইভেন্ট নম্বর দেওয়া হয়। বাংলাদেশে জিডি বলা হয়। আর আমাদের অস্ট্রেলিয়াতে ইভেন্ট নম্বর বলা হয়। দুটি জিনিস কিন্তু একই। এখন একটা ইভেন্ট নম্বর পাওয়া, মানে এই নয় যে কারও নামে কোনো মামলা দেওয়া হয়েছে।
রহমত উল্লাহ যে এই কথাগুলো বলেছেন, এটা আমার কাছে যথেষ্ট সন্দেহজনক মনে হয়েছিল। আমি শাকিব খানের অস্ট্রেলিয়ান আইনজীবী হিসেবে এই ব্যাপারগুলো চেক করেছি পুলিশের সঙ্গে। আমি সেন্ট জর্জ ডিটেকটিভ অফিসে ওদের হেড অব ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছি। ডিটেকটিভ সার্জেন্ট মাইকেল বাগের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি আমাকে কয়েকটি বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।’
ভিডিওর একপর্যায়ে উপল আমিন এ–ও বলেছেন, ‘আমি শাকিব খানের অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত আইনজীবী আপনাদের বলতে চাইছি যে বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে যা প্রোপাগান্ডা চলছে, আমি মনে করি, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক। আমার ক্লায়েন্ট শাকিব খানের জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্য এই চক্রান্ত চলছে। শাকিব খানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রহমত উল্লাহ এনেছেন, এটা একটা অর্থনৈতিক চক্রান্ত। এটা একটা ফাইন্যান্সিয়াল কন্সপিরেসি। আমার ক্লায়েন্টের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য রহমত উল্লাহ এই কাজটা করেছেন।’
কথায় কথায় উপল আমিন বললেন, ‘আমার ক্লায়েন্ট শাকিব খান ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন এবং ২০১৮ সালেও এসেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় দুবারই—কোনোবারই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি কখনো পালিয়ে যাননি। আমি অস্ট্রেলিয়া থেকে আপনাদের যা বলছি, এটা সম্পূর্ণ অস্ট্রেলিয়ার আইনের ভিত্তিতে কথা বললাম। আমার ক্লায়েন্ট শাকিব খান নির্দোষ—এ ব্যাপারে আমি একটা কনফার্মেশন লেটার পাব অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ অথরটির কাছ থেকে এবং সেটাও আপনাদের দেখাব। রহমত উল্লাহ যে অভিযোগ করেছেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। রহমত উল্লাহর উচিত, এই অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা।’